৫৭ বছর পর বসতভিটা ফিরে পেলেন প্রামাণিক (ভিডিও)
শাকেরা আরজু
প্রকাশিত : ১১:৩৪ এএম, ২৫ ডিসেম্বর ২০২১ শনিবার | আপডেট: ১১:৩৫ এএম, ২৫ ডিসেম্বর ২০২১ শনিবার
স্ত্রীর সঙ্গে লক্ষণ প্রামাণিক
মামলা জিতে ৫৭ বছর পর বসতভিটা ফিরে পেলেন নবাবগঞ্জের লক্ষণ প্রামাণিক। তবে রায় দেখে যেতে পারেননি তিনি। রায় হওয়ার ৩ মাস আগেই মারা যান লক্ষণ। আইনজীবীরা বলছেন, জমি-জমা সংক্রান্ত বাটোয়ারা মামলা নিষ্পত্তির অন্যতম অন্তরায় সমন বা নোটিশ। এ অবস্থায় আইন সংশোধন করে মোবাইল ফোনের এসএমএসে সমন পাঠানোর পরামর্শ তাদের।
প্রায় দিনই ভোরে ঘুম থেকে উঠে বাবা লক্ষণ প্রামাণিককে পেতো না সন্তানেরা। ভোরের আলো ফুটবার আগেই তাদের বাবা ঢাকায় যেতেন মামলার কাজে। ঘরে ফিরেও মায়ের সাথে মামলা আর অর্থ নিয়ে চলতো ঝগড়া। বলছিলেন- লক্ষণ প্রামানিকের ছেলে চন্দন প্রামানিক।
লক্ষণ প্রামাণিকের ছেলে চন্দন প্রামাণিক বলেন, এই মামলার পেছনে ঘুড়ে আমাদের ভাত-কাপড় দিতে পারেননি বাবা।
লক্ষণের বাবা নিবারণ প্রামাণিক পেশায় কৃষক ছিলেন। যশোর যাওয়ার আগে ১৯৫০ সালে ঢাকার নবাবগঞ্জে ভাগ্নে গৌর চন্দ্র মণ্ডলকে ১০ একরেরও বেশি সম্পত্তি দেখভালের দায়িত্ব দিয়ে যান। দুই বছর পর ফিরে এসে সম্পত্তি আর ফেরত পাননি তিনি।
চন্দন প্রামাণিক বলেন, সরকারপক্ষ যদি ভালোভাবে গুরুত্ব দিয়ে আমাকে সহায়তা করে তাহলে আমি ওই জায়গায় বসবাস করতে পারবো।
১৯৬৪ সালে নিম্ন আদালতে দায়ের করা হয় মামলা। ১৯৮৩ সালে নিম্ন আদালত অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা দেন। ১৯৯৩ সালে মারা যান নিবারণ।
পরে মামলাটি হাইকোর্ট, আপিল বিভাগ হয়ে নিষ্পত্তি হতে লাগে ২২ বছর। এরই মাঝে মারা যান লক্ষণ প্রামাণিক। তারও ৪-৫ বছর আগে মারা যান মামলার বিবাদী আব্দুল জলিল। এ বছরের ১৩ ডিসেম্বর লক্ষণ প্রামাণিককে বসতভিটা ফিরিয়ে দিতে রায় দেন হাইকোর্ট।
চন্দন প্রামাণিক বলেন, এতো বছর পর মামলায় জয়, শোনার পর খুশি হয়েছেন আমার মা। আমাকে বলেছেন যে, তোর বাবা তো আর দেখে যেতে পারলো, মামলাটার রায় হলো।
লক্ষণ প্রামাণিকের আইনজীবী চঞ্চল কুমার বিশ্বাস বলেন, যেহেতু ওনারা পজিশনে থাকতে পারেনি, সুতরাং আদালতে গিয়ে ওনারা দরখাস্ত দিলে তখন পুলিশ গিয়ে সরেজমিনে তাদেরকে দখল বুঝিয়ে দিবে।
লক্ষণ প্রামাণিকের মতো মামলায় দীর্ঘ সূত্রিতায় জর্জরিত অনেক বিচার প্রাথী। দেওয়ানী মামলা সব পক্ষকে চিঠি দিয়ে সমন পাঠাতে অনেক সময় লাগে। এ মামলা জট কমাতে অবস্থায় আইন সংশোধনের পরামর্শ আইনজীবীদের।
আইনজীবী চঞ্চল কুমার বিশ্বাস বলেন, নিম্ন আদালত থেকে উচ্চ আদালতে মামলার দীর্ঘসূত্রিতার অন্যতম একটা কারণ, সমন এবং নোটিশ।
এএইচ/