ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

স্ত্রীকে না পেয়ে শ্যালিকার বাড়িতে আগুন দিলেন দুলাভাই!

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৭:৩৩ পিএম, ২৫ ডিসেম্বর ২০২১ শনিবার

আটক দুলাভাই ও পুড়ে যাওয়া সেই বাড়ি

আটক দুলাভাই ও পুড়ে যাওয়া সেই বাড়ি

নিজ শ্যালিকার বাড়ি আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়ার অভিযোগ উঠল এক দুলাভাইয়ের বিরুদ্ধে। শনিবার এমনই কাণ্ড ঘটেছে পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর শহরের দু’নম্বর ওয়ার্ডের দরবার এলাকায়। অভিযুক্ত দুলাভাইকে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে। যদিও সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ওই ব্যক্তি।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বছর দশেক আগে উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা পাপ্পু সিংহের সঙ্গে বিয়ে হয় বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরের কামারপাড়া এলাকার বাসিন্দা কাজল মণ্ডলের। ওই দম্পতির ঘরে তিন সন্তান রয়েছে। 

অভিযোগ, পাপ্পু মত্ত অবস্থায় তাঁর স্ত্রী কাজলের উপর অত্যাচার করতেন। দিন কয়েক আগে মেলা দেখার জন্য কাজল মণ্ডল স্বামী পাপ্পু এবং সন্তানদের নিয়ে বিষ্ণুপুরে বাপের বাড়ি বেড়াতে যান। গত বৃহস্পতিবার রাতেও পাপ্পু মত্ত অবস্থায় কাজলকে বেধড়ক মারধর করেন বলে অভিযোগ। এরপর নির্যাতনের হাত থেকে বাঁচতে কাজল শুক্রবার বিষ্ণুপুর শহরের দরবার এলাকায় তাঁর বোন পূজা মণ্ডলের বাড়িতে আশ্রয় নেন। ওই দিন বিকেলে কাজল সেখান থেকে পালিয়ে অন্যত্র চলে যান। 

এদিকে, পূজা তাঁর বড় বোনকে লুকিয়ে রেখেছেন- এমন সন্দেহে পাপ্পু শ্যালিকার সঙ্গে ঝগড়াও করেন। স্থানীয়দের হস্তক্ষেপে তখনকার মতো শান্ত হন পাপ্পু। পরে শনিবার সকালে পূজা বাড়ি থেকে বের হলে পাপ্পু তাঁর বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেন বলে অভিযোগ। 

স্থানীয়রা প্রাথমিকভাবে আগুন নেভানোর কাজে হাত লাগান। পরে ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট এসে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করে। ততক্ষণে অবশ্য বাড়িটি পুড়ে ছারখার হয়ে যায়। এরপর উত্তেজিত জনতা ঘটনাস্থল থেকে অভিযুক্ত পাপ্পুকে ধরে বিষ্ণুপুর থানা পুলিশের হাতে তুলে দেয়।

পূজার অভিযোগ, ‘আমার দুলাভাই বোনকে খুঁজে না পেয়ে গতকাল আমার বাড়িতে চড়াও হয়। বোন আমার বাড়িতে লুকিয়ে নেই- এ কথা বলার পরেও তাঁর রাগ কমেনি। স্ত্রীকে খুঁজে না পেয়ে তিনি আমার বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে।’ 

অবশ্য নিজের শ্যালিকার এই অভিযোগ অস্বীকার করেন পাপ্পু। তিনি বলেন, ‘আমি আগুন লাগাইনি। কীভাবে আগুন লাগল, তা আমি জানি না। আমি পূজার সঙ্গে ঝগড়াও করিনি।’

এদিকে, এই শীতের মধ্যে এমন অবস্থায় শনিবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন বিষ্ণুপুর পৌরসভার প্রশাসক অর্চিতা বিদ এবং বিষ্ণুপুরের বিধায়ক তন্ময় ঘোষ। এসময় অর্চিতা বিদ বলেন, ‘পূজা অসহায় নারী। বিষ্ণুপুর পৌরসভা ওই পরিবারটির পাশে আছে।’

বিধায়ক তন্ময় ঘোষ বলেন, ‘বাড়িটি পুরোপুরি পুড়ে গেছে। অভিযুক্তকে ইতিমধ্যেই পুলিশের হাতে তুলে দেয়া হয়েছে। এই বাড়িটি সরকারিভাবে ঠিক করে দেওয়ার ব্যাপারে প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলব। সাময়িকভাবে পরিবারটিকে খাবার, ত্রিপল এবং কম্বল দেয়া হয়েছে।’ সূত্র- আনন্দবাজার।

এনএস//