ঢাকা, সোমবার   ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪,   পৌষ ৯ ১৪৩১

সমীক্ষা প্রতিবেদনের নামে লুটপাট (ভিডিও)

মুহাম্মদ নূরন নবী

প্রকাশিত : ১১:৪৭ এএম, ৩০ ডিসেম্বর ২০২১ বৃহস্পতিবার | আপডেট: ১১:৫৬ এএম, ৩০ ডিসেম্বর ২০২১ বৃহস্পতিবার

নিয়ম হলো প্রকল্প গ্রহণের আগে ভালোভাবে সম্ভাব্যতা যাচাই করা। কিন্তু সেই কানুনের ব্যত্যয় ঘটছে বারংবার। সমীক্ষা প্রতিবেদনের নামে লুটপাট থেমে নেই। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নথির সাথে মেলে না মাঠের চিত্র। যে কারণে ফিজিবিলিটির নামে এখনও বহাল টাকার নয়-ছয়।

নকশা কিংবা প্রতিটি নথিতেই স্পষ্ট থাকে কাজের ধরণ কি হবে। কতো টাকা খরচ আর শেষ-ই বা কবে হবে। সমীক্ষার চুলচেরা বিশ্লেষণ থাকলেও বেশিরভাগ প্রকল্পের অগ্রগতি আর বাস্তবায়ন নিয়ে প্রশ্ন ওঠে বার বার। 

সমীক্ষা প্রতিবেদন বলে দেয় সংশ্লিষ্ট প্রকল্পটি কতটা বাস্তবসম্মত। টেকসই হবে কতোটুকু-কতোদিনের জন্য তারও স্পষ্ট উল্লেখ থাকে।

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. শামছুল হক বলেন, ‘বাংলাদেশের ফিজিবিলিটি স্টাডিটা যে নিম্নমানের হচ্ছে, খরচ বাড়ছে সময় বাড়ছে। তার থেকেও বড়কথা হলো জনগণের উন্নয়নের যন্ত্রটা আন-বিয়ারেবল হয়ে যাচ্ছে।’

 

সুসজ্জিত কক্ষে বসে মনগড়া তথ্য-উপাত্ত দিয়ে তৈরি করা এমন প্রতিবেদনকে সময়োপযোগী ও উন্নয়ন অগ্রগতির অংশ হিসেবে আখ্যা দেয়া হয়। যাতে সহজেই পরিকল্পনা কমিশন ও একনেকের বৈতরণী পেরুতে পারে।  

সবকিছুর পরও বাস্তবায়ন পর্যায়ে শুরু হয় বহুমাত্রিক অসঙ্গতি। 

অধ্যাপক ড. শামছুল হক বলেন, ‘যদি বলেন ৪২ মাস, এটা ৪২ মাসের চেয়ে কিছু কম-বেশি হতে পারে। কিন্তু এটার জন্য ডাবল সময় লাগবে, ডাবল খরচ লাগবে- এখানে কেউ না কেউ তথ্য-উপাত্তের ফাঁকি দিয়েছে। অথবা ডেলিভারি ক্লিস্টে সারফ্রেক্স করে প্রজেক্টটা ফেজিবল দেখিয়েছে।’

যিনি প্রতিবেদন জমা দেন তিনি এরইমধ্যে টাকার ভাগ বুঝে নিয়ে কেটে পড়েন। সমীক্ষায় যুক্ত তৃতীয়পক্ষের প্রতিষ্ঠানগুলোও ততোক্ষণে অনুপস্থিত। মাঝের এই সময়টুকুতে অযথাই হচ্ছে অর্থের অপচয় আর সরকারের সমালোচনা। যার দায় বেশিরভাগ সময়ে বহন করে না সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান।
  
প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরকৌশল বিভাগের এই অধ্যাপক আরও বলেন, ‘এখন কিন্তু কোন কনসাল্টিং কাজে সিকিউরিটি মানি রাখা হয় না। সময় এসেছে, যে কোন কনসাল্টিং কাজ যদি একটা নির্দিষ্ট টাকার বেশি পরিমাণ হয় তারও কিন্তু একটা সিকিউরিটি মানি রাখা। কোন ভুল হলে কিছুটা হলেও যেন পানিশমেন্ট দেওয়া যায়।’

উন্নয়ন টেকসই হবে তখনই, যখন বিভিন্ন প্রকল্প সমন্বিতভাবে বাস্তবায়ন সম্ভব হবে। স্বচ্ছতা থাকবে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের নামে সমীক্ষার প্রতিবেদনে।

এএইচ/