‘নীরব বিদ্রোহ’ চলছে চীনা তরুণ কর্মীদের মধ্যে
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৯:৫৫ পিএম, ৩০ ডিসেম্বর ২০২১ বৃহস্পতিবার
চীনের তরুণ কর্মীদের মধ্যে একটি নীরব বিদ্রোহ চলছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কঠোর নিয়ন্ত্রণের কারণে তা বিশ্বের নজরে পড়ছে না।
২০২১ সালকে এই বিদ্রোহের প্রাথমিক সূত্রপাত হিসেবে দেখা হয়। এটি বোঝায়, দেশটির অর্থনৈতিক প্রতিযোগিতার একটি প্রধান স্তম্ভ তাদের ধারণার চেয়েও দুর্বল। গত আগস্টে ‘ওয়ার্কার্স লাইভস ম্যাটার’ আন্দোলনের মাধ্যমে শুরু হয় বিদ্রোহ। এর মাধ্যমে দেশের বৃহত্তম কোম্পানিগুলোতে প্রচলিত শোষণমূলক কাজের চিত্র তুলে ধরা হয়।
এই আন্দোলনের মাধ্যমে কোম্পানিগুলোর কাজের ৯৯৬টি কুখ্যাত শিডিউল তুলে ধরা হয়েছে, যা চলমান জনরোষে পরিণত হয়েছে। এগুলো বছরের পর বছর ধরে চীনা কোম্পানিগুলোতে অব্যাহত রয়েছে। আন্দোলনের পক্ষে যথেষ্ট সমর্থন থাকা সত্ত্বেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তা প্রকাশ করতে দেওয়া হচ্ছে না।
তাইওয়ান নিউজের মতে, চীনে চাকরি নিয়ে অসন্তোষ বোঝায় দেশটির তরুণরা আসলে কতটা অসুখী। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জনপ্রিয় ট্রেন্ড ‘ইনভলিউশন’ ‘লাইং ফ্লাট’ স্যাং কালচার’ তরুণদের অসন্তোষ তুলে ধরছে। অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির নৃবিজ্ঞানী জিয়াং বিয়াও এই জটিলতা যেমন- একক-মনোভাবাপন্ন বাজার প্রতিযোগিতাকে জীবনের একটি উপায়, সমাজ সংগঠিত করার একটি মৌলিক পদ্ধতি এবং সম্পদ বরাদ্দের একটি উপায় হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
এসব জটিলতার জন্য চীনের ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টির শাসন সরাসরি দায়ী বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। জিয়াং বিয়াও যুক্তি দেখিয়েছেন, অভ্যন্তরীণ এই জটিলতা হলো চীনা নীতির প্রত্যক্ষ ফলাফল। সিক্সথ টোনকে এক সাক্ষাত্কারে তিনি বলেন, ‘চীনে প্রত্যেকেরই লক্ষ্য রয়েছে- আরও অর্থ উপার্জন করা, ১০০ বর্গ মিটারের বেশি একটি বাড়ি কেনা, গাড়ির মালিক হওয়া, পরিবার শুরু করা ইত্যাদি। এই বিষয়গুলো খুব ভালোভাবে চিহ্নিত এবং প্রত্যেকেই অত্যন্ত সংহত। এই বাজার ব্যবস্থায় মানুষ এসব জিনিসের জন্য লড়াই করছে ‘
জিয়াং ব্যাখ্যা করেছেন, এই ব্যাপক প্রতিযোগিতা কীভাবে ৯০’র দশকে শুরু হয়েছিল। সর্বশেষ উপায় হিসেবে মানুষ এখন এসব জটিলতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে। নিম্ন শ্রেণী এখনও তাদের ভাগ্য পরিবর্তনের আশা করে। কিন্তু মধ্যবিত্ত এবং উচ্চবিত্তরা এতটা আশা করে না। তবে তাদের ভাগ্য ও জীবনের অধঃপতন না হয় তা নিয়ে ভয়ে থাকে। তাদের এই ভয় সম্ভবত তারা এখন হারিয়ে ফেলেছে। সূত্র: এএনআই
এসি