রাষ্ট্রপতির সংলাপে যাবে না ইসলামী আন্দোলন
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৯:৪৪ পিএম, ১ জানুয়ারি ২০২২ শনিবার
নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে রাষ্ট্রপতির সংলাপে অংশ না নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। আজ (১ জানুয়ারি) দুপুরে ঢাকায় দলটির আমির রেজাউল করিম সংবাদ সম্মেলনে এই কথা জানান। অতীতের সংলাপের তিক্ত অভিজ্ঞতা থেকেই তারা এবার বঙ্গভবনে যাবেন না বলে জানান তিনি।
এর আগে সংলাপে না যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছিল বিএনপি। একই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ) ও গণফোরামের একাংশ।
আগামী ৪ জানুয়ারি সন্ধ্যায় সংলাপে অংশ নিতে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।
আজ দুপুরে রাজধানীতে দলের প্রধান কার্যালয়ে রেজাউল করিম বলেন, সরকারের চেয়ে রাষ্ট্র অনেক বড় ধারণা। সরকার দলের হয় আর রাষ্ট্র হয় সবার। সেই রাষ্ট্রের প্রধান যখন কোনো সংলাপের আমন্ত্রণ জানান, তখন তাতে সাড়া দেওয়া নাগরিক দায়িত্ববোধের অংশ হয়ে দাঁড়ায়। এই বোধ থেকেই আমরা ২০১২ ও ২০১৭ সালের সংলাপে অংশ নিয়েছিলাম। কিন্তু তিক্ত সত্য হলো, আমরা চরমভাবে হতাশ হয়েছি।
'২০১২ এর সংলাপে গঠিত নির্বাচন কমিশন ২০১৪ সালে ক্ষমতাসীনদের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটাতে একতরফা নির্বাচন আয়োজন করেছে; যেখানে ১৫৩ জন এমপিকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী দেখানো হয়েছে। আর ২০১৭ এর সংলাপের পর গঠিত কমিশন ১০১৮ সালে একটি চরম বিতর্কিত ও অগ্রহণযোগ্য নির্বাচন করেছে, যাকে অনেকেই মধ্যরাতের নির্বাচন বলে আখ্যায়িত করে থাকে। এই দুই জাতীয় নির্বাচন এতটাই বিতর্কিত ও জালিয়াতিতে পূর্ণ যে, তা জাতি হিসেবে আমাদেরকে চরম হতাশ, বিব্রত ও লজ্জিত করেছে।'
তিনি আরও বলেন, 'আরও হতাশাজনক ব্যাপার হলো, এই ইসির নিয়োগকর্তা রাষ্ট্রপতি এসব কলঙ্কময় নির্বাচনের দায়ে তারই গঠিত কমিশনকে কোনোরকম জবাবদিহিতার আওতায় আনেননি; কোন রকম শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি। ফলে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সংলাপকে আমাদের কাছে অর্থহীন বলে মনে হয়।'
তিনি বলেন, 'অতীতের দুটি সংলাপে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের স্বার্থে রাষ্ট্রপতির কাছে আমাদের গঠনমূলক প্রস্তাবগুলোর কোনটাই মূল্যায়ন করা হয়নি। যে দল তাকে রাষ্ট্রপতি হিসাবে নির্বাচিত করেছে, তিনি সেই দলীয় স্বার্থের বাইরে যেতে পারেননি।'
লিখিত বক্তব্যে রেজাউল করিম বলেন, দেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে নির্বাচন কমিশন গঠন বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে রাষ্ট্রপতির সংলাপ নিয়ে দেশের চিন্তাশীল মহল এবং সাধারণ জনগণের মাঝে আমরা কোন আগ্রহই দেখতে পাচ্ছি না। বরং জনগণ মনে করছে, রাষ্ট্রপতির সংলাপে ফলপ্রসূ কিছু হবে না। অতীতের দুটি সংলাপ যেমন জনগণের প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হয়েছে, চলমান সংলাপেও এর ব্যতিক্রম কিছু হবে বলে জনগণ মনে করে না।
অতএব, জনআকাঙ্ক্ষার বিপরীতে গিয়ে এমন একটি আবেদনহীন ও তাৎপর্যহীন সংলাপে অংশ নেওয়াটা ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ সঙ্গত মনে করে না।
দেশবাসী মনে করে, নির্বাচন কমিশন গঠন নয় বরং সংলাপ হওয়া উচিত নির্বাচনকালীন সরকারের কাঠামো নিয়ে। দেশে একটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কীভাবে হবে, তা নিয়ে সংলাপ হওয়া উচিত।
আরকে//