ঢাকা, মঙ্গলবার   ০৮ অক্টোবর ২০২৪,   আশ্বিন ২৩ ১৪৩১

বাংলাদেশকে আমন্ত্রণের জোরালো দাবি অজি সাংবাদিকের

নাজমুশ শাহাদাৎ

প্রকাশিত : ১২:২৬ পিএম, ৬ জানুয়ারি ২০২২ বৃহস্পতিবার | আপডেট: ০২:৪৬ পিএম, ৭ জানুয়ারি ২০২২ শুক্রবার

বাংলাদেশের ঐতিহাসিক জয়ে উচ্ছ্বসিত অস্ট্রেলিয়ার ক্রীড়া সাংবাদিক মেলিন্ডা ফারেল

বাংলাদেশের ঐতিহাসিক জয়ে উচ্ছ্বসিত অস্ট্রেলিয়ার ক্রীড়া সাংবাদিক মেলিন্ডা ফারেল

নিউজিল্যান্ডে ঐতিহাসিক টেস্ট জয়ের পর এবার বাংলাদেশকে নিজ দেশে টেস্ট খেলার আমন্ত্রণ জানাতে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার প্রতি জোরালো দাবি জানিয়েছেন সে দেশেরই এক খ্যাতনামা ক্রীড়া সাংবাদিক৷ মেলিন্ডা ফারেল নামের ওই অজি সাংবাদিক এবার বেশ জোরেশোরেই এই আওয়াজ তুলেছেন।

বুধবার (৫ জানুয়ারি) সিডনিতে বৃষ্টিস্নাত দিনে অ্যাশেজের চতুর্থ টেস্ট শুরু হয়। সেখানে উপস্থিত সাংবাদিক মেলিন্ডা ফারেল স্পোর্টিং নিউজকে বলছেন, ‘সারাদিনে সিডনির দর্শকদের সবচেয়ে বড় উল্লাসের বিষয় ছিল সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডের স্কোরবোর্ডে যখন বাংলাদেশ বনাম নিউজিল্যান্ডের ১ম টেস্টের স্কোরকার্ড দেখানো হয়।’

ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার টুইটার থেকেও বাংলাদেশের ড্রেসিংরুমের সেই বিজয়োল্লাসের দৃশ্য শেয়ার করা হয়, যেটা ফারেল নিজের টুইটার একাউন্ট থেকেও শেয়ার করেছেন।

এ নিয়ে স্পোর্টিং নিউজে একটা বড় আর্টিকেলও লিখেছেন ফারেল। যেটার মূল বক্তব্য- একটা আদর্শ ক্রিকেট খেলুড়ে দেশ হিসেবে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার উচিত বাংলাদেশকে টেস্ট খেলার আমন্ত্রণ জানানো। 

একইসঙ্গে মেলিন্ডা বলেছেন, ডারউইন কিংবা কেয়ার্ন্সের মতো অখ্যাত গ্রাউন্ডে নয়, সিডনি-মেলবোর্নের মতো অস্ট্রেলিয়ার সেরা মাঠগুলোতেই যেন বাংলাদেশকে টেস্ট খেলার সুযোগ দেয়া হয়।

গত ২১ বছরে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া কিভাবে বাংলাদেশকে এড়িয়ে গেছে, সেই কথাও নিজের কলামে বেশ ভালোভাবেই উল্লেখ করেছেন ফারেল। 

এই কলামে তিনি বলেন, চলতি সিরিজে ইংল্যান্ডের হতশ্রী পারফর্মেন্স বর্তমানে অ্যাশেজকে ঘরের মাটিতে ডেড রাবারে পরিণত করেছে অস্ট্রেলিয়া। সিডনি টেস্ট চলাকালে দর্শকরা বাংলাদেশের টেস্ট জয়ে যে কতটা উল্লসিত হয়েছেন, সেটা স্কোরবোর্ডে রেজাল্ট দেখানো মাত্রই প্রকাশ পায়। অ্যাশেজ ছাপিয়ে এটাই ছিল সিডনির দর্শকদের সবচেয়ে বড় আনন্দের উপলক্ষ্য।

ফারেল আক্ষেপ করে লিখেছেন, বাংলাদেশের একটা জেনারেশন তথা সাকিব, তামিম, মাহমুদুল্লাহর মতো তারকারা হয়তো কালজয়ী সিডনির দর্শকদের সামনে ক্রিকেট না খেলেই নিজেদের ক্যারিয়ার শেষ করবে। 

নিউজিল্যান্ডের মাটিতে এই একটা টেস্ট ম্যাচ জিতে বাংলাদেশ বিশ্বে যে কত বড় আলোড়ন তৈরি করেছে, তা বিশ্বের নামকরা ক্রিকেট বোদ্ধাদের অভিনন্দন বাণীতেই পরিস্কার।

একবার ভাবুন তো, বাংলাদেশ যদি নিউজিল্যান্ড থেকে টেস্ট সিরিজটা জিতে আসতে পারে, তাহলে SENA (দক্ষিণ আফ্রিকা, ইংল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া) দেশগুলোতে বাংলাদেশকে নিয়ে আরও কত আগ্রহ তৈরি হবে। 

ইতিমধ্যেই বিভিন্ন দেশের ক্রিকেট ফ্যানরা র‍্যাংকিং-এর ব্যবধান দূরে সরিয়ে সব দেশের সাথে সবার নিয়মিত টেস্ট খেলার কথা বলেছেন।

আর এসবই বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য অনেক বড় প্রাপ্তি। যে প্রাপ্তির পেছনে নিউজিল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ডের অবদান অনস্বীকার্য, তাদেরও কিন্তু একটা ধন্যবাদ প্রাপ্য।

কেননা, গত ২২ বছরে SENA দেশগুলোর মধ্যে একমাত্র কিউয়িরাই বাংলাদেশকে টেস্ট খেলার জন্য বেশি আতিথ্য দিয়েছে। টানা ৩২ ম্যাচে না জিততে পারা একটা দলকে এতো সুযোগ কে-ই বা করে দেবে? 

বারবার হারার ফলেই সেখানে টেস্ট জেতার একটা প্রেষণা তৈরি হয়ে গিয়েছিল টাইগারদের মনে-প্রাণে। এবাদতের পোস্ট ম্যাচ ইন্টারভিউ কিংবা খালেদ মাহমুদের কথাগুলোতো সেদিকেই ইঙ্গিত করে।

উল্লেখ্য, আগামী ৯ জানুয়ারি থেকে ক্রাইস্টচার্চে শুরু হবে চলতি দুই ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ ম্যাচটি। যে ম্যাচ খেলতে নামার আগে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে থেকে প্রথমবারের মতো বেশ ফুরফুরে মেজাজেই আছে বাংলাদেশ দল। 

যদিও আংগুলের ইনজুরির কারণে খেলতে পারছেন না ৭৪ রানের অনবদ্য ইনিংস খেলা তরুণ ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয়। তার পরিবর্তে হয়ত সুযোগ পেতে পারেন বাহাতি ওপেনার মোহাম্মদ নাঈম শেখ।

এদিকে, এবারের অ্যাশেজ সিরিজে ইতোমধ্যেই প্রথম তিন ম্যাচেই হেরে ট্রফি হাতছাড়া করেছে ইংল্যান্ড।

এনএস//