ঢাকা, মঙ্গলবার   ০৮ অক্টোবর ২০২৪,   আশ্বিন ২২ ১৪৩১

আলমাতিজুড়ে লুটপাটের ক্ষতচিহ্ন, দায় কার?

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৪:৩৭ পিএম, ১০ জানুয়ারি ২০২২ সোমবার | আপডেট: ০৪:৩৮ পিএম, ১০ জানুয়ারি ২০২২ সোমবার

কাজাখস্তানের বড় শহর আলমাতির একটি শপিংমল, যা কদিন আগেও ছিল জমজমাট। কিন্তু এখন সেখানে শুধুই নিরবতা। চারদিকে ভাঙা কাচ, ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে মোবাইল ফোনের কভার, জুতোসহ বিভিন্ন পণ্যের খালি মোড়ক। চারিদিকে শুধুই লুটপাটের চিহ্ন।   

এই শপিং মলেই কাপড়ের দোকান চালাতেন আন্দ্রে মিখাইলভিচ। কিন্তু এখন তিনি নিঃস্ব। তার দোকানসহ পুরো শপিংমলই এখন তছনছ। 

মিখাইলভিচ জানান, গেল তিনদিনে শপিংমলের সব মালপত্র লুট করা হয়েছে। অস্থিরতা শুরুর পর থেকেই আর বাড়ির বাইরে বের হতে পারেননি তিনি। কিন্তু যখন দোকানে এসেছেন, কিছুই আর অবশিষ্ট নেই। 

একই অবস্থা শপিং মলটির অন্য দোকান মালিকদেরও। মিখাইলভিচের ভাষ্য, অনেক মানুষেরই এখন আর বেঁচে থাকার অবলম্বন বলতে কিছু নেই। 

মিখাইলভিচ জানান, পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হওয়ার পর যখন শপিংমলটি ঘুরে দেখছিলেন তিনি, তখন হঠাৎই কিছু সৈন্য বাধা দেয়। এই সৈন্যরাই এখন শপিংমলটি পাহারার দায়িত্বে আছে। যদিও শপিংমলটিতে পাহারা দিয়ে রাখার মত আর কিছুই অবশিষ্ট নেই।  

যেদিন প্রথম সংঘর্ষ শুরু হয় সেদিন রাতের কথা মনে করে স্থানীয় বাসিন্দা ইয়েদিল বলেন, বিক্ষোভকারীরা কাচ ভেঙে শপিংমলে ঢুকে পড়ে এবং দোকানের ক্যাশ মেশিন খুলতে শুরু করে। এ সময় ইয়েদিল তার বন্ধুকে দোকানের মালামাল রক্ষায় সাহায্য করতে মলে ঢুকেছিলেন।  

ইয়েদিল বলেন, “আমরা ভয় পেয়েছিলাম, কারণ সন্ত্রাসীরা আমাদের লক্ষ্য করে গুলি করেছিল, আর শপিংমলের নিরাপত্তাকর্মীরা যেভাবে প্রতিরোধ করেছিল তা ছিল নামমাত্র। আর লুটেরারা ভবনের বেশ কয়েক জায়গায় আগুনও ধরিয়ে দিয়েছিল।“

ইয়েদিল আরও বলেন, “এ সময় চারিদিক ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু আমরা দমকল বাহিনীকে ফোনও করতে পারছিলাম না, কারণ ফোনের লাইন আগে থেকেই কাটা ছিল।“ 

এই পরিস্থিতিতে শপিংমল থেকে পালিয়ে বের হয়ে যান ইয়েদিল। সে সময় একটি গাড়ির পাশে তিনটি মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেন তিনি। 

দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে যারা সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েছিল এবং শপিংমলসহ বিভিন্ন জায়গায় লুটতরাজ চালিয়েছে তারা কি সত্যিই আন্দোলনকারী ছিল?  

এমন প্রশ্নে দেশটির সরকার পক্ষ বিক্ষোভকারীদেরই দায়ী করছে।  

এদিকে পশ্চিম কাজাখস্তানের বিক্ষোভকারীরা জোর দিয়ে বলছে, তাদের আন্দোলন শান্তিপূর্ণ ছিল এবং তারা আগ্রাসন সমর্থন করে না। এই সহিংসতার জন্য তারা কর্তৃপক্ষকেই দায়ী করছেন।

তেলের দাম বাড়ার প্রতিবাদে গেল ৪ জানুয়ারি বিক্ষোভ শুরু হয় কাজাখস্তানে, এরপর ধীরে ধীরে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। এর ফলে সৃষ্ট বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে সেখানে পৌঁছে রাশিয়ার প্যারাট্রুপারস।

কাজাখস্তানের প্রেসিডেন্টের দফতর জানিয়েছে, দেশটির বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা এখনও রুশ সৈন্যরা পাহারা দিচ্ছে। তবে রুশ সৈন্যরা কোন কোন স্থাপনা পাহারা দিচ্ছে বা তারা কতদিন থাকবে, তার বিস্তারিত জানায়নি প্রেসিডেন্টের দফতর।

সূত্র: বিবিসি

এসবি/ এএইচএস