প্রথমবার মানবদেহে প্রতিস্থাপন হল শূকরের হৃদপিণ্ড
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ১১:০৭ এএম, ১১ জানুয়ারি ২০২২ মঙ্গলবার | আপডেট: ১১:০৯ এএম, ১১ জানুয়ারি ২০২২ মঙ্গলবার
প্রতিস্থাপনের পর সুস্থ আছেন ডেভিড বেনেট
বিশ্বের প্রথম ব্যক্তি হিসাবে যুক্তরাষ্ট্রের এক রোগীর শরীরে শূকরের হৃদপিণ্ড প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। তবে তার আগে শূকরের হৃদপিণ্ডটি জেনেটিকালি রূপান্তরিত করে নেয়া হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের বাল্টিমোরে ওই অস্ত্রোপচার হয়। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, সাত ঘণ্টা ধরে চলা পরীক্ষামূলক ওই অস্ত্রোপচারের তিনদিন পরেও সাতান্ন বছর বয়সী ডেভিড বেনেট বেশ সুস্থ রয়েছেন।
তবে তিনি কতদিন সুস্থ থাকতে পারবেন, তা এখনও পরিষ্কার নয়।
অস্ত্রোপচারের একদিন আগে ডেভিড বেনেট বলেছিলেন, ‘আমার সামনে বিকল্প দুইটা, হয় অস্ত্রোপচার করা অথবা মারা যাওয়া। আমি জানি, এটা অন্ধকারে গুলি ছোঁড়ার মতো একটা ব্যাপার, কিন্তু আমার জন্য এটাই শেষ চেষ্টা।’
বিশ্বের প্রথম এই ধরনের অস্ত্রোপচার করার জন্য ইউনিভার্সিটি অফ মেরিল্যান্ড মেডিকেল সেন্টারকে বিশেষ অনুমতি দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের চিকিৎসা তদারকি কর্তৃপক্ষ। কারণ, এ না হলে বেনেটের মৃত্যু ছাড়া আর কোন বিকল্প ছিল না।
চিকিৎসকদের যে দল এই অস্ত্রোপচার করেছেন, তারা বহু বছর ধরে এ নিয়ে গবেষণা করছিলেন।
ইউনিভার্সিটি অব মেরিল্যান্ড স্কুল অফ মেডিসিনের এক বিবৃতিতে সার্জন বার্টলে গ্রিফিথ বলেছেন, ‘অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ স্বল্পতার সমাধানে এই অস্ত্রোপচার বিশ্বকে এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যাবে।’
জানা যায়, যুক্তরাষ্ট্রে অঙ্গপ্রত্যঙ্গ প্রতিস্থাপনের অপেক্ষমান তালিকায় এক লাখের বেশি মানুষ রয়েছে। ফলে অঙ্গপ্রত্যঙ্গের চাহিদা মেটাতে জেনোট্রান্সপ্লান্টেশন নামে পশু বা প্রাণীর অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ব্যবহারের বিষয়ে অনেকদিন ধরেই বিবেচনা করা হচ্ছিল দেশটিতে।
এর আগে ২০২১ সালের অক্টোবরে নিউইয়র্কের চিকিৎসকরা ঘোষণা করেছিলেন যে, তারা এক ব্যক্তির শরীরে সফলভাবে শূকরের কিডনি প্রতিস্থাপন করেছেন। তবে যার শরীরে সেটি স্থাপন করা হয়েছিল, তিনি কোমায় চলে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে তার সুস্থ হয়ে ওঠার আর কোন আশা ছিল না।
তবে ডেভিড বেনেটের ক্ষেত্রে আশা করা হচ্ছে যে, তিনি আবার সুস্থ স্বাভাবিক জীবনযাপন শুরু করতে পারবেন। তাকে এখন সতর্কতার সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। সোমবার তিনি নিজে থেকে শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে শুরু করেছেন বলে জানা গেছে।
এএফপি নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে, শূকরের হৃদপিণ্ডটিকে জেনেটিকালি রূপান্তর করা হয়েছে। কারণ সেখানে এমন কিছু জিন ছিল, যা বেনেটের শরীরের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেয়ার ক্ষেত্রে বাধা দিতে পারে।
সার্জন গ্রিফিথ বলেছেন, ‘আমরা কখনোই কোন মানব শরীরে এমন অস্ত্রোপচার করিনি। আমি ভাবতে চাই, থেরাপি তাকে যা দিতে পারতো, আমরা তার চেয়ে ভালো একটি বিকল্প দিতে পেরেছি। কিন্তু তিনি একদিন, সপ্তাহ, মাস, নাকি বছর (বেঁচে থাকতে) থাকবেন, তা জানি না।’
সূত্র: বিবিসি বাংলা
এএইচ/