নোয়াখালী পৌরসভা: দ্বিতীয়বারের মতো মেয়র হলেন শহিদ উল্লাহ
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৮:৪৩ পিএম, ১৬ জানুয়ারি ২০২২ রবিবার | আপডেট: ০৮:৪৫ পিএম, ১৬ জানুয়ারি ২০২২ রবিবার
নোয়াখালী পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী শহিদ উল্যাহ খান সোহেল বিপুল ভোটের ব্যবধানে মেয়র পদে বিজয়ী হয়েছেন। শহিদ উল্যাহ খান সোহেল পেয়েছেন ২৬ হাজার ৪০৮ ভোট, তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী কম্পিউটার প্রতীকের প্রার্থী শহিদুল ইসলাম কিরন পেয়েছেন ৮ হাজার ৬২৮ ভোট। ১৭ হাজার ৭৮০ ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হন সহিদ উল্যাহ খান সোহেল। রোববার সন্ধ্যায় নির্বাচনের ফলাফলের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. রবিউল আলম।
অন্যদিকে নোয়াখালী পৌরসভার নির্বাচনকে ঘিরে বিতর্কিত আলোচনার জন্ম দেয়া বরিশালের জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দীন হায়দারের ছোট ভাই লুৎফুল হায়দার লেলিন পেয়েছেন ২২৪৪ ভোট। তিনি মোবাইল প্রতীক নিয়ে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। রোববার নোয়াখালী পৌরসভায় প্রথম বারের মত ইভিএম পদ্ধতিতে ৩৪টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ শুরু হয়। শেষ হয় বিকেল ৪টায়।
এছাড়া ৯টি ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে ৬৩ ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ১৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১নং ওয়ার্ডে রফিকুল বারী আলমগীর, ২নং ওয়ার্ডে ওহিদ উল্যাহ পলাশ, ৩নং ওয়ার্ড মো. সেলিম, ৪নং ওয়ার্ড আবুল খায়ের সোহাগ, ৫নং ওয়ার্ড রতন কৃষ্ণ পাল, ৬নং ওয়ার্ড জাহেদুর রহমান শামীম, ৭নং ওয়ার্ডে বদরুল হাসান বাবলু, ৮নং ওয়ার্ডে নাসিম উদ্দিন সুনাম ও ৯নং ওয়ার্ডে ফখরুল ইসলাম নির্বাচিত হয়েছেন।
জেলা আওয়ামী লীগের সাম্প্রতিক সময়ে দ্বিধা বিভক্তির পরও মেয়র পদে সহিদ উল্যাহ খান সোহেলকে দল মত নির্বিশেষে সাধারণ ভোটারও ভোট দিয়েছেন। এছাড়ও করোনাকালীন বিভিন্ন ধরণের ইতিবাচক উদ্যোগ গ্রহণ ও পৌরসভার নাগরিকদের জীবনমান উন্নয়নে বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকান্ড পৌর নির্বাচনে বিপুল ভোটে পুনরায় বিজয়ের কারণ বলে মনে করেন পৌরবাসী। সাধারণ মানুষ এবারের ভোটে স্বত:স্ফুর্তভাবে তাকে ভোট দিয়েছেন বলেও তারা উল্লেখ করেন।
কোনো প্রকার অঘটন ছাড়াই রোববার সকাল ৮টা থেকে শুরু হওয়া ভোট চলে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। সকাল সোয়া ৮টার দিকে নোয়াখালী পাবলিক কলেজ কেন্দ্রে ভোট দেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী সহিদ উল্যাহ খান সোহেল। ভোট প্রদান শেষে তিনি জয়ের ব্যপারে আশা প্রকাশ করে বলেন, নোয়াখালী পৌরসভার জনগণের সুখে দুখে একজন পৌর মেয়র হিসেবে সাধ্যের সবটুকু দিয়ে পাশে ছিলাম গত পাঁচ বছর। আমি মনে করি জনগণও আমার পাশে থাকবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উন্নয়নের ধারা ও নোয়াখালী পৌরসভার উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখার জন্য জনগণ আমাকে পূণরায় নৌকা প্রতীকে ভোট দিয়ে জনগণের সেবার সুযোগ দেবে।
বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক পদ থেকে সদ্য অব্যাহতি প্রাপ্ত শহীদুল ইসলাম কিরন (কম্পিউটার) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে দারুচ্ছুন্নাত আরাবিয়া মাদ্রাসা কেন্দ্র পরিদর্শণ শেষে সাংবাদিকদের বলেন, নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু হচ্ছে। প্রশাসন যতেষ্ঠ নিরাপত্তা গ্রহণ করেছে। এভাবে চললে আমি আমার জয়ের ব্যপারে আশাবাদি।
সরেজমিন নোয়াখালী পাবলিক কলেজ কেন্দ্র, আল ফারুক একাডেমি, মাইজদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পিটিআই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, অরুন চন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়, নোয়াখালী উচ্চ বিদ্যালয়, নোয়াখালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, গোপাই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়,দারুচ্ছুন্নাত আরাবিয়া মাদ্রাসা, আহমদিয়া উচ্চ বিদ্যালয়, নোয়াখালী কারামতিয়া কামেল মাদ্রাসা ও পুলিশ লাইন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রগুলোতে নারী পুরুষ ভোটারদের স্বতস্ফুর্তভাবে ভোট দিতে দেখা গেছে। এ বিভিন্ন কেন্দ্রে নারী ভোটারদের দীর্ঘ লাইন দেখা গেছে। নির্বাচনে মেয়র পদে ৭ জন, কাউন্সিলর পদে ৬৩ ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে ১৪ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। নোয়াখালী পৌরসভায় মোট ভোটার সংখ্যা ৭৫ হাজার ৭২৬ জন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ৩৭ হাজার ৪০১ জন, নারী ভোটার ৩৮ হাজার ৩২৫ জন। ৩৯ হাজার ৮২২ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। এর মধ্যে বাতিল হয়েছে ৬৯ ভোট।
এর আগে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ ভোট গ্রহণের লক্ষে সকল প্রস্তুতি শেষ করে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচনকে অবাদ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে প্রসাশনের পক্ষ থেকে সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। ভোট কেন্দ্রের নিরাপত্তার জন্য ৭৫০ জন পুলিশ, ৪৫০ জন আনসার, ৩ প্লাটুন বিজিবি, ৩ প্লাটুন র্যাব, পুলিশের ৪টি মোবাইল টিম, ১জন জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও ৯ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্বে ছিলেন।
কেআই//