ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

অসহায় শিশুদের পাশে ভাণ্ডারিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১১:১০ এএম, ১৮ জানুয়ারি ২০২২ মঙ্গলবার

পিরোজপুরের ভণ্ডারিয়ায় একটি প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের সকল শিশুকে ২৫ হাজার টাকা করে অনুদানের ঘোষণা দিয়েছেন উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মিরাজুল ইসলাম। এসময় তিনি ওই প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষকদের সম্মানি ভাতা হিসেবে আরও ৪০ লাখ টাকা নিজের তহবিল থেকে অনুদান হিসেবে ঘোষণা করেন। 

তিনি শনিবার দুপুরে উপজেলার ভিটাবাড়ীয়া ইউনিয়নের বীর মুক্তিযোদ্ধা আ: হালিম শরীফ প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ে আয়োজিত মত বিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। এসময় তিনি অভিভাবকদের সঙ্গে মত বিনিময় করেন।

সভায় বক্তব্য দিতে গিয়ে অসহায় প্রতিবন্ধী শিশুদের কষ্ট আর দূর্দশা দেখে অঝোরে কাঁদেন ভাণ্ডারিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান। তিনি তার বক্তব্য দিতে গিয়ে অশ্রুসিক্ত হন। এ সময় তার কান্না দেখে মাঠে উপস্থিত প্রতিবন্ধী শিশু, অভিভাবক, অতিথিসহ বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষরাও কেঁদে ওঠেন।

পরে উপজেলা চেয়ারম্যান বক্তৃতা না দিয়ে মাঠে থাকা ১৫৫ প্রতিবন্ধী শিশুদের অভিভাবকদের কাছ থেকে তাদের কষ্টের কথা শোনেন। প্রতিটি শিশুকে ২৫ হাজার টাকা করে ও প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষকদের সম্মানি ভাতা হিসেবে ৪০ লাখ টাকা নিজের তহবিল থেকে অনুদানের ঘোষণা দেন। পরে নিজের নামে প্রতিষ্ঠিত মিরাজুল ইসলাম ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশনের কর্মীদের মাধ্যমে রোববার ওই সকল অসহায় প্রতিবন্ধী শিশুদের বাড়ী বাড়ী গিয়ে টাকা পৌঁছে দিয়েছেন।

বীর মুক্তিযোদ্ধা আ: হালিম শরীফের সভাপতিত্বে মত বিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপজেলা চেয়ারম্যান মো. মিরাজুল ইসলাম আরো বলেন, “আমি সুস্থ্য আছি। ওরা অসুস্থ্য। যতদিন বেঁচে আছি ওদের পাশে থেকে আল্লাহ চাইলে সাহায্য করে যাবো।”

তিনি তার ব্যক্তিগত তহবিল থেকে এই ১৫৫ প্রতিবন্ধী শিশুদের প্রতিমাসে দুই হাজার টাকা করে শিক্ষা ভাতা দেবেন এবং প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের নতুন ভবনসহ বিদ্যালয়টি সরকারি হিসেবে নিবন্ধনে সকল প্রকার সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে বলে জানান।

মত বিনিময় সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফাইজুর রশিদ খসরু, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মো. মশিউর রহমান মৃধা, ভিটাবাড়ীয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান খান এনামুল করিম পান্না, উপজেলা সমাজ সেবা অফিসার ভবানী শংকর বল, উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. এহসাম হাওলাদার, বীর মুক্তিযোদ্ধা আ. হালিম শরীফ প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা ও প্রতিষ্ঠাতা খালেদা ফেরদৌসি (শিল্পী) প্রমুখ।

উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মো. মশিউর রহমান মৃধা ও ভিটাবাড়ীয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান খান এনামুল করিম পান্না জানান, উপজেলা চেয়ারম্যান মিরাজুল ইসলাম এর বাবা-মা মৃত্যুর সময় তিনি মোটামোটি শান্ত ছিলেন, কখনো জন সম্মুখে এভাবে কান্না করতে দেখিনি। কিন্তু আজ আসহায় প্রতিবন্ধী শিশু ও তার পরিবারের সদস্যদের কষ্ট চোখে দেখে একজন শক্ত মানুষ (চেয়ারম্যান) কেঁদে উঠলেন। আসলেই মিরাজুল ইসলাম একজন মানবিক চেয়ারম্যান। তিনি দিতে যানেন, নিতে নয়।

বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আ. হালিম শরীফ জানান, অসহায়, এতিম প্রতিবন্ধী শিশুদের কথা চিন্তা করে এই বৃদ্ধ বয়সে স্কুলটি কোনোমতে টিকিয়ে রেখেছি। প্রতিবন্ধীদের চিকিৎসা খরচ, লেখাপড়া ও সেবার জন্য আল্লাহ একজন মানবিক চেয়ারম্যান পাঠিয়েছে তাই আমি আজ অনেক আনন্দিত। আল্লাহ যেন চেয়ারম্যানকে সব সময় ভালো রাখেন। চেয়ারম্যানের প্রায়াত মা-বাবার রুহের মাখফেরাত কামনা করছি।
এসএ/