ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

কুমিল্লার শ্বাসরুদ্ধ করে দিয়েই হারল সিলেট

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৪:০৮ পিএম, ২২ জানুয়ারি ২০২২ শনিবার

চলতি বিপিএলের তৃতীয় ম্যাচে শক্তিশালী কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের মুখোমুখি হয়েছে অনেকটা খর্বশক্তির সিলেট সানরাইজার্স। যে ম্যাচে কুমিল্লার বোলারদের ছন্নছাড়া বোলিং স্বত্বেও মাত্র ৯৬ রানেই গুটিয়ে যায় মোসাদ্দেকের দল। যদিও মামুলী এই লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ৮৮ রানেই ৮ উইকেট খুইয়ে শঙ্কা জাগায় কায়েস বাহিনী। দুর্দান্ত বোলিংয়ে লো স্কোরিং ম্যাচটি জমিয়ে তোলে সিলেট। কাঁপন ধরিয়ে দেয় কুমিল্লা শিবিরে।

তবে বল হাতে ভেল্কি দেখানো নাহিদুল ইসলাম এবং করিম জানাতের পর মাহিদুল ইসলাম অঙ্কনের ব্যাটে সব শঙ্কা দূর করে কাঙ্ক্ষিত জয় তুলে নিয়েই মাঠ ছাড়ে সাবেক চ্যাম্পিয়নরা। টানটান উত্তেজনা ছড়িয়ে ৬ বল বাকি থাকতেই মাত্র ২ উইকেটে হেরে যায় সিলেট সানরাইজার্স।

এর আগে মাত্র ৯৭ রানের জয়ের লক্ষ্যে নেমে শুরুটা দেখেশুনে করলেও সোহাগ গাজী, মোসাদ্দেক হোসাইন ও নাজমুল ইসলাম অপুর স্পিন ভেল্কিতে মাত্র ৫৫ রানেই পাঁচ উইকেট খুইয়ে বসে কুমিল্লা। গতকালই উচ্চাশা প্রকাশ করা প্রোটিয়া ব্যাটার ফ্যাফ ডু প্লেসিস ফেরেন মাত্র ২ রান করেই।

এরপর ওই তিন স্পিনারের মায়াবী ছোবলে একে একে সাজঘরে ফেরেন ক্যামেরন ডেলপোর্ট ১৬, মোমিনুল হক ১৫, অধিনায়ক ইমরুল কায়েস ১০ ও আরিফুল ইসলাম ৪ রান করে। সোহাগ ও মোসাদ্দেক ২টি করে এবং একটি উইকেট তুলে নেন নাজমুল।

এ অবস্থায় করিম জানাতকে নিয়ে জুটি বেঁধে জয়ের লক্ষ্যে এগুতে থাকেন বল হাতে সাফল্য পাওয়া নাহিদুল। দুজনে মিলে মাত্র ১৩ বলে যোগ করেন ২৭টি মূল্যবান রানও। তবে সিলেটের পেসার তাসকিনের বলে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ডিপ কাভারে কেজরিক উইলিয়ামসের হাতে ধরা পড়ে করিম জানাত বিদায় নিলে ভাঙে এই জুটি।

বিদায়ের আগে ১৩ বলে ১৮ রান করেন আফগান এই অলরাউন্ডার। আর তাঁর বিদায়ের পরই নাজমুল অপুর দ্বিতীয় শিকার হয়ে ফেরেন ১৬ বলে ১৬ করা নাহিদুলও। যার ফলে টানা দুই ওভারে দুই উইকেট পড়ায় ৮৪ রানেই সপ্তম উইকেট হারায় কুমিল্লা। পরে আরও একটি উইকেট হারালেও অঙ্কনের ব্যাটে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় ইমরুল কায়েসের দল।

বাংলার টেম্বা বাভুমা খ্যাত মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন ১৪ বল খেলে ৯ রান করে অপরাজিত থাকেন। সঙ্গী তানভীর ইসলাম অপরাজিত থাকেন ৬ বলে ৩ রান করে।

সিলেটের পক্ষে নাজমুল ইসলাম অপু ১৭ রানে ৩টি উইকেট নেন। এছাড়া সোহাগ গাজী ৩০ রানে ও মোসাদ্দেক হোসাইন মাত্র ১০ রানে ২টি করে উইকেট নেন। আর ১৯ রানের বিনিময়ে একটি উইকেট পান তাসকিন আহমেদ।

মিরপুরে শনিবার টস হেরে ব্যাট করতে নেমে সিলেটের শুরুটা ভালো হয়নি। কুমিল্লার স্পিন বিষে নীল হয়ে একের পর এক উইকেট হারাতে থাকে দলটি। শুরুতে বলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে রান তোলার প্রবণতা থাকলেও উইকেট পড়ার সঙ্গে সঙ্গে কমতে থাকে রানের গতি।

১৫ ওভারের মধ্যে দলটি হারিয়ে ফেলে ৭টি উইকেট, ততক্ষণে বোর্ডে জড়ো করতে পারে মাত্র ৬৯টি রান। পরের তিন উইকেট হারিয়ে যোগ করতে পারে আরও ২৭ রান।

সিলেটের পক্ষে এদিন দুই অঙ্কের রানের দেখা পেয়েছেন মাত্র ৩ জন। সর্বোচ্চ ২০ রান আসে কলিন ইনগ্রামের ব্যাট থেকে, ২১ বলের মোকাবেলায়। এছাড়া রবি বোপারা ১৭ ও সোহাগ গাজী ১২ রান করেন। এনামুল হক বিজয় ৯ বলে ৩, মোহাম্মদ মিঠুন ৭ বলে ৫ ও অধিনায়ক মোসাদ্দেক হোসাইন সৈকত ৬ বলে ৩ রান করে আউট হন।

সুনীল নারাইন একাদশে না থাকলেও নাহিদুল ইসলাম, তানভীর ইসলামরা কুমিল্লার স্পিন বিভাগকে সামলেছেন দারুণভাবে। আর পেস বিভাগে মুস্তাফিজুর রহমানের সঙ্গে শহিদুল ইসলামও ছিলেন মিতব্যয়ী। মুস্তাফিজ, শহিদুল ও নাহিদুল দুটি করে উইকেট শিকার করেন। একটি করে উইকেট শিকার করেন তানভীর ইসলাম, মোমিনুল হক ও করিম জানাত।

যার ফলে ১৯.১ ওভারেই সবকটি উইকেট হারিয়ে সিলেটের সংগ্রহ দাঁড়ায় মাত্র ৯৬-এ। অতিরিক্ত খাতে এদিন কুমিল্লা খরচ করে ১৯টি রান, যার মধ্যে ১৪টিই ওয়াইড। অর্থাৎ সিলেটের ব্যাটাররা মাত্র ৭৭ রান সংগ্রহ করেছেন নিজেদের ব্যাট থেকে।

এনএস//