বাণিজ্য মেলা এখনই বন্ধ চায় কারিগরি কমিটি
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৫:৩৫ পিএম, ২৫ জানুয়ারি ২০২২ মঙ্গলবার | আপডেট: ০৫:৩৮ পিএম, ২৫ জানুয়ারি ২০২২ মঙ্গলবার
দেশে দিনের পর দিন করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করে সরকারকে স্বাস্থ্যবিধি মানতে কঠোর হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে কোভিড-১৯ জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি। একইসঙ্গে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মতো এখনই বাণিজ্য মেলা বন্ধেরও সুপারিশ করেছে কমিটি।
মঙ্গলবার (২৫ জানুয়ারি) কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. মো. সহিদুল্লা এই সুপারিশের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। জানিয়েছেন, তাদের সুপারিশের বিষয় এরই মধ্যে সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পৌঁছে দিয়েছেন। কারিগরি কমিটি বাণিজ্য মেলা বন্ধের পাশাপাশি বইমেলার মতো আয়োজন পেছানোর সুপারিশ করেছে বলে জানিয়েছেন ডা. সহিদুল্লা।
করোনাভাইরাসের দুটি ঢেউয়ে দেশে বিপুলসংখ্যক মানুষের প্রাণহানির পর এবার আঘাত হেনেছে তৃতীয় ঢেউ। এখন পর্যন্ত মৃত্যুর সংখ্যা কম হলেও দৈনিক শনাক্তের সংখ্যা ১৫ হাজার ছুঁইছুঁই। পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার ছাড়িয়েছে ৩২ শতাংশ।
তৃতীয় ঢেউয়ের লক্ষণ যখন স্পষ্ট তখন ১৩ জানুয়ারি সরকার জারি করে ১১ দফা বিধিনিষেধ। দেওয়া হয় গণজমায়েতে নিষেধাজ্ঞা। এছাড়া গণপরিবহনে অর্ধেক যাত্রী নেওয়ার কথা বলা হয়। যদিও পরে ট্রেন ছাড়া অন্য যানবাহনে আসনের সমান যাত্রী বহনের সিদ্ধান্ত হয়।
করোনাভাইরাসের তৃতীয় ঢেউ নিশ্চিতের পর ২১ জানুয়ারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সশরীরে ক্লাস বন্ধের আদেশ আসে। তবে এর মধ্যেও মানুষের জটলা চোখে পড়ছে, এমনকি তৃণমূলে নির্বাচনের জমজমাট প্রচার চলছে। অবশ্য বন্ধ হয়নি বাণিজ্য মেলার মতো আয়োজন। যা নিয়ে সমালোচনাও হচ্ছে।
এরইমধ্যে আবার নতুন করে অর্ধেক লোক দিয়ে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান চালানোর নির্দেশ এসেছে, একই নির্দেশ এসেছে আদালত ও ব্যাংকের পক্ষ থেকেও।
অধ্যাপক সহিদুল্লা বলেন, “করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণের বিধিনিষেধ বাস্তবায়নে সরকারকে আরও কঠোর হওয়া উচিত। আমরা কয়েকবার বিধিনিষেধ যাথাযথ বাস্তবায়নের জন্য সুপারিশ করেছি। শুধু বিধিনিষেধ দিলে হবে না। তা যাথাযাথ বাস্তবায়ন দরকার। সবাইকে মাস্ক পরতে হবে। অফিস আদালতে যে অর্ধেক জনবল নিয়ে কাজ করার সুপারিশ করা হয়েছে, এগুলো ভালোভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে। তাই করোনাভাইরাসের নিয়ন্ত্রণে পরিবহনে অর্ধেক যাত্রী ও বাণিজ্য মেলা বন্ধ এবং বইমেলা পেছানো উচিত।”
ওমিক্রন নিয়ন্ত্রণে লকডাউনের সুপারিশ করবেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, “ওমিক্রন প্রতিরোধে নতুন করে লকডাউন দিয়ে লাভ হবে না। ওমিক্রনের সামাজিক সংক্রমণ শুরু হয়েছে। এছাড়া আমরা যখন দেখি হাসপাতালে রোগী চাপ বেশি, চিকিৎসকদের ওপর চাপ তৈরি হচ্ছে, তখন লকডাউনের সুপারিশ করি। লকডাউন দিলে জনজীবনে প্রভাব পড়বে, অর্থনীতিও ক্ষতিগ্রস্ত হবে; কাজেই লকডাউনের আগে যে কাজগুলো বেশি কার্যকর সে কাজগুলো যদি আমরা যথাযথভাবে করতে পারি, তাহলে করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব।”
স্বাস্থ্যবিধি মানার ওপর জোর আহ্বান জানিয়ে এই বিশেষজ্ঞ বলেন, “করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ওমিক্রন প্রথম দেখা দেয় দক্ষিণ আফ্রিকায়, সেখানে লকডাউন না দিয়ে শুধু স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করে অনেকটা নিয়ন্ত্রণ করেছে। আমাদেরও স্বাস্থ্যবিধি মানার ওপর গুরুত্ব দিতে হবে।”
আরকে//