ষড়যন্ত্র অপপ্রচারে মেতেছে বিএনপি: তথ্যমন্ত্রী
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৫:৫২ পিএম, ২৮ জানুয়ারি ২০২২ শুক্রবার | আপডেট: ০৬:৩১ পিএম, ২৮ জানুয়ারি ২০২২ শুক্রবার
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, রাজনৈতিক ভবিষ্যত নিয়ে শঙ্কিত বলেই বিএনপি ষড়যন্ত্র ও অপপ্রচারে মেতে রয়েছে।
শুক্রবার সকালে সিলেট সার্কিট হাউজে সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের নেতাদের সাথে মতবিনিময়কালে তিনি একথা বলেন।
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্ব সম্প্রদায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রশংসা করলেও বিএনপি-জামাত খুশি তো নয়ই বরং আতঙ্কিত। কারণ, শেখ হাসিনার এই সাফল্যে দেশের মানুষ খুশি, তাই তারা তাদের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কিত ও আতঙ্কিত। এই কারণে তারা এখন ষড়যন্ত্রের পথ বেছে নিয়েছে। তারা রীতিমতো পয়সা খরচ করে দেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে।
বিএনপির মহাসচিব বাংলাদেশে মার্কিন সহায়তা বন্ধের জন্য নিজের স্বাক্ষরে মার্কিন আইনপ্রণেতাদের কাছে ও বিভিন্ন দপ্তরে চিঠি লিখেছেন যাতে বাংলাদেশে সাহায্য দেয়ার বিষয় পুনর্মূল্যায়ন করা হয়।’'একটি রাজনৈতিক দলের মহাসচিব কিভাবে দেশকে সাহায্য দেয়া বন্ধের উদ্দেশ্যে পুনর্মূল্যায়নের জন্য বিদেশে চিঠি লেখে, তারা আবার দেশ পরিচালনার স্বপ্ন দেখে' প্রশ্ন রেখে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, 'এরা দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রকারী, এরা দেশবিরোধী।'
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বিগত টানা ১৩ বছরে প্রতিটি ক্ষেত্রে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রতিটি মানুষের ভাগ্যের উন্নয়ন হয়েছে, গ্রাম শহরে পরিবর্তন হয়েছে। দেশে এখন আর আগের মতো কুড়েঘর নেই, কাদা মাটির রাস্তা নেই, সর্বত্র পিচঢালা পথ। দেশে এখন নূন্যতম মজুরীতে শ্রমিক পাওয়া যায়না। ১০-১২ বছর পর বিদেশ থেকে কেউ দেশে আসলে এখন আগের মতো আর কোন চিত্র দেখতে পায়না, সর্বত্র দেখে শুধু উন্নয়ন আর পরিবর্তন।
এসময় সংসদে সদ্য পাশ হওয়া নির্বাচন কমিশন গঠন আইন প্রসঙ্গে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রাষ্ট্রপ্রধানের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন গঠনের উদাহরণ তুলে ধরেন তথ্যমন্ত্রী।
তিনি বলেন, নেপালে ও শ্রীলঙ্কাতে রাষ্ট্রপ্রধানের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন গঠন হয়, পাকিস্তানেও সব প্রদেশের প্রধান বিচারপতিদের নিয়ে রাষ্ট্রপ্রধানের মাধ্যমেই হয়, অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডে তাদের গভর্ণর জেনারেলরা যারা রাণীর প্রতিনিধি, তাদের মাধ্যমেই নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘সারা দুনিয়ার যে পদ্ধতি, তাকে আরও স্বচ্ছ করেছি আমরা। সেখানে সার্চ কমিটি নেই, আর আমাদের যে আইন হয়েছে সেখানে সার্চ কমিটি ১০ জনের নাম প্রস্তাব করবে সেখান থেকে রাষ্ট্রপতি ৫ জনকে নিয়োগ দেবেন।’
তিনি আরও বলেন, সর্বসম্মতিক্রমে আইন পাশের পর আবার মির্জা ফখরুল সাহেব বললেন, আইন হলেও তারা এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে যাবেন না। আসলে বিএনপিকে যে ‘না’ রোগে পেয়েছে, সেখান থেকে তারা বেরিয়ে আসতে পারছেন না। কারণ তারা বুঝেছেন যে, তারা জনগণের কাছ থেকে বহুদূরে সরে গেছেন। তাই তারা নানা ষড়যন্ত্রের পথ বেছে নিয়েছেন।
আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী বিশেষ করে তরুণ নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য মন্ত্রী বলেন, দেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচারে বিএনপি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে একটি বড় প্লাটফর্ম হিসেবে বেছে নিয়েছে। তাই, সরকারের উন্নয়ন কার্যক্রম প্রচারের পাশাপাশি তাদের অপপ্রচারের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সক্রিয় থাকতে হবে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদকের মাধ্যমে জেলার সব যুব ইউনিট একযোগে কাজ করবে।
মতবিনিময় সভায় সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাসুক উদ্দিন আহমদ, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জাকির হোসেন এবং সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন খান বক্তব্য রাখেন।
বৈঠক শেষে বাংলাদেশ বেতারের সিলেট কেন্দ্র ও বাংলাদেশ টেলিভিশনের সিলেট উপ-কেন্দ্র পরিদর্শনে যান ড. হাছান। আগে বৃহস্পতিবার রাতে সিলেটে পৌঁছেই প্রথমে হযরত শাহজালাল (র.) ও পরে হযরত শাহপরান (র.) এর মাজার জিয়ারত করেন তথ্যমন্ত্রী। সেখানে তিনি কিছু সময় নিরবে দাঁড়িয়ে ফাতেহা পাঠ ও দেশের অব্যাহত সমৃদ্ধি কামনা করে মোনাজাত করেন।
সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা মন্ত্রীর সাথে ছিলেন। এর আগে সিলেট বিমানবন্দরে সিলেটের ডিসি ও মহানগর আওয়ামী লীগ, জেলা তথ্য অফিস, বাংলাদেশ বেতার, বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস) প্রতিনিধিরা মন্ত্রীকে স্বাগত জানান।
(সূত্রঃ বাসস)
কেআই//