ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৭ ১৪৩১

চুয়াডাঙ্গায় নির্বাচনী সহিংসতায় আহত ৯

চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ০৮:৪৯ এএম, ২৯ জানুয়ারি ২০২২ শনিবার

চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার তিতুদহ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নৌকা ও আনারস প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও হামলার ঘটনা ঘটেছে। কয়েকটি নির্বাচনী কার্যালয়, মাইক্রোবাস, মোটরসাইকেলে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। এ ঘটনায় উভয়পক্ষের ৯ জন আহত হয়েছেন।

শুক্রবার দিবাগত রাত ৮টা থেকে ১০টা পর্যন্ত তিতুদহ বাজার ও গ্রীসনগর বাজার এলাকায় দফায় দফায় এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। 

খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয় দর্শনা থানা তিতুদহ ক্যাম্পের পুলিশ। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

অভিযোগে জানা গেছে, আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী শুকুর আলীর তিনটি ও স্বতন্ত্র প্রার্থী মিজানুর রহমান টিপুর দুটি নির্বাচনী অফিসে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। এছাড়াও স্বতন্ত্র প্রার্থীর এক সমর্থকের মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়েছে। 

নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থীর আহত পাঁচ কর্মী হলেন- তিতুদহ গ্রামের মাঝেরপাড়ার আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে হাসান আলী (১৮), দক্ষিণপাড়ার মৃত রহিম বিশ্বাসের ছেলে মানিক (৩৫), বড়শলুয়া গ্রামের আনোয়ার হোসেনের ছেলে ওমর ফারুক (৩২) এবং তিতুদহ গ্রামের মাঝেরপাড়ার বজলুর রহমানের দুই ছেলে শাহিন (২৬) ও রাইহান (৩০)। 

তাদেরকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

অপরদিকে, আনারস প্রতীকের স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থীর আহত চার কর্মী হলেন- তিতুদহ ইউনিয়নের নুরুল্লাহপুর গ্রামের আমির হোসেনের ছেলে বিদ্যুৎ মিস্ত্রী তসলিম উদ্দিন (২২), একই গ্রামের আজিজুলের ছেলে মিঠু (২২), ফকির মোহাম্মদের ছেলে আব্দুল লতিফ (৩৫) ও আব্দুল খালেকের ছেলে মাহবুব রহমান রিপন (৫০)।

এর মধ্যে তসলিমের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক। বাকি তিনজন স্থানীয়ভাবে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছেন স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী নিজেই।

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. আহসানুল হক বলেন, ‘তসলিম উদ্দিনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তার পেটে ধারালো কোনো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করা হয়েছে। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ভর্তি করে তাকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। বাকিদের অবস্থা শঙ্কামুক্ত। তারা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন।’

এদিকে, দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটলে ইউনিয়নজুড়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। তিতুদহ ক্যাম্প পুলিশের পাশাপাশি দর্শনা থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। বর্তমানে পুরো ইউনিয়নজুড়ে থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে। 

অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে প্রতিটি এলাকায় পুলিশের টহল জোরদার করা হয়েছে।

দর্শনা থানার ওসি এএইচএম লুৎফুল কবীর বলেন, প্রথমে গ্রীসনগর বাজারে নৌকার কর্মীরা আনারস প্রার্থীর অফিস ভাঙচুর করে এবং তাদের এক কর্মীকে ছুরিকাঘাত করে বলে অভিযোগ পেয়েছি। এই সংবাদ শুনে তিতুদহ বাজারে অবস্থানরত আনারস প্রতীকের কর্মীরা সেখানের নৌকার অফিস ভাংচুর করে এবং তাদের এক কর্মীকে মারধর করে বলে জেনেছি। 

পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে আছে। এলাকায় পুলিশের টহল জোরদার করা হয়েছে। এ ঘটনায় এখনও কেউ লিখিত অভিযোগ করেনি। মৌখিক অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্তদের ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানান ওসি লুৎফুল।

উল্লেখ্য, আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি তিতুদহ ইউনিয়নে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এই ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদে ৪ জন, মেম্বর পদে ৪১ জন এবং সংরক্ষিত মহিলা মেম্বার পদে ১০ জন প্রার্থী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছেন।

এএইচ/