ঢাকা, রবিবার   ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪,   আশ্বিন ৭ ১৪৩১

তাঁতের রাসায়নিক বর্জ্যে হুমকির মুখে জনস্বাস্থ্য (ভিডিও)

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ১১:৪৭ এএম, ১ ফেব্রুয়ারি ২০২২ মঙ্গলবার | আপডেট: ১১:৫০ এএম, ১ ফেব্রুয়ারি ২০২২ মঙ্গলবার

তাঁতের সুতা প্রক্রিয়াকরণে ব্যবহৃত রাসায়নিক বর্জ্যে হুমকির মুখে সিরাজগঞ্জের কয়েকটি উপজেলার পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে উর্বর ফসলি জমি। বিপুলসংখ্যক মানুষ বসবাস করছেন স্বাস্থ্যঝুঁকির মধ্যে।

নানা ধরনের রাসায়নিক দ্রব্য, রঙ ও পানি মিশিয়ে রঙিন করা হচ্ছে তাঁতের সুতা। আর রাসায়নিক মিশ্রিত বিষাক্ত পানি ফেলা হচ্ছে আশপাশের ডোবা-নালা, খাল-বিল ও নদীতে। হুমকিতে পড়ছে পরিবেশ, জীববৈচিত্র ও জনস্বাস্থ্য।

এলাকাবাসী জানান, ‘এর ফলে কয়েকটা বাড়ির টিউবলের পানি দূষিত। রঙের গন্ধে থাকা যায় না, নানা ধরনের অসুখ-বিসুখ দেখা দিচ্ছে। পশু-পাখি এই পানি খেয়ে মরে যাচ্ছে।’

আরেকজন জানান, ‘টিউবলের পানি খাওয়া যায় না, ভাত রান্না করলে হয় হলুদ। আর শরীরে চুলকানি, ঘাও-পাছড়া দেখা দিচ্ছে।’

জেলার চৌহালী, বেলকুচি, এনায়েতপুর, শাহজাদপুরসহ ৬টি উপজেলায় গড়ে উঠেছে অনুমোদনহীন বহু সূতা প্রক্রিয়াকরণ কারখানা। এসব কারখানার বর্জ্যে বিনষ্ট হচ্ছে প্রকৃতি ও জীববৈচিত্র্য। তবুও বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় উদাসীন কারখানাগুলো।   

মিল মালিক জানান, ‘ডিসি অফিস ও ইউএনও কার্যালয়ে এ নিয়ে মিটিং হয়েছে। এক জায়গায় সরকারিভাবে স্থাপনা তৈরি করে সেখানে আমাদের সবগুলো কারখানাকে নিয়ে যাওয়া হবে। আমরা সেই আশ্বাসে সবসময় ওনাদের সাথে যোগাযোগ রেখে চলছি।’

তাঁত সূতা রঙ করায় ব্যবহৃত রাসায়নিক বর্জ্যে চর্মরোগ ও ফুসফুস ক্যান্সারসহ নানা জটিল রোগব্যাধি বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। 

বেলকুচি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার তারেক আজিজ বলেন, ‘লুঙ্গি ফ্যাক্টরি রয়েছে, কাপড়ের ফ্যাক্টরি রয়েছে- এগুলোতে অনেক বেশি কালার বা রঞ্জন ব্যবহার করা হচ্ছে। যেগুলো আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য বিরাট ক্ষতিকর। যেমন পানিবাহিত রোগ, চর্মরোগ এমনকি ফুসফুসে ক্যান্সার পর্যন্ত হতে পারে।’

পরিবেশ সুরক্ষায় ইতিমধ্যে কয়েকটি এলাকায় বর্জ্য শোধনাগার নির্মাণসহ নানামুখী উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।  

বেলকুচি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আনিসুর রহমান বলেন, ‘পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে তাঁত শিল্পের জন্য এখানে স্থাপনা তৈরি করে দিবে। আশা করি, প্ল্যান্ট স্থাপন হলে এই সমস্যার সমাধান হবে।’

তাঁত সমৃদ্ধ সিরাজগঞ্জ জেলায় কমপক্ষে ১৫০টি অনুমোদনহীন সূতা প্রক্রিয়াকরণ কারখানা রয়েছে। 

এএইচ/