মিরসরাইয়ে বিলুপ্তির পথে মৃৎশিল্প
মিরসরাই (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ১২:৫৪ পিএম, ২ ফেব্রুয়ারি ২০২২ বুধবার
বিলুপ্তির পথে মিরসরাই উপজেলার করেরহাটের ছত্তরুয়া পালপাড়ায় ঐতিহ্যবাহী মৃৎশিল্প। এক সময় এ গ্রামসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় শত শত পরিবার প্রত্যক্ষভাবে এ শিল্পের সঙ্গে জড়িত ছিল। প্লাস্টিকের পণ্যের সহজলভ্যতা আর জ্বালানি পণ্যের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় এ পেশা ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন তারা।
পূর্বপুরুষদের পেশাকে বাঁচিয়ে রাখতে বাধা-বিপত্তি সত্বেও এখনো মাটি দিয়ে নিত্য ব্যবহারের বাহারি পণ্য তৈরি করছেন কেউ কেউ। করেরহাটের ছত্তরুয়া পালপাড়ায় ঐতিহ্যবাহী পাল বংশ নিশ্চিহ্ন হয়ে এখন মাত্র ৪০ থেকে ৫০টি পরিবারের বসবাস রয়েছে। এর মধ্যে মাত্র ১০ থেকে ১৫টি পরিবার অনেক কষ্টে তাদের পূর্বপুরুষদের এ পেশাকে ধরে রেখেছে।
এমন অবস্থা বলে দেয় এ অঞ্চলের মৃৎশিল্প বিলুপ্তির পথে।
পালপাড়ার বাসিন্দারা জানান, একসময় আমরা এখানে খোলা, হাড়ি-পাতিল, কলসি, মাটির ব্যাংক, বিভিন্ন পিঠা তৈরির চাঁচ, পুতুল, ছোট ছোট খেলনা ইত্যাদি জিনিসপত্র তৈরি করতাম। সে সময়ে আমাদের মৃৎশিল্পের অনেক সুনাম ও সুখ্যাতি ছিল। কিন্তু এখন শুধুমাত্র দইয়ের পাত্র ও খোলা তৈরি করে কোনো রকমে জীবিকা নির্বাহ করছি।
মৃৎশিল্পী তুলসী রানী পাল বলেন, ‘সব কিছুর দাম যে অনুপাতে বেড়েছে, সে অনুপাতে মাটির তৈরি সামগ্রীর দাম বাড়েনি। প্লাস্টিক ও অ্যালুমিনিয়ামের তৈরি সামগ্রীর দাম বেশি হলেও মানুষ মাটির তৈজসপত্র কিনছে না।’
সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা ও বেসরকারিভাবে সহযোগিতা পেলে হারিয়ে যাওয়া মৃৎশিল্পের অতীত-ঐতিহ্য পুনরায় ফিরিয়ে আনা সম্ভব এমনটি আশা করছেন এখানকার পাল সম্প্রদায়।
এ ব্যাপারে করেরহাট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এনায়েত হোসেন নয়ন বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার কুটির শিল্প উন্নয়ন ও উদ্যোক্তাদের সহযোগিতা করতে নানামুখী প্রদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এরই ধারাবাহিকতায় এবং ব্যক্তিগতভাবে আমি বিভিন্ন সময়ে সহযোগিতা করছি। বিভিন্ন সীমাবদ্ধতার কারণে তাদের ঋণ সহায়তা ও প্রশিক্ষণ দেওয়া সম্ভব হয় না।
তবে, আগামীতে তাদের জন্য ঋণ সহায়তা ও নানা সহযোগিতা করার আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
এএইচ/