হিমেলের দাফন সম্পন্ন, ৫ লাখ টাকা পেল পরিবার
নাটোর প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ০৩:২৪ পিএম, ২ ফেব্রুয়ারি ২০২২ বুধবার
হিমেলের মায়ের হাতে চেক তুলে দিচ্ছেন রাবি ভিসি
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হয়ে নিহত মাহবুব হাসান হিমেলের দাফন সম্পন্ন হয়েছে। হিমেলের মরদেহের গাড়ি বহর নাটোর শহরের কাপুরিয়া পট্ট্রি এলাকায় তার নানার বাড়ি পৌঁছালে সেখানে এক হৃদয়বিদারক পরিবেশের সৃষ্টি হয়। সদাহাস্য ও মিশুক হিমেলের অকাল মৃত্যু তার স্বজন ও এলাকাবাসী মেনে নিতে পারছেন না।
বুধবার দুপুরের পর নাটোরের গাড়ীখানা গোরস্থানে হিমেলকে দাফন করা হয়।
সকাল ১১টার দিকে ১১টি বাস ও বেশ কয়েকটি মাইক্রেবাসে শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাতে ওই বাড়িতে যান রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি, প্রোভিসি, প্রক্টর ও শিক্ষকবৃন্দসহ বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী।
এসময় হিমেলের স্বজনদের আহাজারিতে এলাকার বাতাস ভারী হয়ে ওঠে। আগত সকলেই আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন। সবার চোখ থেকে পানি ঝড়তে দেখা যায়।
নিহতের মা-সহ পরিবারের সদস্যদের সাথে সাক্ষাৎ করে তাঁরা সমবেদনা জানান। এসময় ভিসি প্রফেসর গোলাম সাব্বির সাত্তার নিহতের মায়ের হাতে ৫ লাখ টাকার একটি চেক তুলে দেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন নাটোরের পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) নাদিম সারোয়ার ও পৌর মেয়র উমা চৌধুরী জলিসহ রাবির কয়েকশ’ শিক্ষার্থী।
পারিবারিক সূত্র জানায়, নাটোর শহরের কাপুড়িয়াপট্টি মহল্লার অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা মনিরুল ইসলামের বাড়িতে মাহবুব হাসান হিমেলের জন্ম। শিশুকালে বাবার বাড়ি বগুড়ার শেরপুরে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের লেখাপড়া শেষ করে নানার বাড়ি চলে আসেন হিমেল।
পরে উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত হতে মেধাবী হিমেল ভর্তি হন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগে। ওই বিভাগের ৪র্থ বর্ষে পড়া অবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরেই মঙ্গলবার ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। সেই সাথে সাথে নিভে যায় তার ও তার স্বজনদের স্বপ্ন।
নিহত হিমেলের বৃদ্ধ নানা মনিরুল ইসলাম শোকার্ত কন্ঠে বলেন, ‘হিমেলকে শিশুকাল থেকে নিজে হাতে মানুষ করেছি। হিমেলের মত এমন সন্তান পাওয়া দুস্কর। পরের বিপদে সে নিঃস্বার্থভাবে ঝাঁপিয়ে পড়তো।’
রাবির ভিসি বলেন, ‘হিমেলের পরিবারের অর্থনৈতিক দায়িত্ব বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ গ্রহণ করেছে। তার মা যতদিন জীবিত থাকবেন তার সার্বিক দায়িত্ব আমরা নিচ্ছি। তিনি যেন তার জীবদ্দশায় কোন কষ্ট না পান সেজন্য বড় একটি তহবিল তাকে দেওয়ার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’
তিনি আরও জানান, শিক্ষামন্ত্রী, রাজশাহীর মেয়র, নাটোরের এমপি, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, পৌর মেয়র তার জন্য কিছু করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। অচিরেই তারা প্রতিশ্রুতি পালন করবেন।
ঘটনার জন্য দায়ী ট্রাকচালক ও হেলপারের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। ঘটনার সাথে জড়িতদের অবশ্যই বিচারের আওতায় আনা হবে বলেও জানান তিনি।
এএইচ/