বিএনপি’র লবিস্ট নিয়োগ রাষ্ট্রদ্রোহিতার সামিল: শেখ পরশ
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৫:৪২ পিএম, ২ ফেব্রুয়ারি ২০২২ বুধবার
সম্প্রতি বিএনপি’র অপরাজনীতির নিদর্শন বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হচ্ছে যেটা আমাদের সবাইকে ভীষণভাবে ব্যথিত করেছে। সেটা হলো দেশের টাকা পাচার করে বিদেশে লবিস্ট নিয়োগ করার যে আলামত বেরিয়ে এসেছে সেটা খুবই নিকৃষ্টমানের রাজনীতি।
প্রথমত দেশের টাকা বিদেশে পাচার করা বেআইনী অপরাধ, তারপর সেই টাকা আবার দেশের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা, দেশের মানুষের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা। আমি আশা করেছিলাম তারা রাষ্ট্র-সরকার এবং রাজনৈতিক দলের মধ্যে পার্থক্য বুঝে।
আমি ব্যথিত হলেও বিস্মিত হই নাই কারণ এটা তাদের পুরোনো অভ্যাস। এর আগেও খালেদা জিয়াও বিদেশিদের কাছে দেশের বিরুদ্ধে চিঠি লিখেছিলেন। রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে তাদের অভিযোগ থাকতে পারে কিন্তু দেশের বিরুদ্ধে তাদের এই গোপন ষড়যন্ত্র রাষ্ট্রদ্রোহীতার সামিল।
আমি মনে করি তাদের এদেশের মানুষের কাছে জবাবদিহি করতে হবে। আজ ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২২ইং, বুধবার, ঢাকা মহাখালির আইপিএইচ স্কুল এ্যান্ড কলেজ মাঠে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ, ঢাকা মহানগর উত্তরের উদ্যোগে অসহায় শীতার্ত মানুষের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ এ কথা বলেন।
উক্ত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন-যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মোঃ মাইনুল হোসেন খান নিখিল।
যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ বলেন-ফেব্রুয়ারি মাস, ভাষা আন্দোলনের মাস। এই মাসটি আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় যে, কিভাবে এক ঝাঁক তরুণ-যুবসমাজ মাতৃভাষার জন্য সর্বোচ্চ আত্মহুতি দিয়েছিল ১৯৫২ সালের এই ফেব্রুয়ারি মাসে।
মাতৃভাষা আমাদের পরিচয়, আমাতের সত্ত্বা, আমাদের সংস্কৃতির বাহক। আর ভাষা আন্দোলন আমাদের গৌরবের ইতিহাস। তারুণ্যের দীপ্ত আলো দ্বারা আমাদের এই গৌরবময় ইতিহাস আবর্তিত। সালাম, বরকত, রফিক ও জব্বার আমাদেরকে অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী হতে অনুপ্রাণিত করে।
পৃথিবীর সকল গৌরবময় ইতিহাসের পিছনে তরুণ ও যুবসমাজেরই বিশেষ অবদান। যা কিছু আমরা অর্জন করেছি তার পিছনে যুবসমাজের ভূমিকাই সর্বাধিক, তারাই নেতৃত্ব দিয়েছে। যুবসমাজেরই দায়িত্ব অন্যায়ের প্রতিবাদ করা। কিন্তু অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে হলে সর্বপ্রথম অন্যায় পরিহার করতে হয়। নিজে অন্যায় করে অন্যের অন্যায়ের প্রতিবাদ করার নৈতিক ভিত্তি পাওয়া যায় না। তাই সমাজের অন্যায়গুলো চিহ্নিত করা এবং প্রতিবাদ করা আমাদের কর্তব্য এবং সেই উদ্দেশ্যে যেকোন আত্মত্যাগ করার জন্যও প্রস্তুত থাকতে হয়।
এটাই আমাদের ভাষা আন্দোলনের দীক্ষা। ১৯৭৫ সালের পর বঙ্গবন্ধুর নাম ইতিহাস থেকে একবারে মুছে ফেলে দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল। ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস থেকে বঙ্গবন্ধুর নাম এই কিছু দিন আগেও বাদ দেয়া হয়েছিল সুপরিকল্পিতভাবে। পেরেছে? পারেনাই। বঙ্গবন্ধু আরও শক্তিশালীরূপে আজকে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বঙ্গবন্ধু ১৯৪৮ সালে লে খেটেছেন এই ভাষা আন্দোলনের সংগ্রামে হরতাল করতে গিয়ে। রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের ডাকে ৪৮ সালের ১১ই মার্চ যেই হরতাল হয়েছিল, সেই হরতালে পুলিশ লাঠি চার্জ করে এবং শেখ মুজিব ও রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক, সামসুল আলম একই সাথে গ্রেফতার হন। ভাষা আন্দোলন ছিল বাঙালির যৌক্তিক ও ন্যায্য অধিকার আদায়ের সংগ্রাম।
তিনি সুবিধা বঞ্চিত মানুষের উদ্দেশ্যে বলেন-আপনারা আমাদেরকে আপনাদের যে কোন সহযোগিতায় পাবেন। আমরা আপনাদের যে কোন সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করবো। মনে রাখবেন অন্যান্য দলের মতো শেখ হাসিনা ও যুবলীগ শুধু ভোটের সময় আপনাদের কাছে মিথ্যা আশ্বাস নিয়ে আসে না, আমরা সবসময় আপনাদের সুখে-দুঃখে পাশে থাকি। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা জনগণের কাছে যা ওয়াদা করেন, তা পূরণ করেন, ইনশাল্লাহ্। দেশের অসহায় মানুষ শীতে কষ্ট পাবে এটা মেনে নেওয়া যায় না। সেকারণেই আজকে আমাদের এই ক্ষুদ্র প্রয়াস।
তিনি বিএনপি’র নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন-গতকাল দেখলাম যে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া সুস্থ হয়ে বাসায় ফেরত গিয়েছেন। অত্যন্ত আনন্দের কথা। আমরা তার পরিপূর্ণ সুস্বাস্থ্য কামনা করি। আমাদের বিশ্বাস ছিল যে তিনি সুস্থ হয়ে উঠবেন, কারণ বাংলাদেশের সবচেয়ে ব্যয়বহুল হাসপাতালেই তাঁর চিকিৎসা হচ্ছিল এবং তাঁর অসুস্থতার চিকিৎসা বাংলাদেশেই হওয়া সম্ভব বলে আমাদের বিশ্বাস ছিল। কিন্তু এই ব্যাপারটা নিয়ে করোনার সময় তাঁর যেই অবান্তর ও অযৌক্তিক আন্দোলন-সংগ্রাম করল এবং তাঁর অসুস্থতা নিয়ে যেই অপরাজনীতি করল সেটার নিন্দা করার আমাদের রুচি নাই। রাজনীতি করার অনেক বিষয় আছে, কারো অসুস্থতা নিয়ে রাজনীতি কখনই কাম্য না। গণমানুষের অধিকার নিয়ে রাজনীতি করেন, মৌলিক চাহিদা নিয়ে রাজনীতি করেন তাহলে বুঝবো আপনাদের গ্রহণযোগ্য ইস্যু আছে। কোন ব্যক্তিস্বার্থ নিয়ে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি সৃষ্টি করবেন সেটা কখনোই গ্রহণযোগ্য রাজনীতি না।
এসবি/