প্রযুক্তির যুগে অনন্য মর্যাদা পেয়েছে বাংলা ভাষা (ভিডিও)
মানিক শিকদার
প্রকাশিত : ১০:১৩ এএম, ৩ ফেব্রুয়ারি ২০২২ বৃহস্পতিবার | আপডেট: ১১:১২ এএম, ৩ ফেব্রুয়ারি ২০২২ বৃহস্পতিবার
তথ্য প্রযুক্তির যুগে এসে বাংলা ভাষা পেয়েছে অনন্য এক মর্যাদা। বিশ্বের যেকোনো প্রান্ত থেকে বাংলা ভাষীরা মোবাইল, কম্পিউটার, ল্যাপটপে লিখছেন বাংলায়। অথচ ১৪৫৪ সালে প্রথম মুদ্রনযন্ত্র আবিস্কারের তিনশ’ বছরেরও বেশি সময় পর বাংলায় মুদ্রন শুরু হয়। স্বাধীনতা বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধু মুনীর চৌধুরীর আবিস্কারকে মুল্যায়ণ করে ১৯৭২ সালে অপটিমা মুনীর কীবোর্ড চালুর নির্দেশ দেন।
ব্রত রায় পেশায় প্রকৌশলী আর নেশায় ছড়াকার। এরইমধ্যে ১০টিরও বেশি ছড়ার বই প্রকাশ হয়েছে। কাগজ-কলমের পরিবর্তে কম্পিউটার বা স্মার্টফোনেই বেশি স্বাচ্ছন্দ বোধ করেন লিখতে। প্রকাশ করেন ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যম ও পোর্টালে।
প্রকৌশলী ও ছড়াকার ব্রত রায় বলেন, ‘ফেসবুক বা অন্যান্য সোশ্যাল মাধ্যমগুলোতে একজন লেখক লিখছেন এবং একজন পাঠক সেটা দ্রুত পড়তে পারছেন। সেখানে যে কোন পাঠক কমেন্টও করতে পারছেন।’
তথ্য প্রযুক্তির এই যুগে সবকিছুর মতো বাংলা ভাষার ব্যবহারও হয়েছে সহজ। লেখালেখি, মনের ভাব প্রকাশ এবং জ্ঞানার্জনে সামাজিক মাধ্যম ও তথ্য প্রযুক্তির বিভিন্ন প্লাটফর্ম এখন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য সৌমিত্র শেখর বলেন, ‘আগে যারা লেখালেখি থেকে দূরে ছিল তারাও কিন্তু দু’কলাম চার কলাম লিখছেন। চিঠি লেখা হয়তো উঠে গেছে হয়তো কাগজে। কিন্তু মানুষ এখন প্রতিদিন কম-বেশি লিখছেন।’
বিশ্বের যেকোন প্রান্ত থেকে বাংলা লেখা ও পড়তে পারার অনুপ্রেরণা রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন। সেইসাথে আছে দেশের প্রযুক্তিবিদদের গৌরবের ইতিহাস।
প্রযুক্তিবিদ ও ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মোস্তফা জব্বার বলেন, ‘১৪৫৪ সালে জার্মানিতে মুদ্রণ যন্ত্রের আবিস্কার হয়। আর বাংলাদেশ পর্যন্ত সেই মুদ্রণ যন্ত্রটা আসে ১৭৭৮ খ্রিস্টাব্দে। তখনই আমরা বাংলা হরফ দেখতে পাই। আমাদের পঞ্চনন কর্মকার বাংলা হরফ তৈরি করেন। যন্ত্রের ব্যবহারের সূচনাটা আমাদের শহীদ মুনির চৌধুরীর হাত ধরে। তিনি কীবোর্ডের নকশা তৈরি করেন ১৯৬৯ সালে এবং তারই ভিত্তিতে আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অপটিমা মুনির নামে একটা টাইপ রাইটার প্রবর্তন করেন ১৯৭২ সালে।’
১৯৮০ সালে গ্রাফিক্যাল ইউজার ইন্টারফেস এবং ওয়ার্ড প্রসেসিংয়ের আবির্ভাব হলে বাংলার জন্য বেশ কিছু সংখ্যক কম্পিউটার টাইপিং সিস্টেম তৈরি করা হয়েছিল। টাইপরাইটার থেকে কম্পিউটারের যুগে প্রবেশ করতেই সফটওয়্যার দিয়ে বাংলা লেখায় বিপ্লব আনেন প্রযুক্তিবিদ মোস্তফা জব্বার।
মোস্তফা জব্বার বলেন, ‘আমি প্রথমে মুনির কীবোর্ডের উপর ভিত্তি করে কীবোর্ড তৈরি করেছিলাম। পরবর্তীতে আরও সহজ করে বিজয় কীবোর্ড তৈরি করা। আমি ১৯৮৮ সালের ১৬ ডিসেম্বর যখন বিজয় কীবোর্ড ও সফটওয়্যার প্রকাশ করি তখন আমার সকল সমস্যা সমাধান হয়ে যায়।’
বিজয়, ইউনিজয়, বর্ণ, বৈশাখী, ইউনি গীতাঞ্জলি, অক্ষর বাংলা, অভ্র, ইউনিকোডসহ বেশ কিছু লে-আউটে বাংলাভাষার ব্যবহার হচ্ছে। এগিয়ে যাচ্ছে বাংলার ব্যবহার ও বিকাশ।
এএইচ/