যৌন হয়রানীর প্রতিবাদে কর্মবিরতি চিকিৎসকদের, দুর্ভোগে রোগীরা
কক্সবাজার প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ০৯:১০ এএম, ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২ শুক্রবার | আপডেট: ০৯:১৩ এএম, ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২ শুক্রবার
চিকিৎসকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানি ও অশালীনতার অভিযোগে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কর্মবিরতিতে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে ঘটনা নিরসনে অভিযুক্ত চিকিৎসককে বদলি করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার থেকে কর্মবিরতি চলছে। এ নিয়ে সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েছে চিকিৎসা নিতে আসা হাসপাতালের রোগিরা।
কক্সবাজার ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি ডা. মীর ম.ম. বিল্লাহ তকী জানান, কক্সবাজার সদর হাসপাতালের গাইনী ও প্রসূতি বিভাগের মেডিকেল অফিসার ডা. মাহফুজুর রহমানের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানীসহ অশালীন আচরণের অভিযোগ করেছেন ৬ নারী ইনটার্ন চিকিৎসক। সে অভিযোগের ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো তাদের বেতনভাতা কেটে রাখার সিদ্ধান্ত নেয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
এমন একটি পত্র বুধবার ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কাছে পাঠানো হয়। এরই প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার থেকে কর্মবিরতি শুরু করেন ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদ কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ শাখার সদস্যরা। কোন ওয়ার্ডে ইন্টার্নরা তাদের কাজে যোগ দেননি।
তবে জরুরি বিভাগের কার্যক্রম স্বাভাবিক রয়েছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ২০২১ সালের ২৬ নভেম্বর কক্সবাজার সদর হাসপাতালের গাইনী ও প্রসূতি বিভাগের মেডিকেল অফিসার ডা. মাহফুজুর রহমানের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানীসহ অশালীন আচরণের কারণে অভিযোগ করেন ইন্টার্নরা। কিন্তু অভিযোগকারীদের বিরুদ্ধে প্রহসনমূলকভাবে তাদের এক্সটেনশন ও বেতনভাতা তিন মাসের কেটে রাখার আদেশ জারি করা হয়। এর প্রতিবাদে কর্মবিরতি ঘোষণা করেন ইন্টার্নরা।
কক্সবাজার ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক জানান, অভিযুক্ত চিকিৎসক শুধু নারী ইন্টার্ন চিকিৎসক নয় রোগীর স্বজনদের সঙ্গেও এমন আচরণ করেন। যা লিখিত আকারে দিয়েও কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।
তিনি আরও জানান, ৬ জন ইন্টার্ন চিকিৎসকের বিরুদ্ধে জারিকৃত আদেশ প্রত্যাহার ও অভিযুক্ত গাইনী ও প্রসূতি বিভাগের মেডিকেল অফিসার ডা. মাহফুজুর রহমানের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে এ কর্মবিরতি চলমান থাকবে।
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা: মুমিনুর রহমান জানান, ‘ইন্টার্ন চিকিৎসকরা বেশ কিছুদিন ধরে উচ্ছৃংখল আচরণ করছে। কিছুদিন আগে এক আইনজীবীকে রাস্তায় মারধর করেন ইন্টার্ন ছেলেরা। এনিয়ে ঘটনাটি সমঝোতার মাধ্যমে সমাধানের চেষ্টা করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু, সম্প্রতি হাসপাতালের গাইনী ও প্রসূতি বিভাগের মেডিকেল অফিসার ডা. মাহফুজুর রহমানকে রাতে রুমের দরজা বন্ধ করে পেটানো হয়। এ নিয়ে তিনি আইনগত ব্যবস্থা নিতে গেলে আমি নিষেধ করি এবং একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছি।’
তিনি আরও বরেন, ‘পরে তদন্ত কমিটির রিপোর্ট অনুযায়ী ইন্টার্ন চিকিৎসকদের বেতন বন্ধে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত হয়। এতে আরও ক্ষিপ্ত হয়ে গাইনী ও প্রসূতি বিভাগের মেডিকেল অফিসার ডা. মাহফুজুর রহমানের বিরুদ্ধে নারী ইন্টার্ন চিকিৎসককে যৌন হয়রানি ও অশালীন অভিযোগে লিখিত অভিযোগ করেন।’
বিষয়টি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের জানানো হলে কর্তৃপক্ষ হাসপাতালের গাইনী ও প্রসূতি বিভাগের মেডিকেল অফিসার ডা. মাহফুজুর রহমানকে অন্যত্র বদলি করে। হাসপাতালের চলমান কার্যক্রম স্বাভাবিক রয়েছে বলে জানান তত্ত্বাবধায়ক ডা: মুমিনুর রহমান।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত গাইনী ও প্রসূতি বিভাগের মেডিকেল অফিসার ডা. মাহফুজুর রহমানের কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এএইচ/