২০ বছর গাড়ি চালিয়েও রক্ষা পেলেন না ফাঁসির আসামি
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ১০:৫৯ পিএম, ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২২ শুক্রবার
২০ বছর পালিয়ে থেকেও শেষ রক্ষা হয়নি চট্টগ্রামের লোহাগাড়ার ব্যবসায়ী জানে আলম হত্যা মামলায় মৃত্যদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি জসিম উদ্দিনের (৫০)।
গ্রেপ্তার এড়াতেই ছদ্মবেশ ধারণ করে ২০ বছর ধরে ছিলেন আত্মগোপনে। চট্টগ্রামের বিভিন্ন জায়গায় চালকের ছদ্মবেশে ঘুরে বেড়িয়েছেন। এবার তাকে গ্রেপ্তার হতে হলো র্যাবের হাতে।
শুক্রবার (৪ ফেব্রুয়ারি) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন র্যাব-৭ এর সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) মো. নুরুল আবছার। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে বন্দর থানাধীন নিমতলা এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
র্যাব জানায়, ২০০২ সালের ৩০ মার্চ জানে আলমকে হত্যা করা হয়েছিলো তার শিশু সন্তানের সামনেই। প্রথমে তাকে লাঠিসোটা, দেশীয় ধারালো অস্ত্র ও হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করা হয়েছিল। পরে গুলি করে তার মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়।
এ ঘটনায় ওইদিনই চট্টগ্রামের লোহাগাড়া থানায় জানে আলমের বড় সন্তান তজবিরুল আলম বাদী হয়ে ২১ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন৷ যার মধ্যে জসিম উদ্দিন অন্যতম প্রধান আসামি।
২০০৭ সালের ২৪ জুলাই এ মামলায় আদালত ১২ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং ৮ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। পরে আসামিরা উচ্চ আদালতে আপিল করেন। আপিলে জসিম উদ্দিনসহ মোট ১০ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং দুইজনকে যাবজ্জীবন এবং বাকিদের খালাস দেয়া হয়। জসিম উদ্দিন প্রায় ২০ বছল ধরে পলাতক ছিলেন এই মামলায়।
জানা যায়, জানে আলমকে হত্যার পরপরই জসিম উদ্দিন নগরীর কালুরঘাট এলাকায় বসবাস করে তিন বছর ধরে গাড়ি চালান। লোহাগাড়া নিজের পৈতৃক আবাস ছেড়ে এখানেই বসবাস শুরু করেন। এক পর্যায়ে বোয়ালখালীতে বিয়েও করেন। এরপর নগরীর ডেবারপাড় বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করেন ও গাড়িচালক হিসেবে পেশা অব্যাহত রাখেন। সেখান থেকে চলে এসে ফকিরহাটে বসবাস করেন ৭ বছর। এই সময়েও তিনি গাড়িচালক হিসেবে কাজ করেন। তারপর নগরীর বন্দর এলাকায় বাসা নিয়ে গ্রেপ্তারের আগ পর্যন্ত বসবাস করে আসছিলেন। সবশেষ তিনি ট্রাকের চালক হিসেবে কাজ করতেন।
র্যাব কর্মকর্তা নুরুল আবছার বলেন, “দুই ভাইকে হত্যা করে জসিম উদ্দিন ২০ বছর ধরে পলাতক ছিলেন। তিনি ট্রাকচালকের পেশায় নিজেকে আত্মগোপন করে রেখেছিল। ট্রাক চালকের লাইসেন্স ও অন্যান্য কাগজপত্র তৈরিতে তিনি ভুয়া জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহার করতেন।”
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জসিম ব্যবসায়ী জানে আলম হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি বলে স্বীকার করেছেন। এর আগে একই মামলার আসামী সৈয়দ আহমদকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।
আরকে//