ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

উচ্চশিক্ষায় অবহেলিত মাতৃভাষা (ভিডিও)

প্রণব চক্রবর্তী

প্রকাশিত : ১০:২১ এএম, ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২ শনিবার | আপডেট: ০১:৫২ পিএম, ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২ শনিবার

বাংলা রাষ্ট্রভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হলেও উচ্চশিক্ষায় মাতৃভাষার চর্চা আশানুরূপ নয়। শিক্ষাবিদরা বলছেন, উচ্চশিক্ষায় বাংলা ব্যবহারে সবার আগে তথ্যসূত্র বই প্রণয়নে গুরুত্ব দিতে হবে। সেইসাথে বাংলার চর্চা বাড়াতে মৌলিক বইয়ের পাশাপাশি অনেক বই অনুবাদ করার তাগিদ বিশিষ্টজনদের।

বায়ান্নোর ভাষাভিত্তিক জাতীয় চেতনাই ছিল একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের প্রেরণা। যে মাতৃভাষা রক্ষায় এত ত্যাগ-তিতীক্ষা, উচ্চশিক্ষার মাধ্যম হিসেবে সেই ভাষা অনেকটাই অবহেলিত।

দেশে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত বেশির ভাগ শিক্ষার্থীই পড়ালেখা করেন বাংলা মাধ্যমে। অথচ উচ্চশিক্ষায় প্রধান মাধ্যম ইংরেজী। দেশে  স্বায়ত্তশাসিত, সরকারি ও বেসরকারি মিলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা দেড় শতাধিক। সাত-আটটিতে বাংলা ভাষা ও সাহিত্য বিষয়ে স্নাতক চালু আছে। পুরো আধিপত্য প্রায় ইংরেজির।   

শিক্ষাবিদ সৈয়দ মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, ‘ক্রমাগত আমাদের ভাষায় শুধু ইংরেজি ভাষা নয় অনেকটা রাস্তার ভাষা এমনকি বিকৃত শব্দ ঢুকে পড়ছে। ভাষার শুব্ধতা না থাকলে উচ্চতর পর্যায়ে পাঠ্যপুস্তক সেইভাবে পড়তে পারবো না বা পাঠ্যপুস্তক প্রণীত হতে পারবে না।’

বুয়েটের কম্পিউটার সায়েন্স ও ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষক ড. মোহাম্মদ কায়কোবাদ বলেন, ‘বিশ্বের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে যদি চলতে চাই তাহলে ইংরেজি শেখার বিকল্প নাই। তবে আমাদের ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান চর্চা করতে পারে তাহলে আত্মস্থ করতে সহজ হবে।’

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে সামান্য হলেও বাংলা তথ্যসূত্র বই পাওয়া যায়। তবে মেডিকেল কলেজ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পুরোপুরিই ইংরেজি তথ্যসূত্র বইয়ের ওপর নির্ভর করতে হয়। 

বাংলায় ভালোমানের বই পাওয়াও দুষ্কর। অথচ জার্মান, ফরাসি, জাপানি, চীনা সবাই মাতৃভাষার ব্যবহার করে সফল হয়েছে।

বিশিষ্টজনদের তাগিদ, উচ্চশিক্ষায় বাংলা চর্চা বাড়াতে প্রয়োজনীয় বইয়ের পাশাপাশি বেশি করে বই অনুবাদ করার।

ড. মোহাম্মদ কায়কোবাদ বলেন, ‘খুবই গুরুত্বপূর্ণ যাতে বিদেশী গুরুত্বপূর্ণ শব্দগুলোকে বাংলা ভাষায় নিয়ে ভাষাটাকে আমরা সমৃদ্ধ করি। আমাদের জন্য ততোই ভালো হবে।’

সৈয়দ মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, ‘বিভিন্ন বিষয়ভিত্তিক জ্ঞানধারী যারা আছেন তারা অনুবাদ কর্মে যুক্ত হবেন। কিন্তু তাদের একটা অভিন্ন সক্ষমতা থাকতে হবে। বাংলা এবং ইংরেজি ভাষার চমৎকার অধিকার, এই অধিকার সর্বোচ্চ পর্যায়ে না হলে অনুবাদ সুষ্ঠ হবে না।’

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, উচ্চশিক্ষায় বাংলার প্রচলনে পরিকল্পনা এবং কার্যকরী প্রকল্প গ্রহণ জরুরি। 

এএইচ/