মৃত বাবার ধার মেটাতে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন!
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৯:১১ এএম, ৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২ রবিবার
মৃত বাবার ধার মেটাতে গিয়ে আজব ঝামেলায় পড়েছেন ভারতের কর্ণাটকের বাসিন্দা নাজার। বাবার শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী ধার মেটানোর কথা লুইস নামের এক ব্যক্তির। কিন্তু তাকে না চেনার কারণে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে বিজ্ঞাপন দেয় নাজার। এরপরই শুরু হয় ঝামেলা। লুইস নামের একাধিক ব্যক্তি নিজেকে পাওনাদার বলে দাবি করে নাজারের কাছে।
১৯৮০ সালে দুবাইয়ে থাকাকালীন নাজারের বাবা আবদুল্লা প্রায় ২২ হাজার টাকা ধার নেন লুইস নামের এক ব্যক্তির থেকে। আবদুল্লা বিদেশে গিয়ে বিপদে পড়েছিলেন। কাজ ছিল না, এই অবস্থায় একপ্রকার বাধ্য হয়েই লুইসের থেকে ওই টাকা ধার করেন তিনি।
পরে সুদিন ফেরে আবদুল্লার। এদিকে ততদিনে লুইসের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিলো তার। গোটা জীবনে মনে মনে সেই দেনার ভার বইতে হয়েছে আবদুল্লাকে। অবশেষে মৃত্যুর দুই বছর আগে একজীবনে বয়ে বেড়ানো ঋণের কথা পরিবারকে জানান তিনি। এর মধ্যে গত ২৩ জানুয়ারি মৃত্যু হয়েছে আবদুল্লার। শেষ ইচ্ছায় লুইসের দেনা শোধ করার কথা বলেন তিনি। এরপরেই বাবার আক্ষেপ দূর করতে মাঠে নামে পরিবার। শুরু হয় পরোপকারী লুইসের খোঁজ।
যদিও লুইসের সম্পর্কে কিছুই জানা ছিল না নাজার ও আবদুল্লার অন্য ছেলেদের। আবদুল্লা শুধু বলে গিয়েছিলেন, লুইসের বাড়ি কোল্লামে, তার ভাইয়ের নাম বেবি। এটুকু তথ্য নিয়েই প্রথমে হোয়াটসঅ্যাপ মাধ্যমে বাবার পাওনাদারের খোঁজ শুরু করেন নাজার। এরপর বুদ্ধি করে খবরের কাগজে বিজ্ঞাপন দেন তিনি। গত ৩১ জানুয়ারি একটি মলয়ালম সংবাদপত্রে টাকা পরিশোধের কথা উল্লেখ করে সেই বিজ্ঞাপন প্রকাশিত হয়। এরপরেই আজব ঝামেলার শুরু।
একাধিক ব্যক্তি নিজেদের লুইস বলে দাবি করা শুরু করেন। বিজ্ঞাপনে নিজের ফোন নম্বর দিয়েছিলেন নাজার। সেই ফোন নাকি সারাক্ষণ বেজেই চলেছে। দু’জন জানান, তাদের বাবাই লুইস। তার মৃত্যু হয়েছে। একজন ফোন করে বলেন, তার বাবা লুইস তবে তাদের টাকার প্রয়োজন নেই। এক ব্যক্তি নিজেকে লুইসের সন্তান বলে দাবি করে টাকার দাবি জানিয়েছেন । বর্তমানে তাদের আর্থিক অবস্থা নাকি ভালো নেই।
এর মধ্যে এক জনের খোঁজ পেয়েছেন নাজার। যিনি তার বাবা আবদুল্লা ও লুইস উভয়কেই চিনতেন। তার নাম রশিদ। রশিদের মাধ্যমেই সমস্যার সমাধান করতে চাইছেন নাজার।
এই অবস্থায় দাবিদারদের লুইসের ছবি নিয়ে দেখা করতে বলেছেন নাজ়ার। ইতোমধ্যে পাঁচ জন ছবি-সহ যোগাযোগ করেছেন। রশিদ অবশ্য জানিয়েছেন, এরা কেউই সেই লুইস নন, যাকে তারা খুঁজছেন।
যদিও হাল ছাড়তে নারাজ নাজার। তিনি বলেন, “বাবাকে সেই সময় যে টাকা দিয়েছিলেন লুইস। তার থেকে বেশি টাকা দিতে রাজি আছি আমরা। কিন্তু বাবার দেনা শোধ করবই।”
সূত্র: সংবাদ প্রতিদিন
এমএম/