ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৭ ১৪৩১

‘প্রতিবছর দেশে ১ থেকে দেড় লাখ মানুষ ক্যান্সারে মারা যায়’

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৮:১০ পিএম, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২২ বৃহস্পতিবার

ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

ক্যান্সার রোগের ভয়াবহতার কথা তুলে ধরে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, দেশে বর্তমানে বছরে ৬৭ ভাগ মানুষ অসংক্রামক রোগে মারা যায়। দেশে এখন প্রায় ২০ লাখ ক্যান্সার রোগী আছে। প্রতিবছর দেশে ১ থেকে দেড় লাখ মানুষ ক্যান্সারে মারা যাচ্ছে। 

তিনি বলেন, সে তুলনায় দৈনিক ক্যান্সারে ২০০ থেকে ৪০০ মানুষ মারা যাচ্ছে যা খুবই উদ্বেগজনক। সময় মতো ক্যান্সার রোগটি ধরা গেলে রোগটি নিরাময় করা যায়। কিন্তু দেরি করে ধরা পড়লে রোগটি থেকে রোগীকে বাঁচানো অনেক কঠিন হয়ে যায়।

বৃহস্পতিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে ‘বিশ্ব ক্যান্সার দিবস-২০২২’ উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ক্যান্সার হবার আগেই ক্যান্সার যাতে না হয় সে ব্যাপারে সচেতন থাকতে হবে। বায়ু দুষণ, শব্দ দুষণ, খাদ্যে নানা রং মেশানো বা ক্ষতিকারক ওষুধ মেশানোর মাধ্যমে দিন দিন ক্যান্সার অনেক বেড়ে যাচ্ছে। খাদ্য চাষে কীটনাশকের ব্যবহার, তামাকের কারণেও ক্যান্সার বেড়ে যাচ্ছে। বিষয়গুলি নিয়ে কাজ করা প্রয়োজন। মানুষকেও জীবন মানের গুরুত্ব বুঝতে হবে এবং সচেতনতা অবলম্বন করতে হবে।

চিকিৎসাক্ষেত্রে ঢাকার উপর অতিরিক্ত চাপ কমাতে স্বাস্থ্যসেবাকে ডিসেন্ট্রালাইজড (বিকেন্দ্রীকরণ) করা হচ্ছে জানিয়ে জাহিদ মালেক বলেন, ‘ডিসেন্ট্রালাইজড-এর অর্থ হলো, ঢাকার হাসপাতালগুলিতে যে মানের চিকিৎসাসেবা পাওয়া যায়, সেই একই মানের চিকিৎসাসেবা যাতে দেশের ৮টি বিভাগেই পাওয়া যায় সেই লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে এবং সে অনুযায়ী কাজ শুরু হয়েছে।’

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ইতোমধ্যেই দেশের ৮টি বিভাগে উন্নত ও আধুনিক মানের ১৫ তলা বিশিষ্ট ক্যান্সার, কিডনী, লিভারের মত অতি ক্ষতিকর রোগগুলির চিকিৎসা কেন্দ্র হিসেবে ৮টি হাসপাতাল নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করা হয়েছে। এখানে প্রায় ১,৪০০ বেড বৃদ্ধি হবে; কেবল ক্যান্সার চিকিৎসার জন্যই।’

তিনি বলেন, ‘দেশের আনাচে-কানাচে প্রায় ১৮ হাজারের মত কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মাণ করে সেখানে প্রায় ৩২ রকমের ওষুধ বিনামূল্যে দেয়া হচ্ছে। এতে শহরের পাশাপাশি গ্রামের মানুষজন উপকৃত হচ্ছে। এভাবে দেশের প্রতিটি সরকারি হাসপাতালের জন্য উন্নত মানের যন্ত্রপাতি কিনে, প্রয়োজনীয় লোকবল নিয়োগ দিয়ে, দেশের মফস্বল হাসপাতালে ভালো চিকিৎসক পদায়ন করে সর্বোত্র ঢাকার মত সমপর্যায়ের চিকিৎসা সেবা পৌঁছে দেয়ার উদ্যোগ হাতে নেয়া হয়েছে।’

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, স্বাস্থ্যসেবায় বর্তমান সরকার ব্যাপক কাজ করছে বলেই মহামারি করোনায় বিশ্বের অনেক দেশে আগেই দেশের প্রায় ১০ কোটি মানুষকে অর্থাৎ ৭৫ শতাংশ মানুষকে টিকা দেয়ার কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। এই উদ্যোগের কারণেই করোনার ৩য় ঢেউ আমাদের কাবু করতে পারেনি। করোনায় এবার রোগী কম, মৃত্যু সংখ্যাও কম হচ্ছে। বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের এই সফলতা ধরে রাখতে সকলকে নিজ নিজ কাজে তৎপর ও নিষ্ঠাবান থাকতে হবে।

জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. স্বপন কুমার বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবীর, শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. ফারুক আহমেদ, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল) ডা. মো. ফরিদ হোসেন মিয়া, জাতীয় বক্ষব্যাধি ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. মু. সাইদুল ইসলাম প্রমুখ।

এরআগে সকাল ১১ টায় বিশ্ব ক্যান্সার দিবসের আলোচনা সভায় আনুষ্ঠানিক সূচনা করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। এরপর তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল উন্মোচন  করেন। ক্যান্সার রোগীদের চিকিৎসা সেবা নিশ্চিতকরণ ও সেবার মান আধুনিকিকরণের লক্ষ্যে একটি আরটি পিসিআর ল্যাব উদ্বোধন করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

এসি