কর্ণাটকের হিজাব বিতর্ক গড়াল সুপ্রিম কোর্টে
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ১২:০৯ পিএম, ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২২ শুক্রবার | আপডেট: ১২:১২ পিএম, ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২২ শুক্রবার
হিজাব বিতর্ক চরমে পৌঁছানোর পর আদালতে গড়ালে আপাতত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্রীদের কোনওরকম ধর্মীয় পোশাক পরা থেকে বিরত থাকতে বলেছে কর্ণাটক হাই কোর্ট। তবে সেই নির্দেশকে এবার চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে দায়ের হল মামলা।
যে আবেদনে দাবি করা হয়েছে, মুসলিম নারীদের হিজাব পরতে দেয়ার অনুমতি প্রদান না করে মৌলিক অধিকার খর্ব করা হয়েছে। সেইসঙ্গে হাইকোর্টে মামলার শুনানির ওপর স্থগিতাদেশের আর্জি জানিয়েছেন ওই কলেজ ছাত্রী।
বৃহস্পতিবার হিজাব মামলার শুনানিতে কর্নাটক হাই কোর্টের তিন সদস্যের বেঞ্চ জানায়, দ্রুত হিজাব বিতর্কের সমাধান করতে চায় হাই কোর্ট। সেইসময় পর্যন্ত শান্তি এবং সম্প্রীতি বজায় রাখতে হবে।
কর্ণাটকের প্রধান বিচারপতি বলেন, 'বিষয়টির সমাধান না হওয়া পর্যন্ত আপনাদের এরকম সব ধর্মীয় জিনিস পরার ওপর জেদ ধরে থাকা উচিত নয়।' সেইসঙ্গে তিনি বলেন, 'আমরা রায় দেব। স্কুল ও কলেজ শুরু হতে দিন। কিন্তু বিষয়টির সমাধান না হওয়া পর্যন্ত ধর্মীয় পোশাক পরার ক্ষেত্রে কোনও ছাত্রীর জেদ ধরে থাকা উচিত নয়।'
তবে হাই কোর্টের এই রায়কে চ্যালেঞ্জ করেই সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের করেছেন এক ছাত্রী। তিনি দাবি করেছেন, হিজাব পরা থেকে বিরত থাকতে বলে মুসলিম মেয়েদের মৌলিক অধিকার খর্ব করা হয়েছে। সেইসঙ্গে হাই কোর্টের রায় এবং তিন সদস্যের বেঞ্চের শুনানির ওপরও স্থগিতাদেশের আর্জি জানিয়েছেন ওই কলেজ ছাত্রী।
উল্লেখ্য, গত বছরের ডিসেম্বরে হিজাব পরিহিত কিছু মুসলিম মেয়েকে কর্ণাটকের উদুপির একটি সরকারি কলেজে প্রবেশে বাধা দেয়া হয়। পরবর্তীতে একাধিক কলেজে একই রকম নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। গত কয়েকদিনে সেই পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে।
গত মঙ্গলবার সকালেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে উদুপির মহাত্মা গান্ধী মেমোরিয়াল কলেজ চত্বর। গেরুয়া স্কার্ফ ও পাগড়ি পরে কলেজের বাইরে জড়ো হন একদল ছাত্র। ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান দিতে থাকেন তাঁরা। পালটা ‘আল্লাহু আকবার’ স্লোগান দেন হিজাব পরিহিত ছাত্রীরা। হিজাব পরা ছাত্রীদের দাবি, অধ্যক্ষ ক্লাসে ঢুকতে দেননি।
একাধিক কলেজে এরকম পরিস্থিতি তৈরি হয়। বিক্ষোভ, পালটা বিক্ষোভ হয়। তারইমধ্যে একগুচ্ছ আবেদন দায়ের হয় হাই কোর্টে। বুধবার হাই কোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ বলেছিল যে, ‘যে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নগুলো নিয়ে বিতর্ক হচ্ছে, সেগুলোর ব্যাপকতার পরিপ্রেক্ষিতে হাই কোর্ট মনে করছে যে, বিষয়টি নিয়ে বৃহত্তর কোনও বেঞ্চ গঠন করা হবে কিনা, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন প্রধান বিচারপতি।’
হাই কোর্ট জানিয়েছিল, অন্তর্বর্তীকালীন আবেদনও বৃহত্তর বেঞ্চের সামনে করা উচিত। যে বেঞ্চ গঠন করতে পারেন কেবল প্রধান বিচারপতি। কিন্তু তাঁর আগেই এবার মামলা গিয়ে পৌঁছল সুপ্রিম কোর্টে। দেখা যাক, এবার কি রায় দেন দেশটির সুপ্রিম কোর্ট! সূত্র- হিন্দুস্তান টাইমস।
এনএস//