ঢাকা, সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১০ ১৪৩১

ঠাকুরগাঁওয়ে মিলল বিরল প্রজাতির ‘রেড কোরাল কুকরি’ সাপ

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ১১:৪৫ পিএম, ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২২ শুক্রবার

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা ভুল্লী বড় বালিয়া থেকে প্রথম বারের মত জীবিত উদ্ধার হয়েছে বিরল প্রজাতির ‘রেড কোরাল কুকরি’ সাপ।

বৃহস্পতিবার রাতে সদর উপজেলার বড় বালিয়া এলাকার জয়নাল নামে এক ব্যক্তি রাস্তা থেকে উদ্ধার করেন সাপটি। শুক্রবার জেলা বন্য প্রাণী সংরক্ষক ও উদ্ধারকারী সহিদুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

সহিদুল ইসলাম বলেন, ‘স্থানীয়রা সাপটিকে দেখতে পেয়ে না মেরে আটক করেন এবং আমাকে খবর দিলে শুক্রবার সেখানে গিয়ে সাপটিকে উদ্ধার করেছি। এরই মধ্যে এই সাপটি বাংলাদেশে রেকর্ডসহ আর্ন্তজাাতিক গবেষণা পত্রে প্রকাশ পেয়েছে বলে মানুষ এ সাপটির বিষয়ে এখন মোটামুটি ভাবে সচেতন হয়েছেন। সাপ দেখলে না মেরে উদ্ধারকারীকে ফোন দিচ্ছেন তারা।’

ঠাকুরগাঁও সদর উপজেরা নির্বাহী অফিসার আবু তাহের মোহাম্মদ সামসুজ্জামান বলেন, সাপ উদ্ধারের খবরটি শুনেছি। বিরল প্রজাতির সাপটি সংরক্ষণের জন্য বন্য ও প্রাণী অধিদপ্তরকে দ্রুত বার্তা পাঠানো হয়েছে।

উল্লেখ্য এর আগে, পুরো পৃথিবীতে মাত্র ২০-২২ বার এ সাপের দেখা মিলেছে বলে জানা গেছে। গত ১২ মাসে দেশে পাঁচ বার দেখা মিলেছে এ সাপের। পাঁচ বারেই দেখা মিলেছে উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে। গত বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি একই এলাকা থেকে আহত অবস্থায় পঞ্চগড় তথা বাংলাদেশে প্রথম বারের মত উদ্ধার হয় এই সাপ। 

পরে ২৬ ফেব্রুয়ারি সদর উপজেলার চাকলাহাট এলাকা থেকে দ্বিতীয় বারের মত মৃত অবস্থায়, ২০ এপ্রিল টুনিরহাট এলাকা থেকে তৃতীয় বারের মত জীবিত এবং ১০ মে একই এলাকা থেকে চতুর্থ বারের মত মৃত অবস্থায় উদ্ধার হয়।

আরো উল্লেখ্য, রেড কোরাল কুকরি বিরল প্রজাতির একটি সাপ। উজ্জ্বল কমলা ও প্রবাল লাল বর্ণের এই প্রজাতিটির বৈজ্ঞানিক নাম ওলিগোডন খেরেনসিস। ১৯৩৬ সালে উত্তর প্রদেশের খেরি বিভাগের উত্তরাঞ্চল থেকে এই সাপ আবিষ্কৃত হয়। উজ্জ্বল কমলা ও লাল প্রবাল বর্ণের এই সাপটি অত্যন্ত মোহনীয়। লাল প্রবাল সাপটি মৃদু বিষধারী ও অত্যন্ত নিরীহ। 

এই সাপটি পৃথিবীর দুর্লভ সাপদের একটি। পৃথিবীতে হিমালয়ের পাদদেশের দক্ষিণে ৫৫ আর পূর্ব-পশ্চিমে ৭০ কিলোমিটার এলাকায় এটি দেখা যায়। সাপটি নিশাচর এবং বেশির ভাগ সময় মাটির নিচেই থাকে। সম্ভবত মাটির নিচে কেঁচো ও লার্ভা পিপড়ার ডিম ও উইপোকার ডিম খেয়ে জীবন ধারণ করে। নরম মাটি পেলে মাটি খুঁড়ে ভেতরে চলে যাওয়ার প্রবণতা রয়েছে। মাটির ভেতরে থাকার জন্য রোসট্রাল স্কেল ব্যবহার করে সাপটি। রোসট্রাল স্কেল হলো সাপের মুখের সম্মুখ ভাগে অবস্থিত অঙ্গবিশেষ যার সাহায্যে মাটি খনন করে। এ সাপটি পূর্ণ বিষধর হওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে।

এসি