তারপরও তামিমই সেরা
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ১১:১২ এএম, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২২ শনিবার
তামিম ইকবাল খান
আগামী ছয় মাসের জন্য টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট নিয়ে ভাবতে চান না তামিম। তবে তাঁকে নিয়ে অন্যদের ভাবনাটা কিন্তু থেমে নেই। যে ফরম্যাটটা নিয়ে তিনি ভাবতেই চান না, সেই টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটেই ভাবনার বাইরে রাখা যাচ্ছে না তামিমকে। এবারের বিপিএলে শুরু থেকেই যেভাবে ছুটে চলেছেন, তামিমের ব্যাট যেন আর থামছেই না। রান পাহাড়ের চূড়ায় উঠেও তামিমের ক্ষুধা যেন মিটছেই না।
বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসের সফলতম ব্যাটার তিনি। এই স্বীকৃতি দেয়ার জন্য ক্রিকেট বিশেষজ্ঞ হওয়ার দরকার নেই। এক যুগেরও বেশি সময় ধরে তিন ফরম্যাটেই বাংলাদেশের ওপেনিংয়ে একমাত্র ভরসা তামিম ইকবাল। পুরো সময়টা জুড়ে তাঁর একজন পার্টনার খোঁজার চেষ্টা চালিয়ে গেছে ক্রিকেট বোর্ড। তবে এখনও সেই যোগ্য ব্যাটারটির সন্ধানই মেলেনি।
টি-টোয়েন্টিতে খেলতে না চাওয়ায় এখনও টেস্ট ও ওয়ানডে ক্রিকেটে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ভরসার জায়গা এই ওপেনার। গত দুই বছরে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের প্রেক্ষাপটটা বদলে গেলেও তামিম রান করেছেন এই সময়েও। তবে তাঁর ব্যাটিং করার ধরণ নিয়ে সমালোচনাও কম হয়নি। টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটের সঙ্গে তামিম আর নিজেকে মানিয়ে নিতে পারছেন না- এমন অভিযোগও উঠে আসে।
২০২১ সালে বাংলাদেশের হয়ে কোনও টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেননি তামিম। তবে এর আগের তিন বছরে তামিমের গড় স্ট্রাইকরেট মাত্র ১২০.৮৩। সমস্যাটা ছিল এখানেই। পাওয়ার প্লের সুবিধাটা কাজে লাগাতে পারছিলেন না এই ওপেনার। ফলে ম্যাচের শুরুতেই চাপে পড়ে যেত বাংলাদেশ দল।
এই যেমন, এবারের বিপিএলের প্রথম দুই ম্যাচেও হাফ সেঞ্চুরি করেন তামিম। তবুও দুই ম্যাচেই হেরেছে মিনিস্টার ঢাকা। কারণ একটাই, রান পাওয়া তামিমের ম্যাড়মেড়ে স্ট্রাইকরেট! পরের ম্যাচগুলোতে অবশ্য স্ট্রাইকরেট নিয়ে আর প্রশ্ন তোলার জায়গা রাখেননি তামিম। এমনকি সিলেটের বিপক্ষে ঝড়ো এক সেঞ্চুরিও করেছেন। এরপর কুমিল্লা ও চট্টগ্রামের বিপক্ষে খেলেন যথাক্রমে ৪৬ ও ৭৩ রানের ইনিংস।
আরএর মাধ্যমেই বিপিএলের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক বনে গেছেন টাইগার সেরা এই ওপেনার। তবুও থামতে নারাজ তামিম। শুক্রবারও ফরচুন বরিশালের বিপক্ষে ব্যাট হাতে রুদ্রমূর্তি ধারণ করেন তামিম। স্ট্রাইকরেটের সেই সমালোচনাও যেন আর গাঁয়ে মাখতে চাচ্ছেন না এই ব্যাটসম্যান। বিপিএলের ৯ ম্যাচে এখন পর্যন্ত ব্যাটিং করেছেন ১৩২.৫৭ স্ট্রাইকরেটে।
শুক্রবার বরিশালের বিপক্ষেও তাঁর ব্যাট থেকে এল ৫০ বলে ৬৬ রানের ইনিংস। এদিন তামিম ব্যাটিং করেছেন ১৩২ স্ট্রাইকরেটে। ৯ চার ও ১ ছয় দিয়ে সাজিয়েছেন ইনিংসটি। যদিও এই ইনিংসের পরেও বরিশালের বিপক্ষে জয় পায়নি তাঁর দল। ১০ ম্যাচে চার জয় আর পাঁচ পরাজয়ে ৯ পয়েন্ট নিয়ে ঢাকা তাকিয়ে আছে অন্যদের দিকেই।
ওদিকে এই ম্যাচের আগেই বিপিএলের রান সংগ্রাহকদের তালিকায় সবার উপরে ছিলেন তামিম ইকবাল। তবে এদিন ব্যবধানটা আরও বাড়িয়ে নিলেন। ৯ ম্যাচে ৫৮.১৪ গড়ে তাঁর ব্যাট থেকে এল ৪০৭ রান। এই বিপিএলে একমাত্র তিনিই ৪০০ রান করলেন। এমনকি তালিকার দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা কলিন ইনগ্রাম করেছেন তামিমের চেয়ে ৯৮ রান কম। ১৩৮.৫৬ স্ট্রাইকরেটে ও ৪৪.১৪ গড়ে এই প্রোটিয়ার ব্যাট থেকে এসেছে ৩০৯ রান।
সে যাইহোক, সবমিলিয়ে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে তামিমে ব্যাটিং নিয়ে সমালোচনা আছে। তামিম নিজেও সমস্যাটা বোঝেন। সেজন্যই হয়তো নিজেকে এই ফরম্যাট থেকে সরিয়ে রেখেছেন। তবে নিজেকে আলোচনার বাইরেও রাখতে দিচ্ছেন না তামিম। এত সমালোচনার মাঝে এখনও যে তিনিই বাংলাদেশের একমাত্র ওপেনার, যার ব্যাটে রানটা আসছে নিয়মিতই।
এনএস//