৫ লাখ স্মার্ট কার্ড পাচ্ছেন যশোরের কৃষকরা
বেনাপোল প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ১১:৩৬ পিএম, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২২ শনিবার
যশোরের প্রায় পাঁচ লাখ কৃষক স্মার্ট কার্ড পাচ্ছেন। ‘স্মার্ট কৃষি কার্ড ও ডিজিটাল কৃষি পাইলট’ প্রকল্পের আওতায় তাদেরকে এই কৃষি কার্ড দেয়া হবে।
সারাদেশে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়সহ ১৪টি কৃষি অঞ্চলের নয়টি জেলাকে এই প্রকল্পের আওতায় আনা হয়েছে।
জেলাগুলো হচ্ছে, যশোর, গোপালগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, টাঙ্গাইল, বরিশাল, দিনাজপুর, রাজশাহী, বান্দরবান ও ময়মনসিংহ। এসব জেলার সকল উপজেলার কৃষকরা পাবেন এই কৃষি কার্ড। পরবর্তীতে অন্য অঞ্চলের কৃষকদের এ সেবার আওতায় আনা হবে।
বিভিন্ন ধরনের প্রণোদনা নেয়ার সময় কৃষককে এই স্মার্ট কার্ড দেখাতে হবে। পাশাপাশি নানা ধরনের সরকারি সুবিধা নিতে কৃষকদের প্রয়োজন হবে এই কার্ড।
যশোর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয় থেকে পাওয়া তথ্যানুযায়ী, জেলায় চার লাখ ৯৪ হাজার পাঁচশ’ ৭৬ জন কার্ডধারী কৃষক-কৃষাণী রয়েছেন। এরমধ্যে কৃষক চার লাখ ৬৯ হাজার পাঁচশ’ ২৭ ও কৃষাণী ২৫ হাজার ৪৯ জন। সদর উপজেলায় ৭৬ হাজার ৪১ জন কৃষক ও দু’ হাজার আটশ’ ৩৯ জন কৃষাণী রয়েছেন। এছাড়া, শার্শায় রয়েছেন ৬০ হাজার ৬০ জন কৃষক ও দু’ হাজার ছয়শ’ ৮০ জন কৃষাণী, ঝিকরগাছায় ৫২ হাজার নয়শ’ ৪২ কৃষক ও সাত হাজার একশ’ ৬০ কৃষাণী, চৌগাছায় ৪৩ হাজার নয়শ’ ৮১ কৃষক ও তিন হাজার পাঁচশ ৭৯ জন কৃষাণী, অভয়নগরে ৩২ হাজার ছয়শ’ ২০ কৃষক ও এক হাজার নয়শ’ ৬৯ জন কৃষাণী, বাঘারপাড়ায় ৫১ হাজার তিনশ’ ৩০ কৃষক ও আটশ’ ৫০ জন কৃষাণী, মণিরামপুরে কৃষক ৯৭ হাজার আটশ’ আট ও কৃষাণী দু’ হাজার সাতশ’ ৯২ জন এবং কেশবপুরে ৫৪ হাজার সাতশ’ ৪৫ কৃষক ও তিন হাজার একশ’ ৮০ জন কৃষাণী।
এসব কৃষক-কৃষাণীকে কাগুজে কৃষি কার্ড দেয়া হয়েছে। কিন্তু ওই কার্ড নিয়ে নানা ঝামেলায় পড়েন কৃষক। বেশিরভাগ কৃষক-কৃষাণী কাগজের কার্ড নষ্ট করে ফেলেন। এ কারণে নানা ধরনের সহায়তা নিতে গিয়ে তাদের বিপাকে পড়তে হয়। একইভাবে বিপাকে পড়তে হয় কৃষি কর্মকর্তাদের। তারা কার্ড ছাড়া অনুদান দিতে পারেন না। কারণ অনুদানের রেকর্ড রাখতে এই কৃষি কার্ড ব্যবহার করতে হয়।
কৃষি কার্ড নষ্ট হওয়ার হাত থেকে রক্ষা করতে করা হচ্ছে স্মার্ট কার্ড। এই কার্ডে কৃষকের ডিজিটাল প্রোফাইল তৈরি করা হবে। কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, স্মার্ট কার্ডে ডিজিটাল কৃষি প্রোফাইল তৈরি, স্মার্ট কৃষি কার্ড বিতরণ, ডিজিটাল কৃষি তথ্য বিশ্লেষণ ও তথ্যের সঠিক ব্যবস্থাপনা সহজ হবে। এই কার্ডের মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্যের সাহায্যে কৃষক কৃষি উৎপাদনের সিদ্ধান্ত ও পরিকল্পনা সহজভাবে গ্রহণ করতে হবে।
যশোরে বর্তমানে কৃষি কার্ডের সাহায্যে ব্যাংক অ্যাকাউন্টের সংখ্যা তিন লাখ ৬০ হাজার তিনশ’ ৮০। এরমধ্যে কৃষক রয়েছেন তিন লাখ ৪৬ হাজার একশ’ ২২ ও কৃষাণীর অ্যাকাউন্ট রয়েছে ১৪ হাজার দুশ’ ৫৮ টি। এসব অ্যাকাউন্টের মধ্যে সচল রয়েছে তিন লাখ ৫৫ হাজার ছয়শ’ ৯৯ টি। তিন লাখ ৪২ হাজার চারশ’ ৯৩ জন কৃষক ও ১৩ হাজার দুশ’ ছয়জন কৃষাণী তাদের অ্যাকাউন্ট সচল রেখেছেন।
যশোর সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শেখ সাজ্জাদ হোসেন বলেন, কৃষকদের স্মার্ট কার্ড করা সরকারের একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। কারণ অধিকাংশ কৃষক গ্রামের। তারা সেইভাবে যত্ন করে কাগজের কার্ড রাখতে পারেন না। ফলে, সহজেই তা নষ্ট হয়ে যায়। স্মার্ট কার্ড হলে এই সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে।
এসি