৫ বছর বেতন বকেয়া, নিউজরুমেই সাংবাদিকের আত্মহত্যা
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৮:৫৬ এএম, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২ শুক্রবার | আপডেট: ০৮:৫৭ এএম, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২ শুক্রবার
৬০ মাসের বকেয়া বেতন না পেয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন ভারতের এক সাংবাদিক। দক্ষিণ ভারতের তামিলনাড়ুতে নিজ অফিসের নিউজরুমেই আত্মহত্যা করেন তিনি।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট জানায়, ৫৬ বছর বয়সী ওই সাংবাদিকের নাম টি কুমার। ইউনাইটেড নিউজ অব ভারত নামের এক বার্তাসংস্থায় তিনি কর্মরত ছিলেন। সেখান থেকেই সোমবার তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এছাড়া ইউএনআই'র তামিলনাড়ু ব্যুরোর প্রধানের দায়িত্বেও ছিলেন তিনি।
কুমারের মৃত্যুতে সাংবাদিকদের বকেয়া বেতন এবং অন্যান্য অর্থনৈতিক জটিলতাগুলো সবার সামনে উঠে এসেছে। প্রতিষ্ঠানটির অন্যান্য কর্মীদেরও দাবি গত ৬০ মাস ধরে তাদের কোনো বেতনই দেয়া হয়নি।
সংস্থা থেকে কোন বেতন না দেয়ায় কুমার অর্থনৈতিক সমস্যায় পড়েছিলেন বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটির কর্মীরা।
এদিকে ইন্ডিপেন্ডেন্টের সঙ্গে আলাপকালে এই দুর্ঘটনাকে মর্মান্তিক উল্লেখ করে যথাযথভাবে এর পুলিশি তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন ইউএনআই'র প্রধান সম্পাদক অজয় কুমার কউল।
তিনি বলছেন, যতদূর জানি, অনেক গণমাধ্যম অর্থনৈতিক সংকটে পড়ে তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলে প্রচার করলেও সেখান থেকে কোনো সুইসাইড নোট পাওয়া যায়নি।
কিছু মানুষ ভুল তথ্য ছড়াচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এটা কি আসলেই আত্মহত্যা ছিল না অন্যকিছু তা জানতে আমরা যথাযথ তদন্ত চাই। আমরাও এই ঘটনার সঠিক বৃত্তান্ত এবং ঘটনাপ্রবাহ জানতে চাই।
সিনিয়র সাংবাদিক বিশ্ব বিশ্বনাথ সর্বপ্রথম সোমবার এক টুইটের মাধ্যমে কুমারের মৃত্যুর খবর জানান। তিনি লেখেন, মিস্টার কুমার একজন সাধারণ কর্মী হিসেবে খুব কম বয়সে ভারতের প্রধান এবং অগ্রগামী বার্তাসংস্থা ইউএনআই'তে যুক্ত হন। কিন্তু নিজের জ্ঞান ও দক্ষতায় তিনি প্রতিষ্ঠানটির তামিলনাড়ুর প্রধান হিসেবে নিয়োগ পান।
একইসঙ্গে প্রতিষ্ঠানটির কর্মীদের বেতন না পাওয়ার বিষয়টি তিনি তুলে ধরেন। লেখেন, 'দুর্ভাগ্যবশত ৬০ মাস ধরে ইউএনআই কোনো বেতন দিচ্ছে না। প্রত্যেক কর্মী কিস্তিতে তাদের বেতন পাচ্ছেন, তবে সেটাও নিয়মিত না।'
বেতন না দেয়ার চাপ দক্ষ সাংবাদিক এবং চমৎকার একজন মানুষকে আত্মহত্যার দিকে ঠেলে দিয়েছেন বলে পোস্টটিতে ইউএনআই'র বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন সিনিয়র এই সাংবাদিক। বিশ্বনাথের দাবি, আর কোথাও না গিয়ে তামিলনাড়ুর প্রধান অফিসে আত্মহত্যা করার এই সিদ্ধান্তেই বোঝা যায়, তার জীবন এই প্রতিষ্ঠানই ধ্বংস করে দিয়েছে বলে শেষ মুহূর্তে তিনি অনুভব করেছিলেন।
তবে মিস্টার কউল এই দাবি নাকচ করে দিয়েছেন। তিনি বলেন বেতন নিয়ে কোনো সমস্যাই ছিল না। আমি প্রতিষ্ঠানে যোগ দেয়ার পর অন্তত গত সাত মাস ধরে প্রত্যেকের মতো কুমারও কিস্তিতে বেতন পাচ্ছিল। কুমারের কিছু অর্থের দরকার পড়লে সেটাও দেয়া হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
এসবি/