ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৭ ১৪৩১

গৃহবধূর ৬ খণ্ড মরদেহ, ঘাতক ঢাকায় গ্রেফতার

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ০৪:২৪ পিএম, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২ শুক্রবার | আপডেট: ০৯:১৬ পিএম, ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২ শুক্রবার

সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর পৌর শহরের সৌদি প্রবাসীর স্ত্রীকে হত্যা ঘটনায় পলাতক প্রধান আসামি জিতেশ চন্দ্র গোপকে ঢাকা থেকে গ্রেফতার করেছে সিআইডি।

শুক্রবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২টায় সিআইডির একটি টিম ঢাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করে। গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান।

এর আগে বৃহস্পতিবার পুলিশ শহরের পৌর পয়েন্টের একটি মার্কেটের অভি মেডিকেল নামের এক ফার্মেসি থেকে ওই নারীর খণ্ডিত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত শাহনাজ পারভীন জ্যোৎস্না (৩৫) উপজেলার রানীগঞ্জ ইউনিয়নের নারিকেলতলা গ্রামের সৌদি প্রবাসী ছরুক মিয়ার স্ত্রী।

এ ঘটনায় নিহতের ভাই বাদী হয়ে জিতেশ চন্দ্র গোপকে আসামি করে জগন্নাথপুর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। 

নিহতের স্বজন ও পুলিশ সূত্র জানায়, ২০১৩ সাল থেকে পৌর শহরের নিজ মালিকানাধীন বাসায় তিন সন্তান নিয়ে বসবাস করে আসছিলেন সৌদি প্রবাসীর স্ত্রী। ওষুধ ক্রয় সূত্রে বাসার নিকটবর্তী ব্যারিস্টার মির্জা আব্দুল মতিন মার্কেটের অভি মেডিকেল ফার্সেমিতে যাতায়াত করতেন তিনি। গত বুধবার বিকেলে ফার্মেসিতে যাচ্ছেন বলে বাসা থেকে বের হন শাহনাজ। এরপর থেকে তিনি নিখোঁজ ছিলেন।

এদিকে, বোন বাসায় ফেরেননি জানতে পেরে বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে ওই ফার্মেসিতে যান নিহতের ছোটভাই। তখন ফার্মেসি বন্ধ পান তিনি। পরে ফার্মেসির মালিক জিতেশ চন্দ্র গোপকে মোবাইলে কল দিলে তিনি জানান, তার বোন ওষুধ না পেয়ে চলে গেছেন।

পরে নিহতের ব্যবহৃত মোবাইলে ফোনে দিলে অন্য এক নারী রিসিভ করে জানান, তিনি (নিহত নারী) সিলেট ওসমানীতে আছেন। সেখানে যোগাযোগ করেও তার সন্ধান না পেয়ে পরে আরেকবার ফোন দিলে একই নারী ফোন জানান, শহরের আর্ট স্কুল এলাকায় আছেন তিনি। 

বিষয়টি পুলিশকে অবহিত করা হলে সন্ধ্যা ৭টার পর থেকে শাহনাজের ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।

রাতভর বিভিন্ন স্থানে যোগাযোগ করেও নিহত শাহনাজের সন্ধান না পেয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাজেদুল ইসলামের উপস্থিতিতে তালাবদ্ধ অভি ফার্মেসির তালা ভেঙে দোকানে অভিযান চালায় পুলিশ। এ সময় দোকানের রোগী দেখার টেবিলের নিচে বিছানার চাদর দিয়ে মোড়ানো ওই নারীর শরীর ছয় টুকরা লাশ দেখতে পায় পুলিশ।

ঘটনার পর থেকে ফার্মেসির মালিক জিতেশ গোপ ও তার পরিবার পলাতক ছিলেন।

নিহতের ছোট ভাই হেলাল মিয়া জানান, বুধবার তার বোন ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন করেন। এই টাকার জন্য বোনকে হত্যা করা হয়েছে। এই হত্যার বিচার চান তিনি।

জগন্নাথপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মিজানুর রহমান জানান, পুলিশ ওই ফার্মেসির সিলিং থেকে একটি রক্তমাখা ছুরি উদ্ধার করেছে। ধারণা করা হচ্ছে, ওই ছুরি দিয়েই শাহনাজকে হত্যা করা হয়েছে। লাশের ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

এএইচ/