ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

বাংলায় ৫ লাখ শব্দ থাকলেও অভিধানে খুবই কম (ভিডিও)

মফিউর রহমান

প্রকাশিত : ১১:১২ এএম, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২২ শনিবার | আপডেট: ১১:১৪ এএম, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২২ শনিবার


খুব বেশি শব্দ স্থান পায়নি অভিধানে (ভিডিও)

বাংলায় ৫ লাখেরও বেশি শব্দ থাকলেও অভিধানে জায়গা পেয়েছে মাত্র ১ লাখ ৩০ হাজারের মতো। সাহিত্যে ব্যবহৃত শব্দের বাইরে খুব বেশি শব্দ অভিধানে স্থান পায়নি। এজন্য স্বতন্ত্র অভিধান কমিটি না থাকাকেই দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞরা। প্রায়োগিক অভিধানের দিকেও নজর দেয়ার পরামর্শ তাদের।

বাংলা একাডেমির বাইরেও অভিধান বের করে কিছু প্রকাশনা সংস্থা। তবে শব্দ সংখ্যা থাকে সীমিত। সবচেয়ে বেশি শব্দ আছে বাংলা একাডেমির বিবর্তনমূলক অভিধানে ১ রাখ ৩০ হাজারের মত শব্দ। 

বেশি শব্দ থাকলেও এতে স্থান পেয়েছে একাত্তর পূর্ববর্তী সময়কার শব্দগুলোই। এর সিংহভাগ আবার কাব্যিক বা সাহিত্যিক শব্দ। এছাড়া বাংলা একাডেমির অন্য যে অভিধান রয়েছে তাতেও সমকালীন শব্দ তুলনামূলক কম।  

প্রচলিত শব্দ যাচাই বাছাই করে অভিধানে যোগ করার জন্য গবেষকদের সমন্বয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ কমিটি করার পরামর্শ ভাষাবিদ ড. আবুল কালাম মনজুর মোরশেদের। 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অনারারি অধ্যাপক ড. আবুল কালাম মনজুর মোরশেদ বলেন, ‘বাংলা একাডেমি যদি কয়েকজনকে নিয়ে একটা সেল তৈরি করতো এবং যারা প্রত্যেকদিন সংবাদপত্র, বিভিন্ন উপন্যাস-কবিতা পড়ে নতুন শব্দ বের হয়েছে কিনা খুঁজতো। তারা যদি এভাবে পরিশ্রম করে শব্দগুলো বের করতেন তাহলে অভিধান অনেক আধুনিক হতো।’

বাংলা একাডেমির অভিধান বিভাগে বেশি লোক না থাকাও বড় সমস্যা বলে মনে করেন অধ্যাপক ড. সৈয়দ মঞ্জুরুল ইসলাম। প্রয়োজনে আলাদা পারিশ্রমিকে গবেষক নিয়োগের পরামর্শ তার। 

কথা সাহিত্যিক ও গবেষক ড. সৈয়দ মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, ‘যে কোন অভিধান প্রকল্পে অসংখ্য মানুষ ও গবেষকের সংযুক্তি থাকা প্রয়োজন। তাদের প্রত্যেককেই সেই ধরনের পারিশ্রমিক দিতে হবে। যাতে তারা জীবনটা নির্বিঘ্নে পরিচালনা করতে পারেন, এটি খণ্ডকালীন কোনো চাকরি হতে পারে না। বিদেশে যারা অভিধান প্রকল্পে থাকেন, তারা খুবই চমৎকার একটা জীবন ধারণ করেন। তাদের টাকা-পয়সার জন্য ভাবতে হয় না।’

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এই অধ্যাপক জানালেন, সাহিত্যে ব্যবহৃত শব্দ সাবার প্রয়োজন মেটাতে পারে না। তাই নতুন শব্দ যেমন নিতে হবে তেমনি এর তালিকাও থাকতে হবে। 

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্সটিটিউট অব বাংলাদেশ স্টাডিজের অধ্যাপক ড. স্বরোচিষ সরকার বলেন, ‘ বাংলা একাডেমির নিয়ম অনুযায়ী বানান ও উচ্চারণ করতে হবে। কিন্তু এসব অভিধানের ত্রুটি হলো এগুলো মোটেই সমকালীন নয়। বাংলা ক্রিয়া শব্দগুলোর একেকটার যে তিনটা রূপ থাকে এগুলো আমাদের অভিধানে নাই। যদি সত্যি সত্যি প্রায়োগিক অভিধান হয় তাহলে তো সেগুলোও থাকা উচিত।’

এখন পর্যন্ত দেশে যতগুলো অভিধান আছে তার সবই ব্যবহারিক, বানান শুদ্ধিকরণ ও অর্থ জানানো ছাড়া আর কোন প্রয়োজন মেটাতে পারে না। তাই প্রায়োগিক অভিধান দরকার বলেই মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।

এএইচ/