ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৯ ১৪৩১

১৬ বছরেই বিশ্বচ্যাম্পিয়ন প্রজ্ঞা, ঘুমের মধ্যেও খেলে দাবা!

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০২:০০ পিএম, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২২ মঙ্গলবার

কিশোর প্রজ্ঞানন্দ রমেশ

কিশোর প্রজ্ঞানন্দ রমেশ

মানুষ চাইলেই কি-না পারে, তারই উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত প্রজ্ঞা। মাত্র ১৬ বয়সেই তিনি এখন বিশ্বচ্যাম্পিয়ন। রোববার ভারতীয় সময় মধ্যরাতে তার দ্বিগুণ বয়সী পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়ন নরওয়ের ম্যাগনাস কার্লসেনকে হারিয়ে বিশ্বকে চমকে দিয়েছেন ভারতের চেন্নাইয়ের কিশোর প্রজ্ঞানন্দ রমেশ। দাবার দুনিয়ায় সবাই তাকে ভালোবেসে ডাকেন ‘প্রাগ’। 

তার এই সাফল্যে এখন উচ্ছ্বসিত ভারতসহ গোটা বিশ্ব। তার কোচ বিআর রমেশ থেকে শুরু করে শচীন টেন্ডুলকার, সবার প্রশ্ন- কীভাবে এলো এই সাফল্য? কীভাবে নিজেকে তৈরি করছিলেন মাত্র ১২ বছর বয়সে গ্র্যান্ড মাস্টার হওয়া প্রজ্ঞানন্দ?

আর এই বিষয়েই ম্যাচের পরে তার কোচ রমেশ জানিয়েছেন, ছেলেটা খুব পরিশ্রমী। তার অন্য ছাত্র-ছাত্রীরা যখন ওপেনিং নিয়ে সময় পার করেন, তখন প্রজ্ঞা মিডল বা এন্ড গেম শিখতেন। ওর মাথাটা কম্পিউটারের মতো। সাম্প্রতিক সময়ে ভারতের কিশোর দাবাড়ুদের মধ্যে র‍্যাপিড চেজে অন্যদের থেকে অনেকটা এগিয়ে প্রজ্ঞা। এয়ারথিংস মাস্টার্সে কার্লসেন ছাড়াও বিশ্বের ছয় নম্বর লেভ অ্যারোনিয়ানকে হারিয়েছেন তিনি।

২০০৫ সালের ১০ আগস্ট চেন্নাইয়ে জন্ম নেয়া প্রজ্ঞা ছোট থেকেই বাড়িতে দাবার পরিবেশ পেয়েছেন। তার বড় বোন বৈশালী রমেশও একজন নামকরা দাবাড়ু। ২০১৩ সালে মাত্র সাত বছর বয়সে অনূর্ধ্ব-৮ ওয়ার্ল্ড ইউথ চেজ চ্যাম্পিয়নশিপ জয় করেন প্রজ্ঞা। সেখানে জেতার পরে ফাইড মাস্টারের খেতাবও অর্জন করেন তিনি। তার পরে ২০১৬ সালে মাত্র ১২ বছর ১০ মাস ১৩ দিন বয়সে ভারতের দ্বিতীয় ও বিশ্বের পঞ্চম সর্বকনিষ্ঠ (অভিমন্যু মিশ্র, গুকেশ ডি, সের্গে কার্জাকিন ও জাভোখির সিন্দারতের পরে) গ্র্যান্ড মাস্টার হন প্রজ্ঞানন্দ।

প্রজ্ঞার জীবনী নিয়েও এখন সবার আগ্রহের শেষ নেই। জানা যায়, ছোট থেকেই দক্ষিণী সুপারস্টার রজনীকান্তের ছবি দেখতে ভালোবাসেন প্রজ্ঞা। সেটাই তার অবসর কাটানোর একমাত্র মাধ্যম। তার আদর্শ ভারতের প্রথম গ্র্যান্ড মাস্টার তথা প্রাক্তন বিশ্বচ্যাম্পিয়ন বিশ্বনাথন আনন্দ। প্রজ্ঞা গ্র্যান্ড মাস্টার হওয়ার পরে তাকে স্বাগতও জানিয়েছিলেন আনন্দ। এয়ারথিংস মাস্টার্সেও প্রজ্ঞাদের মেন্টর সেই আনন্দ।

তার এই সাফল্যের পিছনে রয়েছে গভীর তপস্যাও বটে। যাতে কোনও দিকে মন না যায় তার জন্য নেটমাধ্যম থেকে নিজেকে দূরেও রাখে প্রজ্ঞা।

তার বাবা আরবি রমেশবাবু জানিয়েছেন, ছেলের ধ্যান-জ্ঞান শুধুই দাবা। ঘুমের মধ্যেও নাকি তিনি দাবা খেলেন। বাড়িতে বসে কার্লসেনের বিরুদ্ধে ছেলের খেলা দেখেছেন তারা। কার্লসেনকে হারিয়ে বড় বোনের সঙ্গে দাবা নিয়েই আলোচনা করেছেন প্রজ্ঞা। তার লক্ষ্য, আদর্শ আনন্দের মতো বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হওয়া। সেই লক্ষ্যেই এগোচ্ছেন চেন্নাইয়ের এই কিশোর। সূত্রঃ আনন্দবাজার অনলাইন

আরএমএ//এনএস//