ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

অ্যাংজাইটিতে ভুগছে সন্তান? জানুন কারণ ও প্রতিরোধের উপায়

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৯:২৬ এএম, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২২ বুধবার

কখনও কখনও বাচ্চারাও উদ্বিগ্ন, চিন্তিত হয়ে পড়তে পারে এবং এটি স্বাভাবিক। তবে আপনারা কী জানেন এই উদ্বিগ্নতা তাদের আচরণ ও চিন্তাভাবনাকে প্রভাবিত করতে পারে? তারাও দুশ্চিন্তা এবং একাকীত্বে ভুগতে পারে। বাচ্চারা নানান কারণে উদ্বিগ্ন হয়ে থাকে। চলুন তাদের দুশ্চিনতার কারণ ও সমাধান সম্পর্কে জানা যাক।

বাচ্চাদের অ্যাংজাইটির কারণ

> সেরোটোনিন ও ডোপামিন নামের দুটি নিউরোট্রান্সমিটারে ক্ষরণ বৃদ্ধি পেলে বাচ্চাদের মধ্যে অ্যাংজাইটি দেখা যায়।

> অভিভাবক হিসেবে আপনিও সন্তানের অ্যাংজাইটির জন্য দায়ী হতে পারনে। কারণ অভিভাবক উদ্বিগ্ন থাকলে, বাচ্চারাও উদ্বিগ্ন হয়ে পড়বে। ঠিক যেমন বাচ্চারা মা অথবা বাবার মতো, চুল, নাক, মুখ পেয়ে থাকে, তেমনই অ্যাংজাইটিও তারা মা-বাবার কাছ থেকেই পায়। শিশুর আশপাশে থাকলে আপনি যদি উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন, তা হলে তারাও ততটাই উদ্বিগ্ন থাকবে।

> আবার কোনও ট্রমাটিক ঘটনা, যেমন পথ দুর্ঘটনা, মৃত্যু, ভালোবাসার মানুষকে হারিয়ে ফেলা, স্বাস্থ্য সমস্যা বাচ্চাদের অ্যাংজাইটি বাড়িয়ে দিতে পারে।

> স্থূলতার কারণে তাদের নিয়ে হাসিঠাট্টা করা, মা-বাবার মধ্যে ঝগড়া, বার বার স্কুল ও বাড়ি পরিবর্তন, উপেক্ষিত হওয়া, অপব্যবহারের শিকারে বাচ্চারাও উদ্বিগ্নতায় ভোগে।

বাচ্চাদের অ্যাংজাইটির লক্ষণ

উদ্বিগ্ন হলে বাচ্চাদের মধ্যে যে শারীরিক লক্ষণ দেখা দেবে, তা হল-

হৃদস্পন্দন বৃদ্ধি পাওয়া, শ্বাস-প্রশ্বাসে সমস্যা, হাত, পা কাঁপা, ক্লান্তি, ঘাম ঝরা, পেশীতে ব্যথা, অস্থির থাকা ও বিশ্রাম নিতে না-পারা, কথা বলতে সমস্যা হওয়া, বিরক্তি, একাকীত্ব, মনোযোগের অভাব, জড়োসড়ো আচরণ, স্কুলে যেতে অস্বীকার করা, সকলের সঙ্গে মেলামেশা করতে না-পারা ও রূঢ় ব্যবহার করা, সবসময় চিন্তিত থাকা, ভীতি, নার্ভাস, স্ট্রেসড ইত্যাদি।

কী ভাবে বাচ্চাদের অ্যাংজাইটি সারিয়ে তুলবেন?

> অভিভাবক হিসেবে বাচ্চাদের মানসিক সুস্বাস্থ্য বজায় রাখার দায়িত্বও আপনার। কোন কারণে আপনার সন্তান উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ছে, তা জানার জন্য তাদের কাউন্সিলিং করাতে পারেন।

> সিবিটি বা কগনিটিভ বিহেভারিয়াল থেরাপির মাধ্যমে বাচ্চারা ভালোর জন্য নিজের আচরণ পরিবর্তন করে অ্যাংজাইটি মোকাবিলা করতে পারে।

> থেরাপির পরও যদি তাদের উদ্বিগ্নতা নিয়ন্ত্রণে না-আসে এবং অ্যাংজাইটির স্তর গুরুতর ভাবে বৃদ্ধি পায়, তা হলে চিকিৎসক তাদের ওষুধ দিতে পারেন।

বাচ্চাদের উদ্বেগ কমানোর উপায়

নিজের সন্তানকে প্রয়োজনীয় ভালোবাসা ও যত্ন প্রদান করুন। অভিভাবক হিসেবে আপনাকে নিজের সন্তানের সামনে শান্ত ও সংযত থাকতে হবে, কারণ আপনাকে দেখেই তারা শিক্ষা গ্রহণ করে থাকে। কোনও সমস্যা দেখা দিলেই চিন্তিত হয়ে পড়ার পরিবর্তে তা সমাধান করতে শেখান। তাদের হিংস্র আচরণ, কোনও বস্তু বা পরিস্থিতির প্রতি ভীতি সঞ্চার হতে দেখলে, তাকে উৎসাহিত করবেন না। সময় থাকতে থাকতে তাদের সমস্যার সমাধান করুন। বাচ্চাদের সঙ্গে কিছু সময় কাটান। তাদের পছন্দের অ্যাক্টিভিটি করতে দিন। গেম খেলা, নাচ করা, রান্না বা বাগান করার শখ থাকলে তাতে তাদের সাহায্য করুন। আবার বাচ্চাদের সঙ্গে ছুটি কাটাতে কোথাও ঘুরতে যান। এর ফলে তাদের মন থেকে ধীরে ধীরে উদ্বেগ কেটে উঠতে শুরু করবে।

সূত্র: এই সময়
এমএম/