একজন স্বপ্নবাজ কাওসার আহমেদ চৌধুরী
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ১১:৩২ এএম, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২২ বুধবার | আপডেট: ১১:৫১ এএম, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২২ বুধবার
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়, কথাটি বোধহয় কাওসার আহমেদ চৌধুরীর সঙ্গে মানিয়ে যায় বেশ। ৭৮ বছরের জীবনে বহু স্বপ্ন দেখেছেন এই বিখ্যাত এই গীতিকার, যার কিছু বাস্তব করেছেন, কিছু আবার স্বপ্নই থেকে গেছে।
প্রথম পরিচয় গীতিকার, তবে জ্যোতিষী হিসেবেও বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন কাওসার আহমেদ চৌধুরী।
বয়স যখন ১১, তখন থেকেই জ্যোতিষশাস্ত্রের প্রতি অনুরাগ। এক পর্যায়ে শখের বশেই হাত দেখতেন, রাশিফল লিখতেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পর চিত্রশিল্পী হতে চেয়েছিলেন। এরপর সিনেমার ঝোঁকও পেয়ে বসেছিল তাকে। তবে সেটিও হয়ে ওঠেনি। তিনি একজন বীর মুক্তিযোদ্ধাও। পেশাজীবনে চাকরি করেছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরে।
তবে তার সব প্রতিভার প্রকাশ ঘটেছিল গান লেখায়। ছোটবেলা থেকে কবিতায় হতেখড়ি। তার রেশ ধরেই গীতিকার হিসেবে আত্মপ্রকাশ।
সিলেট বেতারে প্রথম প্রচারিত হয় তার লেখা গান। তবে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে শিল্পী লাকী আখন্দের সাথে পরিচয়ের পর গান লেখার উৎসাহ বহুগুণে বেড়ে যায় কাওসার আহমেদের।
শেষ পর্যন্ত তার লেখা বেশকিছু গানে অসাধারণ সুর দিয়েছেন লাকী আখন্দ। এরমধ্যে অন্যতম ফেরদৌস ওয়াহিদের গাওয়া ‘পলাতক সময়ের হাত ধরে’ এবং সামিনা চৌধুরীর ‘বলো না তুমি কোথায়?’
লাকী আখন্দ ছাড়াও কাওসার আহমেদের লেখা গানে কণ্ঠ দিয়েছেন আরও অনেকে।
তার লেখা ‘কবিতা পড়ার প্রহর এসেছে রাতের নির্জনে’ গানটি সামিনা চৌধুরীর কণ্ঠে হয়েছে কালজয়ী। আইয়ুব বাচ্চুর রুপালী গিটারও তারই হাত ধরে।
‘যেখানেই সীমান্ত তোমার সেখানেই বসন্ত আমার’ দরাজ কণ্ঠে গাওয়া কুমার বিশ্বজিতের এই গানটিও কাওসার আহমেদের কলমেই সৃষ্টি।
ব্যান্ড মিউজিক ও আধুনিক গানের সফল গীতিকার কাওসার আহমেদ। যার লেখনী পার করেছে প্রজন্মের সীমানা।
‘এই রুপালি গিটার ফেলে একদিন চলে যাব দূরে বহুদূরে’ এই গানটির মতই রুপালী গিটার ফেলে একদিন চলে গেছেন আইয়ুব বাচ্চু। এবারে চলে গেলেন এই গানের প্রতিটি কথার রূপকার কাওসার আহমেদ।
এতোটাই দূরে, যেন নিজের গানের কথাগুলোর মতোই তিনি বলছেন ‘আমায় ডেকো না ফেরানো যাবে না’।
১৯৪৪ সালের ১৬ ডিসেম্বর সিলেটে জন্ম নেওয়া সৃজনশীল এই ব্যক্তি পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করেন ২২.০২.২২ তারিখে।
এসবি/