ঢাকা, রবিবার   ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪,   ভাদ্র ২৩ ১৪৩১

বাংলায় ইশারা ভাষার ব্যবহার (ভিডিও)

মানিক শিকদার

প্রকাশিত : ০৪:২৬ পিএম, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২ শনিবার | আপডেট: ০৪:২৭ পিএম, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২ শনিবার

সভ্যতার আগে ইশারার মাধ্যমেই মনের ভাব প্রকাশ করতো মানুষ। সেই ইশারা ভাষা টিকে আছে আজও। নিতান্ত বাধ্য হয়েই বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধীরা ব্যবহার করেন এই ভাষা। প্রাতিষ্ঠানিকভাবে ভাষাটি শেখাতে ইংরেজি বর্ণমালার সাহায্য নিতে হয়। তবে বাংলায় ইশারা ভাষা ব্যবহার করতে কাজ করছেন গবেষকরা।

আনিস খান বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে মানব সম্পদ বিভাগে কাজ করেন। শ্রবণ প্রতিবন্ধকতার কারণে কণ্ঠেও বিকাশ ঘটেনি তার। সব বাধা পেরিয়েই সমাজে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছেন তিনি।

একুশের গান এভাবেই প্রকাশ করলেন তিনি।

মুখে ভাষা না থাকায় কর্মক্ষেত্রের প্রতিবন্ধকতার কথাও ইশারায় তুলে ধরেন আনিস।

ইশারায় ভাষায় আনিস খান বলেন, “আমি যখন প্রথম চাকরি যোগ দেই তখন অনেক বধির সাথে যোগাযোগ করতে সমস্যা হতো। তারা বলতো এসএমএস লিখে পাঠাতে।”

মাতৃভাষায় কথা বলতে না পারার আক্ষেপ আছে এই বাক প্রতিবন্ধীর। তবে জানালেন ভাষা আন্দোলন ও শহীদদের প্রতি তার শ্রদ্ধার কথা।

আসলাম খান ইশারা ভাষায় বলেন, “এই ভাষা নিয়ে গর্বিত হলেও বাংলা ভাষায় কথা বলতে পারি না। আমি যেহেতু বধির এ জন্য আমার মনে কষ্ট রয়েছে। তবে বাংলা ভাষার জন্য আমি গর্বিত বোধ করছি।”

বাংলাদেশ জাতীয় বধির সংস্থার হিসেবে দেশে প্রায় ৬০ লাখ বাক ও শ্রবণ প্রতিবন্ধী আছেন। পারিবারিক ও সামাজিক অসচেতনতায় বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তারা অবহেলার শিকার।

বাংলাদেশ জাতীয় বধির সংস্থার সভাপতি শাহাদৎ আলম হারু চৌধুরী বলেন, “তারা সবকিছু প্রকাশ করতে পারছে, দেখাতে পারছে, বুঝাতে পারছে। তাহলে কেন তারা পিছিয়ে রয়েছে।”

ইশারা ভাষা বিশেষজ্ঞদের মতে বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠানের পরিবর্তে প্রতিটি বিদ্যালয়ে বাক প্রতিবন্ধীদের জন্য শিক্ষা ব্যবস্থা চালু করা দরকার।

ইশারা ভাষা বিশেষজ্ঞ লায়ন মনোয়ার হোসেন বলেন, ‘প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদেরকে আলাদা বিদ্যালয়ে না পড়িয়ে প্রচলিত বিদ্যালয়ে একটি বিশেষ কক্ষ চালু করা উচিত। সেখানে তাকে প্রাক-প্রস্তুতি সম্পন্ন করে অন্যান্য শিক্ষার্থীদের সাথে সমন্বিত শিক্ষা দিতে হবে। তাহলে তারা আর পিছিয়ে পড়বে না।”

ইংরেজী বর্ণমালা ব্যবহারের পাশাপাশি বাংলায় ইশারা ভাষা নিয়ে কাজ হচ্ছে। অচিরেই বাংলা ইশারা ভাষায় শিক্ষাদান বিস্তৃতি করতে কাজ করছেন গবেষকরা।

মনোয়ার হোসেন বলেন, “বাংলা বিশ্বে একটি আন্তর্জাতিক ভাষা হবে তেমনি বাংলায় ইশারা ভাষাও একটি আন্তর্জাতিক ইশারা ভাষা হিসেবে স্বীকৃতি পাবে বলে বিশ্বাস আমাদের।” 

সর্বস্তরে বাংলার ব্যবহারের পাশাপাশি বাংলা ইশারা ভাষা ব্যবহারে সবার সহযোগিতা কামনা করেছেন গবেষকরা।

এএইচ/