ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

বিশ্বে বাংলাকে তুলে ধরেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (ভিডিও)

মুহাম্মদ নূরন নবী

প্রকাশিত : ০৩:৫৫ পিএম, ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২ সোমবার

বর্ণময় কর্মজীবনে শতমূখী প্রতিভা তাঁর। বিশ্বের নানা প্রান্তে বাংলাকে তুলে ধরেছেন সমুজ্জ্বলভাবে। বলছি, কবি সার্বভৌম রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কথা।

দেশকালের সীমা ছাড়িয়ে চিরকালের মর্যাদা পেয়েছেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। তাঁর সর্বব্যাপী প্রতিভা এখনো আধুনিক ও গুরুস্থানীয়। তাঁর কবিগুরু অভিধা শুধু অলঙ্কার নয়-সার্থক শিরোভূষণও বটে। 

রবীন্দ্রনাথের সর্বোতোমূখি প্রতিভা উপলব্ধ হয়েছে ১৯৮৬ সালে তাঁর আবির্ভাবের ১২৫ বছর পূর্তিতে। বাংলায় রচিত তাঁর সাহিত্য প্রতিভা দেশে-বিদেশে প্রচারের উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল। সেই থেকে রাশিয়া, চিন, জাপানসহ অন্যান্য দেশে তাঁর রচনার অনুবাদ শুরু হয়েছে নতুন করে।

তাঁর বিশ্বমৈত্রী ও আন্তর্জাতিকতার আদর্শ পৃথিবীর বহু মানুষ এখনও স্মরণ করে। তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের উদ্বেগের এই সময়ে রবি ঠাকুরের প্রেম ও ভক্তিবাদ সময়োযোগী ও সার্বজনীনতার মূলমন্ত্র।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কবি সার্বভৌম। তাঁর উপন্যাস, নাটক, প্রবন্ধ, ছোটগল্প জীবনদর্শনের বার্তা ছড়িয়েছে সকল কালে সব মানুষের মধ্যে। বহুমূখি প্রতিভার বাঙালি কবিকে বিশ্ব চিনেছে অনন্যরূপে। 

৫২টি কাব্যগ্রন্থ, ৩৮টি নাটক, ১৩টি উপন্যাস, ৩৬টি প্রবন্ধ, ৯৫টি ছোটগল্প, ২ হাজারের বেশি গান ছাড়াও রচনা করেছেন অনেক গদ্য। অনেক সৃষ্টিকর্মের গবেষণা এখনও অগোচরে।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক শেখ মো. রজিকুল ইসলাম বলেন, “চিঠিপত্র নিয়েও ১৫-১৬ খণ্ড। উনি এত লিখেছেন যে এক মানুষের এক জীবনে এতকিছু পড়ে বুঝা সম্ভব। রবীন্দ্রনাথ নিয়ে এই বিস্ময় প্রকাশ আমরা করি। তাঁর কোনো লেখা কোনো লেখার চেয়ে কম নয়, তাঁর নাটক উপন্যাসের চেয়ে কম নয়, তার ছোট গল্প উপন্যাসের চেয়ে কম নয়, তাঁর কবিতা-সাহিত্য নাটকের চেয়ে কম নয়।”

১৯১২ সালে প্রকাশিত হয় কাব্যগ্রন্থ গীতাঞ্জলী। শিলাইদহে এর ইংরেজি অনুবাদে হাত দিলেও তা গতি পায় ইংল্যান্ড যাবার পথে বন্ধু রাধিনিস্তাইনের অনুপ্রেরণায়। এমনকি কবি ডব্লিউ বি ইয়েটসসহ আরও ক’জনের সঙ্গে সখ্যতাও গড়ে উঠে ছিল তাঁর। 

গীতাঞ্জলী রচনার স্বীকৃতিস্বরূপ প্রথম বাঙালি কবি হিসেবে ১৯১৩ সালে নোবেল পুরষ্কারে ভূষিত করে রয়েল সুইডিস একাডেমি। বিশ্ব সাহিত্যের আসনে বাংলা ভাষা সেই থেকে নবরূপে প্রকাশ পায়।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই অধ্যাপক আরও বলেন, “তিনি লন্ডনে গিয়ে তাঁর অনুবাদটিকে চমৎকারভাবে এগিয়ে নিয়ে যান এবং সাহিত্যিক মহলে অনুবাদটিকে ছড়িয়ে দিতে পেরেছিলেন। এর ফলস্বরূপ আমরা নোবেল পুরস্কার পেয়েছি।”

অতপর শুরু হয় প্রথম বিশ্বযুদ্ধ। ক’বছরের ব্যবধানে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের দামামা বাজলে এর প্রভাব পরে বিশ্বের শিল্প-সাহিত্যে।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরে লেখা ইংরেজি, ডাচ, জার্মান, স্প্যানিশসহ ততোদিনে ইউরোপীয় ভাষায় অনুদিত হয়েছে। বিশ্ববাসী তাঁর কল্যাণে অনুভব করেন সার্বজনীন শ্রদ্ধা ও একে অপরের প্রতি নিগুঢ় প্রেমের বারতা। এভাবেই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর যুগে যুগে পৃথিবীর মানুষের কাছে পরিপূর্ণ এ সত্ত্বা নিয়ে বিশিষ্ট হয়ে আছেন।

এএইচ/