ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

মরদেহ সামনে রেখে মুক্তিসংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ার শপথ (ভিডিও)

ফারজানা শোভা

প্রকাশিত : ১২:২৩ পিএম, ৩ মার্চ ২০২২ বৃহস্পতিবার

একাত্তরের ৩ মার্চ, পল্টন ময়দানে স্বাধীনতার মহান স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের নেতারা স্বাধীনতার ইশতেহার ঘোষণা করেন। ঠিক হয়, নতুন দেশের নাম হবে বাংলাদেশ। জাতীয় সংগীত হিসেবে লাখো কন্ঠে গাওয়া হয়- “আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি”।

দীর্ঘদিনের শোষণে পিষ্ঠ বাঙালির সামনে তখন স্বজনের মরদেহ। মৃত্যু হাতের মুঠোয় নিয়ে মিছিল-মিটিংয়ে অগণিত মানুষ। ২ মার্চ রাতে গুলিতে শহীদ আটজনের মরদেহ নিয়ে বিক্ষুব্ধ জনতা মিছিল করে ঢাকার বিভিন্ন রাস্তায়। বঙ্গবন্ধুর ডাকে ঢাকায় দ্বিতীয় এবং সারাদেশে প্রথম দিনের মতো সর্বাত্মক হরতাল চলছিল। পল্টনে মিছিল শেষে শহীদ মিনারে মরদেহ সামনে রেখে পূর্ব-বাংলার স্বাধিকার আদায়ের শপথ নেয় বিক্ষুব্ধ জনতা।

বিকালে মরদেহগুলো নিয়ে যাওয়া হলে পল্টন রূপ নেয় জনসমুদ্রে। স্বাধীন বাংলা কেন্দ্রীয় ছাত্র-সংগ্রাম পরিষদের ছাত্র জনসভায় আসেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ডাক দেন অসহযোগ আন্দোলনের। ছাত্রলীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক শাজাহান সিরাজ পাঠ করেন স্বাধীনতার ইশতেহার। স্বাধীনতা ও মুক্তিসংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ার শপথ নেন হাজারো মানুষ। 

ডাকসুর সাবেক ভিপি মাহফুজা খানম বলেন, “শাজাহান সিরাজ ইশতেহার পাঠ করলেন এবং সেখানে জাতীয় পতাকা প্রদর্শিত হল। তখন একটা বার্তা পেয়েছিলাম যে একটি সশস্ত্র সংগ্রামে আমাদের অবতীর্ণ হতে হবে। সেটার জন্য আমরা প্রযুক্তি নিচ্ছিলাম।”

ইশতেহারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঘোষিত হন স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশের সর্বাধিনায়ক হিসেবে। ‘আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি’ স্বীকৃতি পায় জাতীয় সংগীত হিসেবে।

মাহফুজা খানম বলেন, “ছাত্র সমাজ আমরা সেই মুহূর্তে বুঝে গিয়েছিলাম যে, পশ্চিম পাকিস্তানীদের বিরুদ্ধে আমাদের সশস্ত্র সংগ্রাম করতে হবে এবং এই সংগ্রামের ভেতর দিয়ে একটি স্বাধীন-স্বার্বভৌম বাঙালির বাংলাদেশ আমরা প্রতিষ্ঠা করতে যাচ্ছি। একটা জাতির জন্য যেমন একটা জাতীয় পতাকা যেমন গুরুত্বপূর্ণ তার জাতীয় সঙ্গীতও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই আমরা সেখানে জাতীয় সঙ্গীত গেয়েছি এবং তার সঙ্গে জাতীয় পতাকাও আমরা প্রদর্শন করেছি।”

লাখো শহীদের রক্তে অর্জিত জাতীয় সংগীতের মর্যাদা রক্ষায় নতুন প্রজন্মকে ইতিহাসের সঠিক পাঠ দেয়ার তাগিদ সবার।  

এএইচ/