থাইরয়েডের ওষুধ খেয়ে মিলছে না ফল, কী করবেন?
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ১২:২৮ পিএম, ৩ মার্চ ২০২২ বৃহস্পতিবার
থাইরয়েডের সমস্যা অনেকেরই দেখা দিয়ে থাকে। আর একবার এটি হলে জীবন প্রায় অস্থির হয়ে ওঠে। খুব অল্পতেই ক্লান্ত হয়ে ওঠা, কিছুতেই ওজন নিয়ন্ত্রণে না থাকা, অসময়ে চুল পড়ে যাওয়া, ত্বকের জৌলুস হারিয়ে যাওয়া এর সবকিছুর পিছনেই লুকিয়ে থাকতে পারে থাইরয়েডের সমস্যা।
আর সময় থাকতে থাইরয়েডের চিকিৎসা না করালে, তা বড় আকারও ধারণ করতে পারে। থাইরয়েডের চিকিৎসা দীর্ঘমেয়াদি, কিন্তু সামান্য খেয়াল রাখলেই এই সমস্যার মোকাবিলা করা যেতে পারে।
থাইরয়েড গ্রন্থিটি প্রত্যেকের গলায় শ্বাসনালির সামনের দিকে অবস্থিত। এই গ্রন্থি থেকে দু’প্রকার হরমোন টি-থ্রি ও টি-ফোরের ক্ষরণ হয়।
আমাদের শরীরের রক্তে একটি নির্দিষ্ট মাত্রায় এই হরমোন থাকে। থাইরয়েডের সমস্যা প্রধানত দুই ধরনের হয়।
হাইপারথাইরয়েডিজমে রক্তে থাইরয়েড নিঃসৃত হরমোনের পরিমাণ বেড়ে যায়। আর হাইপোথাইরয়েডিজমে রক্তে থাইরয়েড নিঃসৃত হরমোনের পরিমাণ কমে যায়।
থাইরয়েড গ্রন্থির আল্ট্রাসাউন্ড, অ্যান্টি টিপিও অ্যান্টিবডি, থাইরয়েড স্টিমিউলেটিং, ইমিউনোগ্লোবিউলিন ইত্যাদি পরীক্ষার মাধ্যমে এই রোগ নির্ণয় করা হয়।
পরীক্ষায় থাইরয়েড ধরা পড়লেই, চিকিত্সাকের পরামর্শ নিয়ে ওষুধ খাওয়া শুরু করা উচিৎ।
থাইরয়েড ধরা পড়লে এবং চিকিৎসক ওষুধ খাবর পরার্মশ দিলে, সঠিক সময় জেনে ওষুধ খাওয়া উচিৎ।
চিকিত্সকদের মতে, সকালে খালি পেটে থাইরয়েডের ওষুধ খেলে সবচেয়ে ভাল ফল পাওয়া যায়। খাওয়ার পরে বা খাবারের সঙ্গে এই ওষুধ খেলে শরীরে সঠিক ভাবে তা শোষিত হয় না। ফলে থাইরয়েড হরমোনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে না।
হাইপোথাইরয়েডিজমের ক্ষেত্রে, যদি এক জন ব্যক্তি সকালে খালি পেটে থাইরক্সিনের সম্পূর্ণ ডোজ গ্রহণ করেন, তা হলে রোগীর শরীরে অস্বস্তি হতে পারে। এ ক্ষেত্রে দুটি ডোজে ভাগ করে ওষুধ খাওয়া যেতে পারে।
থাইরয়েডের ওষুধ খাওয়ার সময় বেশ কিছু নিয়ম মেনে চলা উচিত। দেখে নেওয়া যাক সেগুলো কী কী?
এই ওষুধ খাওয়ার ক্ষেত্রে একটা বাঁধাধরা সময় মেনে চলাই ভাল। সকালের ৮টার ওষুধ যেন রোজ ৮টাতেই খাওয়া হয়, সে বিষয়ে সতর্ক থাকুন। সকালে ওষুধ খেতে যদি কোনও দিন ভুলে যান তা হলে দুপুরের খাবারের দু’ থেকে আড়াই ঘণ্টা পর ওষুধ খেতে পারেন।
এই ওষুধ খাওয়ার এক ঘণ্টার মধ্যে কিছু না খাওয়াই ভাল। এমনকি চা, কফিও না!
থাইরয়েডের ওষুধ খাওয়ার তিন ঘণ্টার মধ্যে উচ্চ মাত্রায় ক্যালশিয়াম রয়েছে এমন কোনও খাবার খাবেন না।
এই ওষুধ খাওয়ার সময় অন্য কোনও সাপ্লিমেন্ট যেমন আয়রন, ক্যালসিয়াম বা ভিটামিনের ওষুধ ভুলেও খাবেন না।
বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ওষুধটি সারা জীবন ধরে খেয়ে যেতে হয়। তাই পরীক্ষায় হরমোনের মাত্রা স্বাভাবিক হলেও ওষুধ বন্ধ করে দেওয়া যাবে না। মাত্রা বেশি কমে বা বেড়ে গেলে ওষুধের ডোজ ঠিক করতে চিকিত্সেকের পরামর্শ নিতে হবে। তবে উপরে উল্লিখিত সব কিছুই চিকিৎসকের পরামর্শে করাই ভালো।
সুত্রঃ আনন্দবাজার অনলাইন
আরএমএ