বাঙালির শোষণমুক্তির মন্ত্র শোনান বঙ্গবন্ধু (ভিডিও)
আকবর হোসেন সুমন
প্রকাশিত : ১২:১৪ পিএম, ৭ মার্চ ২০২২ সোমবার
১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ। সাড়ে ১৮ মিনিটের ভাষণ জয় করেছিলো সাড়ে সাত কোটি বাঙালির হৃদয়। মহাকাব্যিক সে ভাষণ শুনে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল আমজনতা। মুক্তির মহানায়ক শেখ মুজিবের কালজয়ী সেই ভাষণ আজও পৃথিবীর মানুষকে দোলা দেয়।
১৯৭০ এর জাতীয় পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ জয় মেনে নিতে পারেনি পাকিস্তান সামরিক সরকার। সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের গণ রায় উপেক্ষা করে ভুট্টোর ষড়যন্ত্রে স্পষ্ট হয়েছিল ইয়াহিয়ারা কোনোদিনই স্বাধীনতার দাবি মানবে না।
ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ। মিছিলের গন্তব্য রেসকোর্স ময়দান। যেখানে জনতার মঞ্চে রাজনীতির অমর কবি শেখ মুজিব শোনান তাঁর অমিয় আহ্বান। তুলে ধরেন ২৩ বছরের রাজনীতি আর বঞ্চনার ইতিহাস।
উত্তাল জনসমুদ্রে কান্ডারি মুজিবের ভাষণে স্পষ্ট হয়েছিল শক্ত দুর্গ গড়ে তোলার। পাকি সামরিক বাহিনীর হত্যার তদন্ত, সৈন্য প্রত্যাহার এবং জনপ্রতিনিধিদের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের জোরালো দাবি ছিল সে ভাষণে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ ঘোষ বলেন, “তিনি জনসাধরণের যে রায় সেটি পেয়েছিলেন। কিন্তু পাকিস্তানিরা তাকে সেই রাষ্ট্র ক্ষমতায় দেখতে চায়নি। অতএব আমাদের দেশের জন্য সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়া সেই ডাকটি তিনি সেদিন দিলেন।”
প্রতিরোধ সংগ্রাম ও মুক্তির যুদ্ধে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখার আহবানও ছিল সে বক্তব্যে।
ড. বিশ্বজিৎ ঘোষ বলেন, “একই সঙ্গে একটি ভাষণের মধ্যে স্বাধীনতার ডাকটিও আছে আবার একই সঙ্গে আলাপ-আলোচনার সুযোগ। সৈনিকদের তিনি বলেন তোমরা ব্যারাকে যাও, তোমাদের কেউ কিছু করবে না।”
এ যেনো ভাষণ নয়, শ্বাশত কবিতার পংক্তিতে পংক্তিতে বাঙালির শোষণমুক্তির মন্ত্র শোনান শেখ মুজিব।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই অধ্যাপক বলেন, “সেই ভাষণ একেবারেই অলিখিত। একটুকরা কাগজ বঙ্গবন্ধুর সামনে ছিল না। প্রতিটি শব্দ, প্রতিটি বাক্য, প্রতিটি অনুষঙ্গ এমন চমৎকারভাবে সেদিন উপস্থাপিত হয়েছে যা বিশ্ব ইতিহাসের বিরল।”
সাড়ে ১৮ মিনিটের সে ভাষণ আজও পৃথিবীর মানুষের কাছে দোলা দেয় বঞ্চনা থেকে শোষণমুক্তির, পরাধীনতার পাশবিকতা থেকে শৃঙ্খলমুক্তির।
এএইচ/