ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৭ ১৪৩১

জাতীয় দল নিয়ে আর ভাবেন না সাইফউদ্দিন!

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৭:০৫ পিএম, ৭ মার্চ ২০২২ সোমবার

মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন

মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন

গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে পাওয়া চোটে মাঠের বাইরে ছিটকে পড়েন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। গত অক্টোবরে পাওয়া সেই চোটের পর ছয় মাস হতে চললেও এখনও মাঠে নামা হয়নি এই বোলিং অলরাউন্ডারের। চোটে পড়ে অনাকাঙ্ক্ষিত ও অপ্রত্যাশিত এই দীর্ঘ বিরতির সময়ে কাউকেই পাশে না পেয়ে জাতীয় দল নিয়ে চিন্তা করাই ছেড়ে দিয়েছেন ফেনীর এই হিরো।

গত অক্টোবর থেকে দীর্ঘ এই পুনর্বাসনের সময়টা কাটিয়েছেন ফেনীর নিজ বাড়িতেই। এ সময়ে জাতীয় দলের কোচিং প্যানেল বা টিম ম্যানেজমেন্ট, এমনকি বিসিবির কেউই তার সাথে যোগাযোগ করেননি- দাবি সাইফউদ্দিনের। সহসা ফেরার পথটাও যে সহজ নয়- সেই বাস্তবতা মেনে এখন জাতীয় দল নিয়েও ভাবছেন না এই অলরাউন্ডার।

এক সাক্ষাৎকারে সাইফউদ্দিন বললেন, ‘আমি এখন জাতীয় দলে নেই, তাই জাতীয় দল নিয়ে ভাবনাও নেই। যখন ঢুকব তখন হয়ত চিন্তা-ভাবনা করব। গত সাড়ে ৫ মাস মাঠের বাইরে ছিলাম। জাতীয় দলের কোচিং ম্যানেজমেন্ট কেউই আমার সাথে যোগাযোগ করেনি। তো আমি নিজ থেকে আসলে কী বলব? যদি দল মনে করে আমার প্রয়োজন, তখন আমি জাতীয় দল নিয়ে কথা বলব। এখন আবাহনীতে আছি, মনোযোগ এখানেই।’

যদিও কোচদের প্রতি কোনো অভিযোগ নেই সাইফউদ্দিনের। জাতীয় দলের পাশাপাশি আরও নানা প্রোগ্রামে জাতীয় পর্যায়ের কোচ-ট্রেনাররা এখন ব্যস্ত সময় পার করেন। চোট পাওয়া সাইফউদ্দিন দলের সঙ্গে না থাকায় মিরপুরে আনাগোনাও ছিল না তার। কেন- সেই কারণটাও ব্যাখ্যা করলেন তিনি।

সাইফ বলেন, ‘সত্যি বলতে সবাই-ই তো ব্যস্ত। কেউ বাংলাদেশ টাইগার্স, কেউ জাতীয় দলে, কেউ অনূর্ধ্ব-১৯ দলে। ফেনীতে থাকার কারণ হচ্ছে- ওখানে আমি সবসময় নেট বোলার পাচ্ছি, যেখানে যাচ্ছি- সবকিছুই আগে থেকে প্রস্তুত। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল- সাপোর্ট স্টাফ। সেটা এখানে না থাকলে আমি একা একা কীভাবে প্র্যাকটিস করব? বোলিং না হয় একা একা করতে পারব, ব্যাটিং তো একা করতে পারব না।’

ডানহাতি এই বোলার বলেন, ‘জাতীয় দলের যখন খেলা ছিল, বায়োবাবলের একটা বিষয় ছিল। হয়ত এই জায়গা ব্যবহার করতে পারতাম না। আসলে একদম ভোরে আসতে হত। তাই সব কিছু চিন্তা করেই আসলে মিরপুরে অনুশীলন করা হয়নি।’

বোলিংটা ডানহাতে করলেও ব্যাটিং করেন বাঁহাতে। যাতে সমস্যা ছিল না কখনও, তবে সাইফউদ্দিনের চোটই মূলত বেকায়দায় ফেলেছে বোলিংয়ে। ২ সপ্তাহের বেশি হলো বোলিং অনুশীলন করছেন সাইফউদ্দিন। ১৫ মার্চ ডিপিএলের প্রথম ম্যাচ দিয়েই ফিরতে চান আবাহনীর হয়ে। ডিপিএলের পর আয়ারল্যান্ড সিরিজ হওয়ার কথা থাকলেও সিরিজটি স্থগিত হয়ে যাওয়ায় এখন প্রিমিয়ার লিগেই পূর্ণ মনোযোগ এই তরুণের।

বাঁহাতি এই ব্যাটার বলেন, ‘আপাতত লক্ষ্য প্রিমিয়ার লিগে ভালো খেলা। এখানে খেলে জাতীয় দলে যেতে হবে এমন কিছু ভাবিনি। যা হওয়ার হবে। ডিপিএলে ম্যাচ বাই ম্যাচ চিন্তা করতে চাই।‘

ব্যাট, প্যাড, হেলমেট, বলের মত চোটও যেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের নিত্যসঙ্গী। পিঠের এক চোটই তার বড় পরীক্ষা নিচ্ছে দীর্ঘদিন ধরেই। যা জেগে ওঠে হরহামেশাই। এছাড়া তুচ্ছ কাণ্ডে বাঁধানো চোটের উটকো ঝামেলা তো আছেই। সব মিলিয়ে সাইফউদ্দিন অনিশ্চিত, আগামীতে তার জীবনে কী ঘটবে তা নিয়েও।

জাতীয় দলের এই অলরাউন্ডার বলেন, ‘মানুষের জীবনে কখন কী ঘটে, বলা মুশকিল। গত ৩-৪ মাস পিঠের চোট নিয়ে অনেক চিন্তিত ছিলাম। পুনর্বাসন প্রক্রিয়া শেষ করে আলহামদুলিল্লাহ ঠিক হয়েছি। ফেনী থেকে আসার আগে সিঁড়ি দিয়ে হাঁটছিলাম অন্যমনস্ক হয়ে, কাঁধে একটু ব্যথা লাগে। আলহামদুলিল্লাহ এখন একটু ভালো।’ 

আসলে পেসারদের ক্ষেত্রে চোট নিয়েই বসবাস দেখাটা দেশের ক্রিকেটে অবশ্য নতুন কিছু নয়। দেশ সেরা অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা, শফিউল, মুস্তাফিজ, তাসকিনরাও চোট নিয়ে ভুগছেন এখনও। পেস বোলিং অলরাউন্ডার সাইফউদ্দিন মনে করেন, পেসারদের জন্য চোটে ভোগার নিয়তিটা একটু বেশিই আপন!

সাকিবভক্ত এই পেসার বলেন, ‘আমরা পেস বোলার যারা আছি, তুচ্ছ একটা ভুলের কারণে ইঞ্জুরি হয়ে যেতে পারে। গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারব না। কাল আমার জীবনে কী হবে জানি না। কারণ আমি এভাবে অনেকগুলো তুচ্ছ ঘটনার সম্মুখীন হয়েছি। রাজশাহীতে ফুটবল খেলার সময় খেলাচ্ছলেই অ্যাঙ্কেলে চোট পেয়ে গেলাম। এজন্য এখন দীর্ঘমেয়াদী কিছু ভাবতে পারি না। সময়ই সব কিছু বলে দিবে।’

এনএস//