ঢাকা, মঙ্গলবার   ০৫ নভেম্বর ২০২৪,   কার্তিক ২০ ১৪৩১

‘টেকসই আগামীর জন্য; জেন্ডার সমতাই অগ্রগণ্য’

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৮:৩২ এএম, ৮ মার্চ ২০২২ মঙ্গলবার

‘টেকসই আগামীর জন্য; জেন্ডার সমতাই আজ অগ্রগণ্য’ এ প্রতিপাদ্য নিয়ে সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন কর্মসূচিতে উদযাপিত হচ্ছে ‘আন্তর্জাতিক নারী দিবস’। প্রতিবছর ৮ মার্চ দিবসটি পালন করা হয়। 

এ উপলক্ষে জাতিসংঘের মহাসচিব, রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। তারা বিশ্বের সব নারীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।

১৮৫৭ সালের ৮ মার্চ এই দিনটির শুরু। সে সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে একটি সুচ কারখানার নারী শ্রমিকরা দৈনিক শ্রম ১২ ঘণ্টা থেকে কমিয়ে ৮ ঘণ্টায় আনা, ন্যায্য মজুরি এবং কর্মক্ষেত্রে সুস্থ ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশ নিশ্চিতের দাবিতে সোচ্চার হন। আন্দোলনের দায়ে গ্রেপ্তার হন বহু নারী। কারাগারে নির্যাতিত হন অনেকেই। তিন বছর পরে ১৮৬০ সালের একই দিনে গঠন করা হয় ‘নারী শ্রমিক ইউনিয়ন’। ১৯০৮ সালে পোশাক ও বস্ত্রশিল্পের কারখানার প্রায় দেড় হাজার নারী শ্রমিক একই দাবিতে আন্দোলন করেন। অবশেষে আদায় করে নেন দৈনিক ৮ ঘণ্টা কাজের অধিকার। ১৯১০ সালের এই দিনে ডেনমাকের্র কোপেনহেগেনে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক সমাজতান্ত্রিক সম্মেলনে জার্মানির নেত্রী ক্লারা জেটকিন ৮ মার্চকে আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে ঘোষণা করেন। এরপর থেকেই সারা বিশ্বে দিবসটি আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। জাতিসংঘ ১৯৭৫ সালে আন্তর্জাতিক নারীবর্ষে ৮ মার্চকে আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে পালন করা শুরু করে। এর দুবছর পর ১৯৭৭ সালে জাতিসংঘ দিনটিকে আনুষ্ঠানিকভাবে আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।

দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বাণীসহ বিশেষ ক্রোড়পত্র ও স্মরণিকা প্রকাশিত হয়েছে। সরকারি টেলিভিশন ও বেতার এবং বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলগুলো বিশেষ অনুষ্ঠান সম্প্রচার করছে।

আন্তর্জাতিক নারী দিবস উদযাপন উপলক্ষে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় বিস্তারিত কর্মসূচি নিয়েছে। মঙ্গলবার বেলা ১১টায় ঢাকায় ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ ৫ জন জয়িতাকে সম্মাননা জানানো হবে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। প্রধান অতিথি শ্রেষ্ঠ ৫ জয়িতার হাতে সম্মাননা পদক, ক্রেস্ট ও এক লাখ টাকার চেক তুলে দেবেন। এ বছর অর্থনৈতিকভাবে সাফল্য অর্জনকারী নারী রাজশাহী বিভাগের সিরাজগঞ্জ জেলার সানজিদা আক্তার শিমু। শিক্ষা ও চাকরি ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জনকারী নারী রাজশাহী বিভাগের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক হোসনে আরা আরজু। সফল জননী হিসেবে বিজয়ী চট্টগ্রাম বিভাগের খোশনাহার বেগম। নির্যাতনের বিভীষিকা মুছে ফেলে নতুন উদ্যমে জীবন শুরু করার ক্ষেত্রে বরিশাল বিভাগের জেসমিন আক্তার আর সমাজ উন্নয়নে অবদান রাখা রংপুর বিভাগের রোকেয়া বেগম শ্রেষ্ঠ জয়িতা নির্বাচিত হয়েছেন।

‘নারীর প্রতি বৈষম্য ও সহিংসতা বন্ধ কর, সম্পদ-সম্পত্তিতে সমান অধিকার ও সমঅংশীদারিত্ব নিশ্চিত কর’ এই শ্লোগানকে সামনে রেখে আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালন করছে ৬৬টি নারী, মানবাধিকার ও উন্নয়ন সংগঠনের প্ল্যাটফর্ম সামাজিক প্রতিরোধ কমিটি। সেই দাবিকে সামনে রেখে বিকাল ৩টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সমাবেশ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম। ঘোষণা পাঠ করবেন গণসাক্ষরতা অভিযানের রেহেনা বেগম। সমাবেশ শেষে একটি র‌্যালি অনুষ্ঠিত হবে। বাংলাদেশ মহিলা ঐক্য পরিষদ দিবসটি উপলক্ষে ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে সকাল ১১টায় বিশ্ব মানবতার কল্যাণে জাতি, ধর্ম, বর্ণ, গোত্র নির্বিশেষে বিশেষ প্রার্থনার আয়োজন করেছে। জাতীয় প্রেস ক্লাব, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিসহ বিভিন্ন সংগঠন ও প্রতিষ্ঠান দিবসটি উপলক্ষে নানা কর্মসূচি পালন করবে।
এসএ/