পোশাকের ঘেরাটপে আটকে নারীর স্বকীয়তা (ভিডিও)
শাহরিমা বৃতি
প্রকাশিত : ০৪:৫৮ পিএম, ৮ মার্চ ২০২২ মঙ্গলবার | আপডেট: ০৭:৫৪ পিএম, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ মঙ্গলবার
কন্যা-জায়া-জননী, নানাভাবে চিত্রায়িত নারী চরিত্র। পরিচয় যাই হোক, সংসার কিংবা কর্মক্ষেত্র, সবখানেই নিজের স্বকীয়তা প্রতিষ্ঠাতায় লড়তে হয় নারীকে।
ভাবছেন, কী এমন বাধা আসে! যার জন্য এতো লড়াই?
বাধা আছে বৈকি। বাড়ির মেয়ে সন্ধ্যাবেলায় বাইরে কেন? বাইরে গেছে ভালো কথা, কিন্তু কার সঙ্গে? পড়াশোনা যথেষ্ট হয়েছে, এবারে বিয়ে দিয়ে দাও। চাকরি করবে? কী দরকার!
এমন কত শত প্রশ্ন ঘুরপাক খায় একজন নারীকে কেন্দ্র। যার মাঝে একরকম হারিয়েই যায় নারীর পোশাকের স্বাধীনতার বিষয়টি।
বিষয়টি এমন, এরচেয়ে আরও কত বড় বড় সমস্যা রয়েছে, সামান্য পোশাকের স্বাধীনতার জন্য লড়াই করার সময় কই!
তবে পরিস্থিতি বদলেছে অনেকটাই। পোশাকের স্বাধীনতা নিয়েও এখন অনেক বেশি সোচ্চার বাংলার নারীরা।
কর্মক্ষেত্রেও নারীর অংশগ্রহণ বেড়েছে অনেকটা। তবে তারপরও পোশাক নিয়ে কম বিড়ম্বনা পোহাতে হয় না।
নারীর পোশাক নিয়ে কে কি ভাবছেন?
একজন ব্যাংক কর্মকর্তা, তনয়া শামস। তিনি জানান, চলতি পথে পোশাক নিয়ে কোনো মন্তব্যের শিকার হতে পারেন, বিষয়টি মাথায় রেখেই পোশাক বেছ নেন তিনি।
বলেন, “আমি যখন ব্যাংকে লেনদেন করি তখন অনেকেই আমাকে লক্ষ্য করে, আমার পোশাকের দিকেও লক্ষ্য করে। যে কারণে বিষয়টি আগে থেকেই মাথায় রাখতে হয় যে, আমি ঠিক পোশাক নির্বাচন করেছি কিনা।“
বেরসকারি একুশে টেলিভিশনের একজন সংবাদকর্মী জয়ন্তী চ্যাটার্জি বলেন, “এ সমস্যা একদিনে তৈরি হয়নি। ছোটবেলা থেকেই সমাজ এবং পরিবার নারীর মাথায় গেঁথে দেয়, সে কোন পোশাক পরতে পারবে আর কোনটি পারে না।
“আমাকে পাবলিক বাসে চলাচল করতে হয়। আর আমার পছন্দ জিন্স, টপস- এই ধরনের পোশাক। কিন্তু পাবলিক বাসে চড়তে গেলে এই ধরনের পোশাক ইচ্ছা থাকলেও আমি পরতে পারিনা।“
অবশ্য পোশাক কিংবা যিনি পোশাকটি পরছেন তার কোনদিক থেকে সমস্যা দেখছেন না এনজিও কর্মকর্তা বর্ণা তারানা। তার মতে, মানুষের দৃষ্টিভঙ্গিই এখানে মূল সমস্যা।
তিনি বলেন, “যে পোশাকই পরি না কেন, কিছু মানুষ অদ্ভুত দৃষ্টিতে মেয়েদের দিকে তাকাবেই, যা অস্বস্তিতে ফেলে আমাকে। শুধু নিজেকেই না, অন্য মেয়েদেরও আমি এমন পরিস্থিতে পড়তে দেখেছি। আর এই বিষয়টি শুধু পথে-ঘাটেই নয়, অফিস আদালতেও হয়ে থাকে।“
পোশাক নয়, কাজই হবে নারীর পরিচয় নির্ধারক, নারীর পোশাক নিয়ে বদলাবে সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি, এমনই আশা সবার।
এসবি/