ঢাকা, রবিবার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১০ ১৪৩১

বিধানসভা ভোটে ৪ রাজ্যে বিজেপি, পাঞ্জাবে আম আদমি পার্টি

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৮:৪৭ এএম, ১১ মার্চ ২০২২ শুক্রবার

ভারতের পাঁচটি রাজ্যের বিধানসভা ভোটের ফল ঘোষণা হয়েছে। যেখানে চারটিতেই সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে দেশটির কেন্দ্রের শাসক দল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)। ওই চার রাজ্য হলো- উত্তরপ্রদেশ, গোয়া, মণিপুর ও উত্তরাখণ্ড। তবে কংগ্রেসের দুর্গ হিসেবে পরিচিত পাঞ্জাবে তাদের ধরাশায়ী করে বাজিমাত করেছে দিল্লির শাসক দল আম আদমি পার্টি।

পাঁচে-চার। এমন ফলপ্রাপ্তির দিনকে ‘ঐতিহাসিক দিন’ বলে দাবি করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। দলের এমন জয় নিয়ে বলতে গিয়ে মোদী বলেন, ‘‘দেশের চার দিক থেকে বিজেপি সমর্থন পেয়েছে। বিজেপি-র প্রতি মানুষের অপার বিশ্বাসের জয় হয়েছে।’’ সেই সঙ্গে তিনি দাবি করেন, ‘‘গরীবের জন্য কেন্দ্রে কিংবা ক্ষমতায় থাকা রাজ্যে কাজ করছে বিজেপি। এত দিন প্রকল্প ঘোষণা হলেও সেই কাজ বাস্তবায়িত হত না। আমি চাই একশ শতাংশ গরীব মানুষ সব সরকারি প্রকল্পের সুবিধা পান।’’

এর পরেই তিনি টেনে আনেন উত্তরপ্রদেশ জয়ের আসল তাৎপর্যের কথা— পরের লোকসভা ভোটে জয়। মোদীর কথায়, ‘‘২০১৯ সালে যখন দ্বিতীয়বার আমি লোকসভা নির্বাচনে জয় পাই, তখন অনেকে বিশেষজ্ঞ বলেছিলেন, এই জয়ে আর কী আছে? এটা তো ২০১৭ সালে উত্তরপ্রদেশ নির্বাচনেই ঠিক হয়ে গিয়েছিল। সেই হিসেবেই আমি বলছি, ২০২২ সালে উত্তরপ্রদেশের ফল ঠিক করে দিল ২০২৪ সালে ফের বিজেপি কেন্দ্রে ক্ষমতায় আসতে চলেছে।’’

২০২৪ সালে লোকসভা নির্বাচন। তার আগে উত্তরপ্রদেশ বিধানসভা নির্বাচন বড় পরীক্ষা ছিল বিজেপি-র কাছে। যোগী সরাসরি পরীক্ষায় বসলেও ফলের দিকে পরীক্ষার্থীর মতোই তাকিয়ে ছিলেন মোদী। এক অর্থে এই রাজ্য মোদীরও। কারণ, তিনি বারাণসীর সাংসদ। ২০২১ সালের দুর্গাপুজোর পর থেকেই উত্তরপ্রদেশে প্রচারে নেমে গিয়েছিলেন তিনি। যোগী যেমন অযোধ্যাকে কেন্দ্র করে পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়েছিলেন তেমনিই বারাণসীকে ভর করে গোটা উত্তরপ্রদেশের দিকে নজর রেখেছিলেন মোদী।

সেই উত্তরপ্রদেশের জয় নিয়ে মোদী বলেন, ‘‘এই রাজ্যের মানুষকে জাতিবাদ দিয়ে ভাগ করা হয়েছে এতকাল। বলা হয়েছে, জাতপাতের হিসেবে নির্বাচন হয় এখানে। এর মাধ্যমে সেই নাগরিকদের এবং গোটা উত্তরপ্রদেশের বদনাম করা হয়েছে। কিন্তু রাজ্যের মানুষ পর পর নির্বাচনে দেখিয়ে দিলেন, উত্তরপ্রদেশের মানুষ উন্নয়নে ভরসা রেখেই ভোট দিয়েছেন। পর পর চারটি নির্বাচনে রাজ্যে মানুষ জবাব দিয়েছেন।’’

তবে উত্তরপ্রদেশের সঙ্গে সঙ্গে উত্তরাখণ্ড, গোয়া, মণিপুরে ক্ষমতা ধরে রাখার কৃতিত্বও দেখিয়েছে বিজেপি। গোয়ায় জাদু সংখ্যার দোরগোড়ায় থাকা বিজেপি ইতিমধ্যেই জানিয়ে দিয়েছে, সরকার গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় একটি আসনের সমর্থন তারা পেয়ে যাবে।

পরিসংখ্যান বলছে, এর মধ্যে উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড ও গোয়ায় পরপর একই রাজনৈতিক দলের সরকার গঠনের নজির নেই। মোদী বলেছেন, ‘‘পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকার পরে কোনও মুখ্যমন্ত্রীকে ফিরিয়ে আনাটা ইতিহাস। উত্তরপ্রদেশে ৩৭ বছর পরে পরপর দু’বার কোনও মুখ্যমন্ত্রী ক্ষমতায় এলেন। গোয়ায় টানা তিনবার ক্ষমতায় এল বিজেপি। দশ বছর ক্ষমতায় থাকার পরেও রাজ্যে বিজেপি-র আসন বেড়েছে। উত্তরাখণ্ডেও বিজেপি ইতিহাস গড়েছে। রাজ্যে এই প্রথম কোনও দল পরপর দু’বার ক্ষমতায়।’’

ইতিমধ্যেই গেরুয়া শিবির বলতে শুরু করেছে, চার রাজ্যের মানুষই দলের স্লোগান ‘ডবল ইঞ্জিন সরকার’-এর পক্ষে রায় দিয়েছে। প্রাথমিক ভাবে যে পরিসংখ্যান সামনে এসেছে, তাতে এটাও পরিষ্কার যে, এই ফলাফলে বিজেপি-র পক্ষে গিয়েছে ধর্মীয় সমীকরণ। যদিও মোদী দাবি করেছেন, এই জয় আসলে উন্নয়ন ও সুশাসনের পক্ষে রায়। একই সঙ্গে ‘ডবল ইঞ্জিন’ প্রসঙ্গও টেনেছেন মোদী। বলেছেন, ‘‘যেখানে যেখানে ডবল ইঞ্জিন সরকার চলছে সেখানেই উন্নয়নের কাজ চলছে।’’
সূত্র: আনন্দবাজার
এসএ/