যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধারা শোনালেন সেই বিরত্বগাথা (ভিডিও)
তৌহিদুর রহমান
প্রকাশিত : ০৪:১২ পিএম, ১৩ মার্চ ২০২২ রবিবার | আপডেট: ০৪:১৬ পিএম, ১৩ মার্চ ২০২২ রবিবার
নিজের প্রাণের মায়া তুচ্ছ করে একাত্তরে শত্রুর বিরুদ্ধে লড়েছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধারা। রনাঙ্গণে আহত হয়েছেন অনেকে। যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধার কণ্ঠেই খানিকটা শুনব সেসব দিনের কথা।
পাকিস্তানের শোষণ, নির্যাতনের বিরুদ্ধে দেশ মাতৃকার টানে মহান মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল বাংলার দামাল ছেলেরা। আধুনিক অস্ত্রে সজ্জিত পাক বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ের সাহস জুগিয়েছে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ।
স্বাধীনতার ৫০ বছরে এসে যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধারা জানিয়েছেন যুদ্ধের সেসব বীরত্বগাথা।
সেক্টর-৭ এর যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু শহীদ বিল্লাহ বকুল বলেন, “আমরা প্রথমে বালুরঘাটের ভেতর থেকে ধামইরহাট নওগাঁয় অপারেশন চালাই। এরপর চিরিরবন্দর দিনাজপুরে অপারেশন এবং ফুলবাড়ি দখল করি। এরপর ভবানিপুর অপারেশনে আমি আহত হই।”
সেক্টর-১১ এ লড়াই করা বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কালাম আজাদ বলেন, “৩১-১০-৭১-এ আমলিতলা রায়েরবাজার অ্যাটাক করি আমরা। তখন একটা বাঙ্কার খালি মনে করে অস্ত্র আনতে গিয়েছিলাম। অস্ত্র আনার জন্য যখন কুলিং করছিলাম তখন বাঙ্কারে দু’জন পাকিস্তানী ছিল, তা আমি দেখিনি। আমাকে দেখামাত্রই গুলি করে, তা আমার কোমরে বিদ্ধ হয়।”
কোনো কিছু পেতে নয়, নিজের জীবনের বিনিময়ে হলেও দেশকে শত্রুমুক্ত করতে প্রস্তুত ছিলেন তারা।
যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা অনীল কুমার রায় বলেন, “আমার পরিবার বাংলাদেশে, আমি চলে গিয়েছি ভারতে। সেরকম অবস্থায় আমরা যুদ্ধে অংশ নিয়েছি এবং জীবন বাজি রেখেছি। আমি মারা গেলে তো আমার পরিবার শান্তিতে স্বাধীন দেশে বাঁচতে পারবে। এটাই ছিল আমাদের মূল উদ্দেশ্য।”
পাকবাহিনী যাতে সাধারণ মানুষের উপর হামলা চালাতে না পারে সেজন্য ৮ ডিসেম্বর ১৯৭১-এ রেললাইন উপড়ে ফেলেছিল কুষ্টিয়ার মুক্তিবাহিনী।
আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা রশিদুল আলম বলেন, “হার্ডিঞ্জ ব্রিজের কাছে রেলপথে উপড়ে রেখেছিলাম। যার ফলে পাকবাহিনী ওইখানে পড়ে যায়। প্রায় ১১টার দিকে দেখি আমাদের পিঠের উপর প্লেন যাচ্ছে। তখন আমরা ভয় পেয়েছিলাম যে প্লেনটা পাক আর্মির। এর কিছুক্ষণ পর ওরা ফায়ারিং বন্ধ করে। তখন আমরা ধরে নেই, এটা ইন্ডিয়ার প্লেন। এরপর ফায়ারিং করতে করতে এগিয়ে গেলে ওদের গুলি এসে আমাদের কিছু লোককে আহত করে। আমিও গুরুতর আহত হই।”
স্বাধীনতার ৫০ বছরে জাতির সাহসী সন্তানদের পাশে দাঁড়িয়েছে রাষ্ট্র।
এএইচ/