গাংনীতে এক বছর পর কবর থেকে লাশ উত্তোলন
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৫:১৮ পিএম, ১৪ মার্চ ২০২২ সোমবার | আপডেট: ০৫:২৫ পিএম, ১৪ মার্চ ২০২২ সোমবার
আদালতের নির্দেশে মেহেরপুরের গাংনীতে আসাদুজ্জামান (৪২) নামের যুবকের লাশ কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে। চুয়াডাঙ্গার নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট সাহাদত হোসেনের উপস্থিতিতে সোমবার দুপুরে উপজেলার ধানখোলা ইউনিয়নের চান্দামারী গ্রামের কবরস্থান থেকে মরদেহ উত্তোলন করে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার পুলিশ।আসাদুজ্জামান চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার মোচাইনগর গ্রামের মৃত আব্দুল জলিলের ছেলে।
আসাদুজ্জামানের ছোট ভাই ও মামলার বাদী হাসানুজ্জামান লিটন জানান, ২০০৭ সালের ১৮ নভেম্বর চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল পাড়ার মহিবুল হকের মেয়ে মোনালিসা হক লোপার সঙ্গে বিয়ে হয় তার ভাইয়ের। পরে যশোর জেলায় কনকর্ড ফার্মাসিউটিক্যালসে চাকরির সুবাদে এম এম কলেজের পার্শে ভাড়াবাড়িতে সন্তানদের নিয়ে বসবাস করতো তারা। একই এলাকায় শ্বশুরবাড়িতে বসবাস করতো নরসিংদী জেলার বাখরনগর গ্রামের আব্দুর রশিদের ছেলে হুমায়ন কবির (৩৫)।
সেখানে বসবাস করা সময়ে মোনালিসা হক লোপার সাথে হুমায়ন কবিরের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। প্রেমের সম্পর্কের বিষয়টি জানতে পেরে তার ভাই মোনালিসা হক লোপা ও হুমায়ন কবিরকে এই অবৈধ সম্পর্ক থেকে বিরত থাকতে বলেন। কথা না শুনে তারা প্রেমের সম্পর্কে চালিয়ে যাওয়ায় পরিবারে অশান্তির সৃষ্টি হয়। অবস্থা বেগতিক দেখে আসাদুজ্জামান চুয়াডাঙ্গা শহরে চলে এস বসবাস শুরু করে। চুয়াডাঙ্গায় আসার পরও তার ভাবি হুমায়ন কবিরের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রাখে। এর মধ্যে ভাবি মোনালিসা হক লোপা ওল্ড জেএম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারি শিক্ষক হিসেবে চাকরি পায়।
চাকরি পাওয়ার পর আরও বেপরোয়া হয়ে উঠে। বারংবার মোনালিসা হক লোপাকে নিষেধ করেও থামাতে পারেনি তার ভাই। হঠাৎ ২০২০ সালের ২৭ মার্চ রাতে ভাই অসুস্থ হয়ে পড়েছেন মর্মে বাড়ির লোকজনকে জানিয়ে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎক ভাইকে মৃত ঘোষণা করেন। পরদিন ২৮ মার্চ গ্রামের বাড়িতে মরদেহ এনে পার্শ্ববর্তী চান্দামারী গ্রামের কবরস্থনে লাশ দাফন করা হয়।
ভাই মারা যাবার পর ২০২১ সালের ১১ নভেম্বর তারিখে মোনালিসা হক লোপা ও হুমায়ন কবির বিয়ে করে। বিয়ের পর মোনালিসা হক লোপা ও হুমায়ন কবিরের মধ্যে বিরোধ তৈরি হয়। বিরোধের কারনে মোনালিসা হক লোপা কিভাবে আসাদুজ্জামানকে হত্যা করেছে হুময়ান কবির সব তথ্য-উপাত্ত আমাদের জানিয়ে দেয়। হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি জানার পর গত ৩রা জানুয়ারী চুয়াডাঙ্গা সদর আমলী আদালতে মোনালিসা হক লোপা ও হুমায়ন কবিরের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা
হয়।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা চুয়াডাঙ্গা সদর থানার ওসি তদন্ত সাইদ হোসেন জানান, আদালত মামলাটি এজাহার হিসেবে নথিভুক্ত করার নির্দেশনা দেয়। চুয়াডাঙ্গা সদর থানা ২৫ জানুয়ারী মামলাটি নথিভুক্ত করে। মামলা রেকর্ড হওয়ার পরদিন হুমায়ন কবিরকে গ্রেফতার করে ৩ দিনের রিমান্ড নেয়া হয়। রিমান্ড শেষে বর্তমানে হুমায়ন কবির চুয়াডাঙ্গা জেলহাজতে রয়েছে। পলাতক রয়েছে প্রধান আসামী মোনালিসা হক লোপা। তাকে গ্রেফতারে অভিযান অব্যহত রয়েছে। এছাড়া আদালতের নির্দেশনা পেয়ে কবর থেকে মরদেহ উত্তোলন করা হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
কেআই//