ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৭ ১৪৩১

শতভাগ বিদ্যুতের ঘোষণা ২১ মার্চ

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১১:১১ পিএম, ১৪ মার্চ ২০২২ সোমবার | আপডেট: ১২:১৬ এএম, ১৫ মার্চ ২০২২ মঙ্গলবার

পটুয়াখালীর পায়রার তীরে নির্মিত হবে দেশের সবচেয়ে বড় বিদ্যুৎকেন্দ্র। এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পায়রায় ২১ মার্চ ১৩২০ মেগাওয়াট কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র উদ্বোধনের মাধ্যমে দেশে শতভাগ বিদ্যুৎ-এর ঘোষণাও দিবেন প্রধানমন্ত্রী।

সোমবার বিদ্যুৎ, জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ রাজধানীর বিদ্যুৎ ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে একথা জানান। ফোরাম ফর এনার্জি রিপোর্টার্স বাংলাদেশ (এফইআরবি) এবং নর্থওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানি (এনডব্লিউপিজিসিএল) যৌথভাবে এই ‘মিট দ্য প্রেস’-এর আয়োজন করে। মিট দ্য প্রেসে স্বাগত বক্তব্য রাখেন এফইআরবি’র চেয়ারম্যান শামীম জাহাঙ্গীর। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন নির্বাহী পরিচালক রিশান নাসরুল্লাহ্।

বাংলাদেশ শতভাগ দূষণমুক্ত সুপার ক্রিটিক্যাল প্রযুক্তির একটি কয়লা বিদ্যুৎ কেন্দ্র শুরু করতে যাচ্ছে উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকার দেশের সকল চর ও প্রত্যন্ত অঞ্চলকে বিদ্যুতের আওতায় নিয়ে এসেছে। 

নুসরুল বলেন, সরকার বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে দেশকে শতভাগ বিদ্যুতের আওতায় আনার এক লক্ষ্যমাত্রা গ্রহণ করেছিল এবং ২১ মার্চ সরকার তার এ প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী, সাহসী ও সময়োপযোগী সিদ্ধান্তের ফলে বিগত ১৩ বছরে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ খাতে অভূতপূর্ণ সাফ্যল্য এসেছে।

নসরুল হামিদ বলেন, আমাদের দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা ৫ গুণের বেশি বেড়েছে। ২০০৯ সালের জানুয়ারির ৪৯৪২ মেগাওয়াট থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়ে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ২৫,৫১৪ মেগাওয়াটে দাঁড়িয়েছে। এদের মধ্যে নবায়নযোগ্য জ্বালানীও রয়েছে। ১১৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করা হয়েছে এবং ১৯৬২৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যোগ করা হয়েছে। 

তিনি বলেন, ‘শীতকাল ও অফ-পিক আওয়ারে উদ্বৃত্ত বিদ্যুৎ রপ্তানীর পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। মোট ৫ হাজার ২১৩ সার্কিট কিলোমিটার ট্রান্সমিশন লাইন বসানো হয়েছে এবং মোট ৩ লাখ ৬১ হাজার কিলোমিটার বিদ্যুৎ বিতরণকারী তার বসানো হয়েছে। ৩.১৩ কোটি নতুন গ্রাহককে সংযোগ প্রদান করা হয়েছে।’ মাথাপিছু বিদ্যুৎ উৎপাদন ২২০ কিলোওয়াট থেকে বেড়ে ৫৬০ কিলোওয়াটে দাঁড়িয়েছে এবং বিদ্যুৎ বিতরণ ক্ষতি ৫.৮৫ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। ৪৮.৭৭ লাখ স্মার্ট প্রি-পেইড মিটার স্থাপন করা হয়েছে এবং সেচ কার্যে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করা হয়েছে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ-চায়না পাওয়ার কোম্পানি লি. সফলভাবে পায়রা ১৩২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ইউনিট-১ ও ইউনিট-২ এ বাণিজ্যিক উৎপাদন সফলভাবে শুরু করেছে। ‘আমরা সফলভাবে ৬৩ লাখ বাড়িতে সোলার সিস্টেম স্থাপন করেছি’ উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, এখন পর্যন্ত এদেশে পায়রা ১৩২০ মোগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি সর্ববৃহৎ বিদ্যুৎ কেন্দ্র। বাংলাদেশ এখন বিশ্বের আল্ট্রা সুপারক্রিটিক্যাল প্রযুক্তি ব্যবহারকারী দেশগুলোর মধ্যে ১৩তম।

প্রতিমন্ত্রী দেশের টেকসই উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে বিদ্যুৎ খাত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে উল্লেখ করে বলেন, ‘যদি আপনাদের সহযোগিতায় বিদ্যুৎ খাতের পরিকল্পনাগুলো সফলভাবে বাস্তবায়িত হয়, তবে বাংলাদেশ ২০৪১ সাল নাগাদ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর রূপকল্প অনুযায়ী একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশে পরিণত হবে’। 

বিদ্যুৎ সচিব মো. হাবিবুর রহমান বলেন, বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার শতভাগ বিদ্যুতের দেশ। সাবমেরিন কেবলের মাধ্যমে দেশের চর সোনারমপুর, আশুগঞ্জ, রাঙ্গাবালি, মনপুরা, সন্দীপ, হাতিয়া, নিঝুম দ্বীপ ও তুকুবাদিয়ায় বিদ্যুৎ সরবরাহ কর হয়েছে।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মাঝে উপস্থিত ছিলেন বিপিডিবি চেয়ারম্যান মাহাবুবুর রহমান, পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসেইন, নর্থ ওয়েস্ট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা খোরশেদুল আলম।

এসি