ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

আলোচনার আড়ালে প্রহসনের ছক (ভিডিও)

মানিক শিকদার

প্রকাশিত : ০১:৩০ পিএম, ১৫ মার্চ ২০২২ মঙ্গলবার | আপডেট: ০১:৩৫ পিএম, ১৫ মার্চ ২০২২ মঙ্গলবার

বাংলাদেশের ইতিহাসের যুগসিন্ধক্ষণের সূচনা একাত্তরের অগ্নিঝরা মার্চে। ইয়াহিয়ার জাতীয় পরিষদের অধিবেশন স্থগিত ঘোষণার পর ৭ই মার্চ বঙ্গবন্ধুর ভাষণে নতুন মোড় নেয় পূর্ববাংলার রাজনীতি। মুজিব-ইয়াহিয়া বৈঠকে সমাধানের পথ খোঁজার নামে প্রহসন করে পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকরা।

বঙ্গবন্ধুর সাহসী উচ্চারণের পর চূড়ান্ত ধাপে অসহযোগ আন্দোলন। বিক্ষোভে উত্তাল গোটা দেশ।

পাকশাসকেরা নানা অপকৌশলে বিক্ষুব্ধ বাঙালিকে শান্ত করার চেষ্টা করে। একাত্তরের ১৫ই মার্চ ইয়াহিয়া খান ঢাকায় আসেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুরের সাথে আলোচনা করতে। ১৬ই মার্চ থেকে শুরু রুদ্ধদ্বার বৈঠক। বাঙালির নেতা শেখ মুজিব জানান আলোচনা দুই এক মিনিটের ব্যাপার নয়, আরও আলোচনা দরকার।

২৪শে মার্চ পযর্ন্ত দীর্ঘ নয় দিনেও হয়নি সমাধান। যদিও বঙ্গবন্ধু জানতেন পাকিস্তানী শাসকরা তাঁর একটি শর্তও মানবে না। তাই তিনি আগেই ৭ মার্চের ভাষণেই বাঙালিকে সশস্ত্র সংগ্রামের নির্দেশনা দিয়েছিলেন।

ইতিহাসবিদ অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন বলেন, “তিনি তাঁর জনগণকে প্রস্তুত রেখেছিলেন স্বাধীনতা ও সংগ্রামের জন্য লড়ায়ে। আবার আলোচনায় বসলেন এবং তাঁর রাজনীতি পরিস্কার ছিল বলে আমার কাছে মনে হয়।”

আলোচনার মাঝেই পশ্চিম পাকিস্তান থেকে শিপিং করপোরেশনের জাহাজে অস্ত্র ও সৈন্য আনার খবর ছড়িয়ে পড়ে। পাকিস্তানিদের চক্রান্ত ধরে ফেলে বাঙালি।

অধ্যাপক সৈয়দ আনোয়ার হোসেন বলেন, “২১ তারিখে ইয়াহিয়া খান চূড়ান্ত সবুজ সঙ্কেত দিয়ে দেয় যে, যখন তিনি ঢাকা ছাড়বেন তারপরে এই অভিযান শুরু হবে। সব মিলে ব্যাপারটি প্রহসনমূলক। আলোচনার আড়ালে অপারেশন সার্সলাইট চূড়ান্ত করেছিল।”

২৪শে মার্চের বিবৃতিতে আওয়ামী লীগ জানায়, তাদের পক্ষ থেকে সব বক্তব্যই উপস্থাপন শেষ, এবার প্রেসিডেন্টের ঘোষণার পালা। কিন্তু কাউকে কিছু না বলে ঢাকা ছাড়ে ভুট্টো। গণহত্যার নির্দেশ দেয় ইয়াহিয়া।

এই ইতিহাসবিদ আরও বলেন, “শেষ আলোচনার পরে বলা হয়েছিল যে, ২৫ তারিখে একটা টেলিফোন আসবে ড. কামাল হোসেনের কাছে। বঙ্গবন্ধু জিজ্ঞেস করেছিলেন কামাল হোসেনকে, ফোন পেয়েছ কিনা। তিনি জানান কোন ফোন পাইনি।”

২৫শে মার্চের বিভৎস গণহত্যার পরই অস্ত্র হাতে ঝাপিয়ে পড়ে বীর বাঙালি। রক্তবীজে দীর্ঘ নয় মাসে আসে স্বাধীনতা। 

এএইচ/