দু’টি সুপারহিট ছবির পর বলিউডে কি সুদিন ফিরছে?
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৬:১০ পিএম, ১৫ মার্চ ২০২২ মঙ্গলবার | আপডেট: ০৬:১১ পিএম, ১৫ মার্চ ২০২২ মঙ্গলবার
করোনাভাইরাসের ধাক্কায় ঘরবন্দি হতে বাধ্য হয়েছিলেন আমজনতা। সিনেমা হলে যাওয়া তো দূরের কথা, দৈনন্দিন জীবনও যেন থমকে গিয়েছিল।
তবে করোনার সংক্রমণ নিম্নমুখী হওয়ায় শিথিল হয়েছে বহু বিধিনিষেধ। ফলে আবারও হলমুখো হয়েছেন দশর্ক। তাদের বড়পর্দার কাছে টেনে আনতে ইন্ধন জোগাচ্ছে ‘গঙ্গুবাঈ কাথিয়াওয়াড়ি’ বা ‘দ্য কাশ্মীর ফাইলস’-এর মতো ছবি। তবে কি বলিউডের সুদিন ফিরছে?
২৫ ফেব্রুয়ারি মুক্তির দিন থেকেই বক্স অফিসে আলো ছড়িয়েছেন গঙ্গুবাঈ থুড়ি আলিয়া ভাট। ইতিমধ্যেই ১০০ কোটির ক্লাবে ঢুকে পড়েছে আলিয়ার ‘গঙ্গুবাঈ... ’। মাত্র ১৭ দিনে তা ১০৮ কোটি টাকার ব্যবসা করে নিয়েছে।
সমালোচক থেকে বলিপাড়ায় তার পরিচিতরা— গঙ্গুবাঈয়ের ভূমিকায় আলিয়াকে দেখে প্রশংসায় ভরিয়ে দিয়েছেন প্রায় সকলেই। সঞ্জয় লীলা ভান্সালীর ছবিতে আলিয়ার কাজ দেখে মুগ্ধ অক্ষয় কুমার থেকে বিদ্যা বালন। বিদ্যা তো বলেই ফেলেছেন, ‘‘মুখ্য চরিত্রে এক নারী। এমন ছবি যে বক্স অফিস কাঁপাচ্ছে, তা দেখেও ভাল লাগে!’’
বাজেটের নিরিখে ‘গঙ্গুবাঈ... ’-এর মতো তেমন ওজনদার নয়। তবে বড়সড় চমক দিচ্ছে ‘দ্য কাশ্মীর ফাইলস’-ও। কানাঘুষোয় শোনা গিয়েছে, ‘গঙ্গুবাঈ... ’ তৈরির পিছনে ৫৫ কোটি টাকা খরচ করে ফেলেছেন ভান্সালীরা। তবে ‘দ্য কাশ্মীর ফাইলস’-এর বাজেট কোনও ভাবেই তার ধারেকাছে পৌঁছয়নি। যদিও এ ছবি তৈরি করতে কত টাকা খরচ হয়েছে, তা খোলসা করেননি প্রযোজকেরা।
কম বাজেটের ছবি হলেও বক্স অফিসে মুনাফার ফসল তুলছে পরিচালক বিবেক অগ্নিহোত্রীর ‘দ্য কাশ্মীর ফাইলস’। ১১ মার্চ মুক্তির পর তিন দিনেই তা ১৫ কোটি ১০ লক্ষ টাকা কামিয়ে ফেলেছে বলে দাবি একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের।
মোটা অঙ্কের বাজেট নেই। নেই প্রচারের চমক। তবুও বক্স অফিসে তেজি ঘোড়ার মতো দৌঁড়চ্ছে মিঠুন চক্রবর্তী, অনুপম খের, দর্শন কুমার, পল্লবী যোশীদের এ ছবি।
বিবেকের এ ছবির প্রশংসা করেছেন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও। সমালোচক তথা ট্রেড অ্যানালিস্ট তরণ আদর্শ তো টুইটারে লিখেই ফেলেছেন, ‘প্রচারের ডঙ্কা নেই। ছুটির দিনেও মুক্তি পায়নি। তার উপরে ‘রাধেশ্যাম’-এর মতো বিগ বাজেটের ছবিকে টক্কর দিতে হচ্ছে। সঙ্গে মাত্র ৬৩০টি হলে মুক্তি পেয়েছে। তবে এ সব সত্ত্বেও জয়ের পতাকা উড়াচ্ছে ‘দ্য কাশ্মীর ফাইলস।’
তবে কি অতিমারির বিষণ্ণ পর্ব ভুলে আবারও হলমুখো হচ্ছেন দর্শকেরা? উত্তরটা হল— ‘হ্যাঁ’! যদিও দর্শকের কাছে ওটিটি প্ল্যাটফর্মের হাতছানি রয়েছে। রয়েছে বড় বাজেটের হলিউডি থেকে দক্ষিণী ছবির টক্করও। তার মাঝেই বলি-ছবির টানে সিনেমা হলে ছুটছেন দর্শক।
যদিও কোভিডের সময় লোকসানের অন্ত ছিল না বলিউডের। ফি-বছরে ছবি মুক্তির নিরিখে দুনিয়ায় এক নম্বরে এই ইন্ডাস্ট্রি। প্রতি বছরে নাকি এ দেশে ১,৬০০ থেকে ১,৮০০ ছবি মুক্তি পায়। তার মধ্যে বলিউডের ছবিই নাকি দু’শো থেকে আড়াইশো।
বক্স অফিস থেকে বলিউডের রোজগার কত? একটি সংবাদমাধ্যমের দাবি, বার্ষিক তিন হাজার কোটি টাকার ব্যবসা করে হিন্দি সিনেমাগুলি।
২০২০ সালে একটি রিপোর্টে আর্নেস্ট অ্যান্ড ইয়ং-এর দাবি, এ দেশে ৯,৫২৭টি সিনেমা হল রয়েছে। তার মধ্যে ৬,৩২৭টি সিঙ্গল স্ক্রিনের। সঙ্গে ৩,২০০টি মাল্টিপ্লেক্স। তবে অতিমারির দাপটে গত বছরে হাজারখানেক স্ক্রিনের ঝাঁপ ফেলে দিতে হয়েছে।
অতিমারির আবহে প্রভূত ক্ষতি হয়েছে দেশের প্রায় সমস্ত ক্ষেত্রেই। সে খাদ এড়াতে পারেনি বলিউড তথা দেশীয় সিনেমাও। একটি রিপোর্টে দাবি, ২০২০-’২১ অর্থবর্ষে এ দেশের বাজার থেকে লোকসানের ঘরে ঢুকেছে প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকা। তবে আশা জাগাচ্ছে ‘গঙ্গুবাঈ... ’ বা ‘দ্য কাশ্মীর ফাইলস’-এর মতো ছবি। সূত্র: আনন্দবাজার
এসি