গবেষণামূলক বই পড়লেই হবে আমাদের উন্নতি: পরশ
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ১০:০২ পিএম, ১৫ মার্চ ২০২২ মঙ্গলবার | আপডেট: ১০:০৫ পিএম, ১৫ মার্চ ২০২২ মঙ্গলবার
যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ বলেছেন, আমরা চাই একটা বিজ্ঞান ও মেধাভিত্তিক সমাজ ব্যবস্থা। এই সমাজ ব্যবস্থা কায়েমের জন্য সর্বপ্রথমে দরকার যুক্তিনির্ভর পরিবেশ ও মন-মানসিবকতা।
তিনি বলেন, চিন্তু-ভাবনায় বস্তুনিষ্ঠ ও নিরপেক্ষ হতে হবে। গবেষণামূলক মতবাদে আমাদের বিশ্বাস আনতে হবে। গবেষণামূলক বই ছাপাতে হবে এবং পড়তে হবে তাহলেই আমাদের উন্নতি হবে, আমরা সভ্যতার বিকাশ ঘটাতে পারব।
যুবলীগ চেয়ারম্যান বলেন, যুক্তিনির্ভর পরিবেশ সৃষ্টি হলে সাধারণ মানুষের উপর সমাজের প্রভাবশালী উচ্চশ্রেণীর কর্তাদের কতৃত্ব কমে যাবে। কুসংস্কার থেকে মানুষ মুক্তি পাবে। সাম্প্রদায়িক শক্তি আর মাথা চাড়া দিয়ে উঠতে পারবে না। আমাদের সম্প্রীতির বাংলাদেশে ধর্মীয় বিভেদ সৃষ্টি করতে পারবে না, পারবে না ধর্মীয় দাঙ্গা সৃষ্টি করতে। মানুষকে তখন আজগুবি কথায় কেউ বিশ্বাস করাতে পারবে না। বিজ্ঞান ও মেধাভিত্তিক সমাজ ব্যবস্থা সৃষ্টি হলে মানুষকে বোকা বানানো সম্ভব না।
মঙ্গলবার (১৫ মার্চ) অমর একুশে বইমেলায় নজরুল মঞ্চে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের প্রকাশনা “বিপ্লব ও মানবিকতা” গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন যুবলীগ চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ। এর আগে বাদ যোহর যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান শহীদ শেখ ফজলুল হক মণি’র সহধর্মিনী শহীদ আরজু মণি সেরনিয়াবাত-এর ৭৬তম জন্মদিন উপলক্ষে বনানী কবরস্থানে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে ফাতেহা পাঠ, মিলাদ ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয় এবং দুঃস্থদের মাঝে খাবার বিতরণ করা হয়।
‘বিপ্লব ও মানবিকতা’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে যুবলীগ চেয়ারম্যান বলেন, বিপ্লব ও মানবিকতা সরলীকরণ করলে ‘বিপ্লব’ শব্দটির অর্থ দাঁড়ায় আত্মসচেতন পরিবর্তন। বিভিন্ন ধরণের বিপ্লব আছে। নেতাজি সুভাষ চন্দ্রের সহস্র বিপ্লবও আছে আবার গান্ধীজীর অসহযোগ আন্দোলনও এক ধরণের বিপ্লব। ‘বিপ্লব ও মানবিকতা’ শিরনামের পিছনে আমাদের যেই চিন্তাটা কাজ করেছে, সেটা হল: রাজনীতির গুনগতমানের পরিবর্তনের জন্য আমরা ২০১৯ সাল থেকে সক্রিয়ভাবে কাজ করছি। এই লক্ষ্যে আমরা যেই পন্থা অবলম্বন করেছি সেটা হচ্ছে মানবিক পন্থা।
তিনি বলেন, আমরা রাজনীতির মৌলিক নীতিতে ফেরত যেতে চেষ্টা করছি যেমন সেবামূলক কর্মসূচির মাধ্যমে শীতবস্ত্র বিতরণ, খাদ্য সামগ্রী বিতরণ, বাসস্থান করে দেয়া, টেলিমেডিসিন প্রভৃতি। এই গ্রন্থটাতে যুবলীগের নেতৃবৃন্দের লেখনীয় মধ্য দিয়ে, আমাদের কাজের কিছু বিবরণ পাবেন যেমন-একই সাথে বিপ্লব ও মানবিকতার তাত্ত্বিক ও ঐতিহাসিক বিশ্লেষণও পাবেন। তবে আমার কাছে সবচেয়ে বড় বিপ্লবী হচ্ছে, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব। তিনি বাল্যকাল থেকে পরিবর্তনের জন্য সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীর অধিকার আদায়ের জন্য বিপ্লব করে গেছে। তরুণ মুজিব ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে, পাকিস্তান সৃষ্টির লক্ষ্যে একজন মাঠ পর্যায়ের কর্মী হিসাবে বিপ্লবে অংশ নিয়েছেন। পাকিস্তান সৃষ্টির পর, সেই পাকিস্তানিরা তাঁকে নির্যাতন-শোষণ শুরু করে। ভাষা আন্দোলনে তাঁর বিপ্লবী এবং প্রতিবাদী ভূমিকা এবং পরের ইতিহাস আপনাদের জানা। বিপ্লবের সাথে মানবিকতার যোগসূত্রটা সেখানেই, যেখানে বিপ্লব মানবিক অধিকার আদায়ের জন্য করা হয়।
যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মোঃ মাইনুল হোসেন খান নিখিল বলেন, ১৯৭২ সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, মুজিব বাহিনীর প্রধান শহীদ শেখ ফজলুল হক মণি প্রতিষ্ঠা করেন যুবলীগ। যুবলীগ কি উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল তা আপনারা জানেন। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ, চারদিকে হায়েনার ছোবল, অসহায় মানুষের উপর নির্যাতন, সবমিলিয়ে সেই সময় যুবশক্তির খুব বেশি প্রয়োজন ছিল। সেই যুবশক্তিকে দেশ গড়ার কাজে নিয়োগের জন্যই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নির্দেশ দিয়েছিলেন। এই যুবশক্তির উদ্দেশ্য ছিল স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে যেন স্বাধীনতা বিরোধীরা মাথাচাড়া দিয়ে না উঠতে পারে এবং দেশকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্ত থেকে উদ্ধার করা।
বিপ্লব ও মানবিকতা গ্রন্থটির সম্পাদক ও প্রকাশক শেখ ফজলে শামস্ পরশ, নির্বাহী সম্পাদক আলহাজ্ব মোঃ মাইনুল হোসেন খান নিখিল, সম্পাদনা সহযোগী বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোঃ রফিকুল ইসলাম, প্রচার সম্পাদক জয়দেব নন্দী, গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক মোঃ জহুরুল ইসলাম মিল্টন, উপ-গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক এ্যাড. নবীরুজ্জামান বাবু। বইটির শুভেচ্ছা মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৪৫০ টাকা। এছাড়াও বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ সুইডিশ ভাষায় রূপান্তর করাসহ আরো দুইটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়।
এসি