ভোগান্তি বেড়েছে চট্টগ্রাম বন্দরে (ভিডিও)
রফিকুল বাহার
প্রকাশিত : ১২:০৩ পিএম, ১৭ মার্চ ২০২২ বৃহস্পতিবার
চট্টগ্রাম বন্দরে সাতদিন, চব্বিশ ঘণ্টা একটানা কাজ চলার কথা। কিন্তু আদতে সেবা মিলছে পাঁচদিন। দিনে সর্বোচ্চ ১০ ঘণ্টার বেশি কাজ হয় না। ফলে বন্দর ব্যবহারকারীদের ভোগান্তি বেড়েছে।
আমদানি নির্ভর বাংলাদেশে ৯০ শতাংশ পণ্য আসে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে। কাস্টমস হাউসের তথ্যানুসারে, গত অর্থ বছরে ৭ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকার ১২ কোটি ৬৭ লাখ টন পণ্য আমদানি-রপ্তানি হয়েছিল। শুল্কায়ন, ভ্যাট, ট্যাক্স ও বন্দরের চার্জ পরিশোধের মতো ১৮ ধরনের যাবতীয় ধাপ ও আনুষ্ঠানিকতা শেষে ডেলিভারি পর্যন্ত সব কাজই করে সরকারি প্রতিষ্ঠান বন্দর কর্তৃপক্ষ, কাস্টমস হাউস ও বেসরকারি সিএন্ডএফ এজেন্টরা।
সকাল ৮টা থেকে ১২টা পর্যন্ত চট্টগ্রাম বন্দরের এই গেইট দিয়ে ৭১টি পণ্যবাহী ট্রাক বের হয়েছে। অথচ বিকাল ৪টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত এর সংখ্যা ৩শ’। অর্থাৎ প্রায় চারগুণের সমান।
চট্টগ্রাম বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, “চিটাগাং পোর্টে ২৪ ঘণ্টা ৩ শিফটে কাজ হয়, তারাও যদি ৩ শিফটে আসে তাহলে কিন্তু কোন কনসেশন হওয়ার কথা না।”
চট্টগ্রাম কাস্টমসের ডেপুটি কমিশনার সালাহউদ্দিন রিজভী বলেন, “কোনটা অ্যাসেসমেন্ট হয়ে গেলে তা আমরা দ্রুত কিলিয়ার করে দিচ্ছি।”
সাড়ে ৬ কিলোমিটার বিস্তৃত কর্ণফুলী নদী তীরের এই বন্দরের ৯টি গেইটে কয়েক হাজার ট্রাক, কাভার্ডভ্যান, ট্রেইলার প্রতিদিন ভিড় জমায় পণ্য সরবরাহ নিতে ও গন্তব্যে পৌঁছে দিতে।
ট্রাক চালকরা জানান, “অনেক সময় ১ ঘণ্টা লাগে আবার কোন কোন সময়ে ৩ ঘণ্টার বেশিও লাগে। লোডে সমস্যা, তাতে আমাদের প্রচুর ভোগান্তি।”
এর ফলে বন্দর নগরীর যান চলাচলে শৃঙ্খলা ভেঙ্গে পড়ে। চাপ পড়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কেও। বন্দর কর্তৃপক্ষ এর জন্য দায়ী করছেন সিএন্ডএফ প্রতিষ্ঠানগুলোকে।
রিয়ার এডমিরাল মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, “১০ গাড়িকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মুভ করতে হবে। এখন ২৪ ঘণ্টায় মুভ না করে সেটা ১২-১৩ ঘণ্টায় করছে।”
দিনের ২৪ ঘণ্টার পুরোটা সদ্ব্যবহার করতে না পারার পেছনে বিভিন্ন কারণের কথা জানালেন সিএন্ডএফ এসোসিয়েশনের এই নেতা।
সিএন্ডএফ এজেন্ট এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কাজী মাহমুদ ইমাম বিলু বলেন, “আমাদের দাবি, সময়টাকে ভাগ করে কাজ করা হোক। সেটা না হওয়া পর্যন্ত এটার উন্নতি ঘটবে না।”
আমদানি-রপ্তানির প্রবৃদ্ধি প্রতি বছরই বাড়ছে ১০ থেকে ১২ শতাংশ। তাই রাত-দিন পালাক্রমে সরবরাহ ও পণ্য পরিবহন ব্যবস্থা চালু করার সমন্বিত উদ্যোগ নেয়ার দাবি বন্দর ব্যবহারকারীদের।
এএইচ/